৩ হাজার কোটির লেনদেন এখন ২শ কোটির ঘরে

আবু আলী
১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১০:১১
শেয়ার :
৩ হাজার কোটির লেনদেন এখন ২শ কোটির ঘরে

দেশের শেয়ারবাজারের দরপতন থামছেই না। একই সঙ্গে কাটছে না লেনদেনের খরা। কমছে লেনদেন বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ও টাকার পরিমাণ। পরিস্থিতি এমন হয়েছে, এক সময়ের দৈনিক তিন হাজার কোটি টাকার লেনদেনের বাজার, এখন ২০০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, অব্যাহত পতনের মধ্যেই পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারশূন্য ঘোষণার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বাজারে। ফলে বাজারের পতনের ধারা আরও নিম্নমুখী হয়েছে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে এখন নতুন করে কোনো আশা দেখছেন না সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এ কারণে প্রতিদিনই কোনো না কোনো বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়ে যাচ্ছেন। বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, বাজারে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ দেখাই প্রধান দায়িত্ব নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি)। কিন্তু কমিশন ঘুমিয়ে আছে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ দেখার কোনো দায় নেই বিএসইসির।

ইব্রাহীম হোসেন নামের এক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী আমাদের সময়কে বলেন, আমাদের শেয়ারের মূল্য শূন্য করে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক, কিন্তু বিএসইসি বোবা হয়ে বসে আছে। গত সপ্তাহে একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা শরিয়াভিত্তিক পাঁটি ইসলামি ব্যাংকের শেয়ার শূন্য ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এর প্রভাবে গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে ছিল নেতিবাচক। লেনদেনে প্রধান মূল্যসূচক ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে আসে। এক সময় দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। সেটি কমতে কমতে ২০০ কোটির ঘরে নেমেছে। গতকাল বুধবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮২৫ পয়েন্টে, যা গত ২৫ জুনের পর সর্বনিম্ন। ওই দিন সূচকটি ছিল ৪ হাজার ৭৬৮ পয়েন্টে। অর্থাৎ, সূচকটি সাড়ে চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে এসেছে। এর আগে টানা সাত কার্যদিবসের (২-১০ নভেম্বর) পতনের পর সোমবার সূচক কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও (৩৯ পয়েন্ট উত্থান), সামগ্রিকভাবে ৭ কার্যদিবসে সূচকটি কমেছে মোট ২৬১ পয়েন্ট।

গতকাল ডিএসইতে ২৯০ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। সূচক ও লেনদেনের এ ধারাবাহিক পতনে বিনিয়োগকারীরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮৮টি কোম্পানির মধ্যে ৫৩টির (১৩.৬৬%) দর বেড়েছে, ৩০১টির (৭৭.৫৮%) দর কমেছে, আর ৩৪টির (৮.৭৬%) দর অপরিবর্তিত ছিল।

অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ৯ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। সেখানে ১৬৫ কোম্পানির মধ্যে ২৮টির দর বেড়েছে, ১২৩টির কমেছে এবং ১৪টির দর অপরিবর্তিত ছিল। এদিন সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১১৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৬২০ পয়েন্টে।