আফরোজা পারভীন পেলেন অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার
বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখার জন্য কবি, কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক আফরোজা পারভীন পেলেন ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার-১৪৩০’। গতকাল শুক্রবার বিকাল ৪টায় রাজধানীতে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এক মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে আফরোজা পারভীনকে সম্মাননা ক্রেস্ট, শুভেচ্ছাপত্র ও এক লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়। শুরুতে তাকে উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয়। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আফরোজা পারভীনের ওপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও লেখকের গ্রন্থালোচনা করা হয়।
পাক্ষিক অনন্যা ও দৈনিক ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেনের সভাপতিত্বে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক হামীম কামরুল হক ও নাসরীন মুস্তাফা।
অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে আফরোজা পারভীন বলেন, আমি ভাগ্যবান যে আমার পরিবার সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিবার। বাবা-মা আমাকে কখনোই মেয়ে হিসেবে আলাদা করেননি। আমার স্বামী আমাকে লেখার শুধু উৎসাহই দেননি, নিজের সাধ্যমতো লেখার উপকরণ কিনে দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। আমার সন্তানরা সবসময় উৎসাহ দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের দৃশ্যপট আমাকে লেখার অনুপ্রেরণা দেয়। চারপাশের প্রত্যেকটি মানুষই এক একটি গল্প, শুধু তার ভেতরের গল্পটাকে জানতে হয়।
তাসমিমা হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অনেক মানুষের অবদান আছে, যা আফরোজা পারভীনের লেখায় আবারও প্রকাশ পায়। অনন্যা যোগ্য নারীকে সম্মাননা দিতে পেরে আমি আনন্দিত।
আরও পড়ুন:
ডেমরায় এক কক্ষে কিশোরী ও যুবকের মরদেহ
এ সময় আন্দালিব রাসদিন বলেন, আফরোজা পারভীন তার লেখার মধ্য দিয়ে দৃশপট আঁকতে পারেন। যখন তার লেখাপড়ি তখন মনে হয় দৃশ্য আর চরিত্রগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠছে। হামীম কামরুল হক বলেন, আমাদের মধ্যে একটা বড় ধারণা, যে লেখকের বেশি বই থাকে, তারা মানসম্পন্ন লেখক নয়। কিন্তু আফরোজা পারভীনের প্রকাশিত ১২৫টি গ্রন্থ প্রমাণ করেন তিনি ভালো লেখক। নাসরীন মুস্তফা বলেন, তার লেখার মধ্য দিয়ে তাকে আলাদা করা যায়। অনন্যা আফরোজা পারভীনকে অনেক দেরিতে খুঁজে পেয়েছে।
কবি, কথাসাহিত্যিক, গবেষক, শিশুসাহিত্যিক, নাট্যকার ও কলাম লেখক আফরোজা পারভীনের সাহিত্যের সব ক্ষেত্রে রয়েছে অবাধ পদচারণা।
সাহিত্যে অবদানস্বরূপ ৩০টির অধিক পুরস্কার পেয়েছেন। সাহিত্য সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণে অবদান রাখায় পেয়েছেন ‘রাষ্ট্রীয় বেগম রোকেয়া পদক-২০২২’।
আরও পড়ুন:
ডেঙ্গুতে একদিনে ৬ জনের মৃত্যু ভর্তি ৬৪৫
উল্লেখ্য, বাংলা ১৪০১ সন (১৯৯৩ সাল) থেকে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। প্রতিবছর এক নারী-সাহিত্যিককে সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।