দক্ষিণ এশিয়ায় আরব বসন্তের লু হাওয়া
২০১০ দশকে আফ্রিকা এবং পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশে গণ-অভ্যুত্থান বা প্রতিবাদ আন্দোলন সংগঠিত হয়, যা ইতিহাসে ‘আরব বসন্ত’ নামে পরিচিত। এই প্রতিবাদ আন্দোলনগুলো ছিল গণতন্ত্রের দাবিতে, শাসকশ্রেণির অত্যাচারের বিরুদ্ধে এবং রাষ্ট্রের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে। যদিও আরব বসন্তের পরিণতি ছিল মিশ্র, তবে এটি অনেক দেশের রাজনীতি ও সমাজে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেছিল। তবে সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কিছু দেশে, যেমন বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, পাকিস্তান এবং ইন্দোনেশিয়ায় তরুণদের নেতৃত্বে গণবিক্ষোভ এবং আন্দোলন দেখা গেছে, যা কিছুটা আরব বসন্তের মতো।
দক্ষিণ এশিয়ায় তরুণদের নেতৃত্বে শুরু হওয়া এই আন্দোলনগুলোর বিভিন্ন সাদৃশ্য এবং পার্থক্য রয়েছে আরব বসন্তের সঙ্গে। প্রথমত, দুটি আন্দোলনেই মানুষের মূল দাবিগুলো ছিল সরকারের প্রতি এক ধরনের অগণতান্ত্রিক শাসন, অর্থনৈতিক সংকট এবং নাগরিক স্বাধীনতার প্রতি আক্রমণ। আবার এশিয়ার অনেক দেশেই রাজনৈতিক দুর্নীতি, অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা, সরকারি অব্যবস্থাপনা এবং মানুষের মৌলিক অধিকার নিয়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে এক ধরনের তরুণদের মধ্যে অশান্তি এবং চরম হতাশার প্রতিফলন, যারা সমাজের মূলধারায় বা সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিজেদের স্থান খুঁজে পায় না।
বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া- এই দেশগুলোর মধ্যে দৃশ্যমান সাদৃশ্য হলো, সবগুলো দেশেই মূল আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে তরুণরা। আরব বসন্তের ক্ষেত্রেও মূল নেতৃত্ব ছিল বিক্ষুব্ধ তরুণদের। বাংলাদেশের বর্তমান আন্দোলনগুলোতেও মূলত শিক্ষার্থীরা, যারা তাদের অধিকার ও সামাজিক ন্যায়ের পক্ষে রাস্তায় নেমে এসেছে, তারা সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। নেপাল এবং শ্রীলংকার আন্দোলনগুলোতেও বিশেষভাবে তরুণরা তাদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরছে। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এই যুব আন্দোলনগুলোর মধ্যেই এক আশ্চর্য শক্তি রয়েছে। এখানে পাওয়া গেছে একটি আদর্শিক এবং সাংস্কৃতিক রূপান্তরের অঙ্গীকার।
তবে দক্ষিণ এশিয়ায় ‘এশীয় বসন্ত’ ধারণাটি আরব বসন্তের থেকে কিছুটা ভিন্ন। প্রথমত, দক্ষিণ এশিয়ার দেশের রাজনীতির কাঠামো এবং শাসনতন্ত্র আরব দেশের তুলনায় ভিন্ন। এশিয়ায় রাজনৈতিক ঐতিহ্য এবং সমাজব্যবস্থা কিছুটা জটিল, যেখানে ধর্ম, সংস্কৃতি এবং জাতীয়তাবাদ আরও গভীরভাবে প্রভাব বিস্তার করে। আরব বসন্তের বিপ্লবগুলোতে মূলত মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার একনায়কত্বের পতন ছিল লক্ষ্য, তবে দক্ষিণ এশিয়ায় আন্দোলনগুলো আরও বিচিত্র, যেখানে সাধারণ জনগণের বৃহত্তর অংশ- বিশেষত যুব সমাজ আরও নির্দিষ্ট স্থানীয় ইস্যু ও সমস্যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে।
আরব বসন্তের যে প্রধান মৌলিকত্ব ছিল তা হলো শাসকশ্রেণিকে উৎখাত করার অঙ্গীকার, যেখানে জনগণ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সামগ্রিকভাবে বিদ্রোহ করেছিল। তবে দক্ষিণ এশিয়ায় তরুণদের মধ্যে এই আন্দোলনগুলো অনেক ক্ষেত্রে সরকারের পদত্যাগ অথবা শাসকের পরিবর্তন চাইছে না, বরং তারা শাসনতন্ত্রের সংস্কার এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছে। শ্রীলংকায় উদাহরণস্বরূপ অর্থনৈতিক সংকট এবং মৌলিক চাহিদার অভাবের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চলছে, যা তাদের বিক্ষোভের মূল উৎস।
আরব বসন্তের মতো এই আন্দোলনগুলোও এক ধরনের পরিবর্তনের শপথ, তবে তাদের লক্ষ্য স্থায়ী গণতন্ত্রের চেয়ে সম্ভবত রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উন্নতির দিকে বেশি। অন্যদিকে দক্ষিণ এশিয়ায় মানুষের মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা, বৈষম্য এবং জাতীয় সমস্যার সমাধান খোঁজার তাগিদও এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিছু ক্ষেত্রে এর ফলে সরকাররা নিজেদের প্রতিষ্ঠানগত সংস্কারে মনোযোগী হয়েছে, কিন্তু তবুও মেনে নেওয়া যায় না যে, তারা জনগণের প্রকৃত চাহিদাগুলো পূরণ করতে সক্ষম।
আরও পড়ুন:
বৈষম্যের ছোবলে নারীর শ্রমবাজার
দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্প্রতিক উত্তাল পরিস্থিতি আরব বসন্তের প্রতিধ্বনি শোনাচ্ছে, যা ২০১০ সালের শুরুর দিকে উত্তর আফ্রিকা এবং পশ্চিম এশিয়া কাঁপিয়ে দিয়েছিল। এই সপ্তাহে নেপালের জেনারেশন জি (এবহ-ত) আন্দোলনকারীরা হিমালয় অঞ্চলের বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমে পুলিশদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগে বাধ্য করে। অনেকেই এই ঘটনার সঙ্গে আরব বিশ্বে গণতন্ত্রের পক্ষে হওয়া প্রতিবাদগুলোর সাদৃশ্য দেখতে শুরু করে। তারা প্রশ্ন তুলেছে, এটি কি ‘এশীয় বসন্ত’?
নেপালেই যেমন, গত কয়েক বছরে এশিয়ায় একাধিক দেশে অস্থিরতার একই ধরন দেখা গেছে। তবে বাংলাদেশে প্রতাপশালী ফ্যাসিবাদের পতন আন্দোলন ছিল অনেকটা সরকারের পক্ষ থেকে আরোপিত। তারা প্রতিবাদী জনতার ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করে আন্দোলনকে সরকার পতনের একদফা দাবির দিকে ধাবিত করেছিল। ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ এবং শ্রীলংকায় প্রতিবাদগুলো বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ করেছে এর প্রকৃতিগত ভিন্নতায়। প্রথমে প্রতিবাদীরা শ্রীলংকায় সরকারের পতন ঘটিয়েছে। তার পর ক্ষমতাধর মন্ত্রীদের ঠেঙ্গিয়ে জনবহুল রাস্তা দিয়ে অন্তর্বাস পরিয়ে দৌড় করিয়েছে।
বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ধারাবাহিক পরিণতি হিসেবে যেভাবে সরকারের পতন ঘটেছে সেখানে আরও ভয়াবহ রক্তপাত ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারত। কিন্তু প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির সংযম, তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং নেতা তারেক রহমানের পরিস্থিতি শান্ত করার আকুতি হানাহানি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে শিক্ষার্থী জনতাও দ্রুত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে প্রতিশোধের বদলের পরিবেশকে বাসযোগ্য করার দিকে মন দিয়েছিল। ওদিকে পাকিস্তান এবং থাইল্যান্ডেও গত কয়েক বছরে বড় ধরনের আন্দোলন হয়েছে। আরব বসন্তের মতো, দক্ষিণ এশিয়ার এসব দেশে আন্দোলনগুলো মূলত অসচ্ছলতা, শাসনব্যবস্থার ব্যর্থতা, স্বৈরাচারিতা, দ্বিচারিতার প্রতিরোধে যুব সমাজের প্রত্যক্ষ ভূমিকা থেকেই শুরু হয়েছিল। বাস্তবে তিউনিশিয়ার বেই বুয়াজিজি আর বাংলাদেশের আবু সাঈদের মধ্যে পার্থক্য আছে খুব কম।
আরব বসন্তের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো দক্ষিণ এশিয়ার আন্দোলনগুলোতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। নেপালের ক্ষেত্রে মূলত জেনারেশন জি আন্দোলনকারীরা আন্দোলনের গতি সঞ্চার করেছে। তাদের প্রায় সবাই অনলাইন প্ল্যাটফর্মে গভীরভাবে জড়িত। ওদিকে নেপালে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপসের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়ে ওঠে প্রতিবাদের ট্রিগার। এটি জনতার অন্তরে জমে থাকা ক্ষোভের বিস্ফোরণের আগে একটি স্ফুলিঙ্গের মতো কাজ করেছিল। তাদের এই আকস্মিক প্রতিবাদ ধীরে ধীরে দুর্নীতি, পরিবারতন্ত্র এবং অভাবের বিরুদ্ধে দাবানলে রূপ নিয়েছিল।
আমরা জানি যে, আরব বসন্ত শুরু হয়েছিল তিউনিশিয়ায়। এটি উ™ূ¢ত হয়েছিল মোহাম্মদ বুয়াজিজির আত্মদাহের মাধ্যমে, যিনি পুলিশি দুর্নীতি এবং অর্থনৈতিক কষ্টের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন। ওদিকে কোটার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী-জনতা আন্দোলনে নামলে শেখ হাসিনার পুলিশ সরাসরি গুলি করে মেরে ফেলে বাংলাদেশের বিপ্লবী সাঈদ, ওয়াসিম, ইয়ামিন ও মীর মুগ্ধের মতো দুই সহস্রাধিক মানুষকে। দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে যদিও প্রেক্ষাপট ভিন্ন, কিন্তু আরব বসন্তে যে প্রতিবাদগুলো শুরু হয়েছিল, তার প্রতিবাদসূচক কারণগুলো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে যেমন- নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড এবং পাকিস্তানে অস্থিরতার সৃষ্টি করেছে। এটি অবশ্যই লক্ষ্যযোগ্য যে, আরব বসন্তের ক্ষেত্রে প্রতিবাদগুলো দ্রুত একের পর এক দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ায় আন্দোলনগুলোর ফলাফল এখনও অনিশ্চিত।
আরও পড়ুন:
ভয়াবহ হুমকির সম্মুখীন মানবজাতি
আরব বিশ্বে, অনেক দেশের শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব ছিল। তারা মধ্যপ্রাচ্যে তাদের নিজস্ব স্বার্থে দীর্ঘকাল ধরেই হস্তক্ষেপ করে চলছে। তবে এশিয়ায়, এটা শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, বরং চীন এবং তাদের সংঘর্ষকারী স্বার্থগুলোও দৃশ্যমান। পাশাপাশি ফ্যাসিবাদী শাসন এই আন্দোলনগুলোর দিশা এবং ফলাফলকে প্রভাবিত করেছিল বহুলাংশে। এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেক বিশ্লেষক এখনই প্রশ্ন তুলেছেন, এই আন্দোলন কী তবে ‘দক্ষিণ এশিয়ার বসন্ত’ নিয়ে আসতে উন্মুখ? বাংলাদেশ এবং নেপাল তাদের বসন্ত দেখতে পেয়েছে। ভারতের নানা স্থানে চলমান আন্দোলন শেষ অবধি কোথায় গিয়ে ঠেকে সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দেদার। অনেকে আগ বাড়িয়ে বলতে চাইছেন ভারত ও পাকিস্তানের অখণ্ডতা নিশ্চিত করতে পারবে তো তাদের সরকার?
দক্ষিণ এশীয় বসন্ত কোথায় গিয়ে থামবে বলা কঠিন। তবে তা ধীরে ধীরে সব হিসাব পাল্টে নতুন একটি প্রতিরোধে রূপ নিচ্ছে। তাই বিশ্লেষকরা এই গণবিক্ষোভের মাঝে আরব বসন্তের প্রতিধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন। তবে তাদের সবার কাছেই এই বিক্ষোভের ফলাফল এখনও অজানা। তিউনিশিয়ায় বুয়াজিজির আত্মদাহের পর এক মাসের মধ্যে প্রেসিডেন্ট বেন আলী দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। আবু সাঈদ, ওয়াসিম, মুগ্ধ-ইয়ামিনদের হত্যা করার সপ্তাহ পার হওয়ার আগেই হেলিকপ্টারে করে ভারতে পালিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদের প্রতীক শেখ হাসিনা। তবে প্রতিবাদের পর তিউনিশিয়ায় নতুন একটি সংবিধান এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সূচনা হয়, যা আজ পর্যন্ত টিকে আছে। ওদিকে মিশরে দানা বাঁধা প্রতিবাদ শিগগিরই মুরশি সরকারের পতন ঘটায়। মিশর ফিরে যায় সামরিক শাসনের অধীনে। কিন্তু তখনকার সেই প্রতিবাদগুলো মহামারী হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছিল লিবিয়া এবং সিরিয়ায়ও।
রাষ্ট্রের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে আরব দেশগুলোতে যে বিদ্রোহের সূচনা হয় এবং সেখানকার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদগুলো দ্রুত গৃহযুদ্ধের দিকে রূপ নিয়েছিল। ওদিকে আমেরিকার সরাসরি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সেখানকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে উঠেছিল। এসব অঞ্চলে মুসলিম ব্রাদারহুডের আকস্মিক উত্থান এবং তাদের সঙ্গে মার্কিন নীতির বৈরিতা পরিস্থিতি শান্ত হতে দেয়নি। মূলত উগ্র জাতীয়তাবাদী দক্ষিণপন্থার বিরুদ্ধে পুঁজিবাদীদের আধিপত্যবাদী লড়াই লিবিয়ায় ন্যাটোর হাতে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতন ঘটায়। তাকে নির্মমভাবে মেরে ফেলার পর দেশটি আরও সংকটময় পরিস্থিতির মুখে পুরোপুরি ভেঙে পড়ে।
সিরিয়ায় জনগণের প্রতিবাদগুলো বাশার আল-আসাদের বর্বর দমন-পীড়নের সম্মুখীন হয়। পরে রাশিয়া, ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিদেশি শক্তিগুলো তার মধ্যে জড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বাশার আল-আসাদও পালিয়ে যায়। তার পর সিরিয়া ভয়াবহ গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। ইয়েমেন এবং বাহরাইনে প্রতিবাদগুলো সীমিত পরিসরে ক্ষমতার স্থানান্তরের মাধ্যমে শেষ হয়েছিল। আর এই পরিস্থিতিগুলো দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে। তাই তারা আন্দোলনের পর পর যে কোনো মূল্যে শান্তি চাইছে। বাংলাদেশের মানুষ অপেক্ষা করছে একটি শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। আর নেপালও সেদিকে হাঁটছে। দ্রোহ ও প্রতিরোধ থেকে বিপ্লবী রক্তপাতের বদলে দক্ষিণ এশিয়ায় বেশির ভাগ দেশের মানুষ মূলত শান্তি চাইছে। এজন্যই সেখানে আরব বসন্তের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সুযোগ কম। তবে বৃহদাকৃতির রাষ্ট্রগুলোর ভৌগোলিক সীমারেখা আগের মতো ধরে রাখতে হলে আরও বেশি রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক দিক থেকে সততা এবং নমনীয়তা দেখাতে হবে। পাশাপাশি ধর্মীয় উগ্রবাদকে প্রশ্রয় না দিয়ে পরধর্ম ও পরমতসহিষ্ণুতাকে প্রণোদিত করতে হবে। না হলে দক্ষিণ এশিয়ায়ও আরব বসন্তের যে লু হাওয়া বইতে শুরু করেছে তা একদিন টর্নেডোতে রূপ নিতে সময় লাগবে না।
আরও পড়ুন:
রহস্যে ঘেরা এক অসম যুদ্ধ!
ড. মো. আদনান আরিফ সালিম : গবেষক ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর; সহযোগী অধ্যাপক, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়