অতিরিক্ত কনটেইনারে অচলাবস্থার শঙ্কায় চট্টগ্রাম বন্দর
দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউস (টুয়েন্টি ফুট ইক্যুয়েভেলেন্ট ইউনিট) কনটেইনার রাখার জায়গা রয়েছে। অপারেশনাল কার্যকক্রমের জন্য ৮ হাজার টিইইউস খালি রাখতে হয়। ফলে ৪৫ হাজার কনটেইনার জমলেই বন্দরে অচলাবস্থার শঙ্কা সৃষ্টি হয়। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৭৫১ টিইইউস জমা হয়েছে। তবে জাহাজ থেকে দ্রুত কনটেইনার খালাস হওয়ায় বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ জাহাজের সংখ্যা কমছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, জট নিরসনে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে; দ্রুত কনটেইনারজট কমে আসবে।
বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সকাল ৮টার আগের ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ২৫৪ টিইইউস (আইসিডিসহ) ডেলিভারি হয়েছে। আগের দিন সোমবার হয়েছিল ৩ হাজার ৮৩২ টিইইউস। একই সময়ে জাহাজ থেকে আমদানি পণ্যের কনটেইনার ইয়ার্ডে নেমেছে ৪ হাজার ৫৮৯ টিইইউস, ইয়ার্ড থেকে রপ্তানি ও খালি কনটেইনার জাহাজে তোলা হয়েছে ৫ হাজার ৫৫ টিইইউস। বন্দর জেটিতে ১৭টি জাহাজে পণ্য উঠানো-নামানোর কাজ চলছিল। বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ জাহাজের সংখ্যা ৯টি।
বন্দরসংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিচালনার জন্য ৫ শতাংশ খালি জায়গা বাদ দিলে বন্দর ইয়ার্ডে কার্যত কনটেইনার রাখার জায়গা নেই। ডেলিভারি না বাড়লে অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
আরও পড়ুন:
ডেমরায় এক কক্ষে কিশোরী ও যুবকের মরদেহ
জট নিরসনে বন্দর কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট বলে জানান সচিব মো. ওমর ফারুক। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র-শনিবারসহ পুরো সপ্তাহ সার্বক্ষণিক সমানে দ্রুত কনটেইনার খালাস হলে জট কমে আসবে। বন্দর থেকে কনটেইনার খালাস, দ্রুত পরিবহন নিশ্চিত করতে বন্দর কর্তৃপক্ষ সব সময়ই সচেষ্ট। জট নিরসনে আমদানি-রপ্তানিকারক, বন্দর ব্যবহারকারী ও আইসিডিসমূহের মালিকদের সমন্বিত সহযোগিতা প্রয়োজন।
চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবৃদ্ধি অনুযায়ী সক্ষমতা বাড়ছে না উল্লেখ করে বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান খায়রুল আলম সুজন বলেন, বন্দরের বিকল্প জায়গা থেকে পণ্য খালাসের ব্যবস্থা করা উচিত। প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বন্দরের সক্ষমতা বাড়ছে না। সক্ষমতা বাড়ানো খুব জরুরি। বর্তমানে যে জট তৈরি হয়েছে, খালাস বাড়লে সেটি কমে যাবে বলে মনে করেন সুজন। তিনি আরও বলেন, বহির্নোঙরে জাহাজজট কমে আসায় ইয়ার্ডে কিছুটা চাপ পড়েছে।
আরও পড়ুন:
আফরোজা পারভীন পেলেন অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার
চট্টগ্রাম কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, জটের কারণে বন্দরের অপারেশনাল সমস্যা হচ্ছে। অনেক সময় একাধিকবার স্থান পরিবর্তনের কারণে কনটেইনার খুঁজে পেতে সমস্যা হয়।
এদিকে, চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান জটের পেছনে বেসরকারি কনটেইনার ডিপোর (অফডক) সার্বিক অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, কনটেইনার হ্যান্ডলিং ও ধারণক্ষমতার সীমাবদ্ধতাকে দায়ী করা হচ্ছে। এ ছাড়া বন্দরের ইয়ার্ডে দীর্ঘদিন জমা পড়ে থাকা প্রায় দশ হাজার নিলামযোগ্য কনটেইনার চলমান জটের বড় একটি কারণ। খালি কনটেইনারও কম ডেলিভারি হচ্ছে। খালি কনটেইনার দ্রুত খালাস নিতে সম্প্রতি নোটিশ জারি করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ; অন্যথায় চারগুণ জরিমানা আরোপ করা হবে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ডেঙ্গুতে একদিনে ৬ জনের মৃত্যু ভর্তি ৬৪৫