জাহাজজট কমাতে উদ্যোগী চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, চট্টগ্রাম
৩১ জুলাই ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
জাহাজজট কমাতে উদ্যোগী চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ

বন্দরে আসা অনুমোদিত জাহাজ থেকে ১৫টি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। গত ২০ জুলাই বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সভায় ছয় সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, জাহাজের অপেক্ষমাণ সময় এবং জাহাজ জট কমাতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে বন্দরের ভাবমূর্তিও উজ্জ¦ল হবে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো। বিশে^ এমন কোনো বন্দর খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে জাহাজ কমানোর সিদ্ধান্ত হয়। বরং জাহাজ বাড়ানোর জন্য মার্কেটিং করা হয়। শুধু উল্টো চিত্র চট্টগ্রাম বন্দরে। এটি হাস্যকর সিদ্ধান্ত। এমন সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তারা।

জানা গেছে, বিভিন্ন শিপিং এজেন্ট খাতে কনটেইনার জাহাজ পরিচালনা নিয়ে গত ২০ জুলাই শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বৈঠক করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে সভাপতিত্ব করেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনুমোদিত জাহাজ থেকে ১৫টি কমিয়ে ২৭ জুলাই বন্দর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে বলা হয়। এ ছাড়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন মো. জহিরুল ইসলামকে প্রধান করে ছয় সদস্যের কমিটি করা হয়। এদিকে, ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে ১৫টি জাহাজ কমানোর বিষয়ে প্রস্তাব না পেয়ে গত মঙ্গলবার শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানকে কড়া বার্ত দিয়ে চিঠি দেন কমিটির আহ্বায়ক ক্যাপ্টেন মো. জহিরুল ইসলাম।

বন্দর সূত্র জানায়, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে ১৬টি জাহাজ একসঙ্গে জেটিতে ভিড়তে পারে। এরই মধ্যে ১০টি জেটি কনটেইনার জাহাজের জন্য বরাদ্দ থাকে। বন্দরে জাহাজ চলাচল বৃদ্ধি পেলে বহির্নোঙরে জাহাজের অপেক্ষমাণ সময় বাড়তে থাকে। এ ছাড়া জেটিতে থাকা জাহাজ নির্দিষ্ট সময়ে লোড-আনলোড করতে না পারলে যথাসময়ে ছেড়ে যেতে পারে না। এতে জাহাজের গড় অবস্থান (টার্ন অ্যারাউন্ড টাইম) সময় বাড়ে।

সূত্র জানায়, চলতি বছরের শুরুতে চট্টগ্রাম বন্দরে চলাচলের মোট অনুমোদিত জাহাজের সংখ্যা ছিল ৯৬টি। তখন জাহাজের অপেক্ষমাণ সময় ছিল এক থেকে দুই দিন এবং অপেক্ষমাণ জাহাজের সংখ্যা ছিল সাত থেকে আটটি। পরে বিভিন্ন কারণে কিছু জাহাজ চলাচলের অনুমোদন পাওয়ায় বর্তমানে বন্দরে ১১৮টি জাহাজের অনুমোদন রয়েছে। এতে জাহাজ জট বেড়েছে। ফলে একদিকে বহির্নোঙরে জাহাজের অপেক্ষমাণ সময় বাড়ছে, অন্যদিকে অপেক্ষমাণ জাহাজের সংখ্যাও বাড়ছে। এতে বহির্বিশে^ চট্টগ্রাম বন্দর সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে। অনুমোদিত জাহাজ কমিয়ে আনলে বহির্বিশে^ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কারণ, তারা মনে করবে, চট্টগ্রাম বন্দর সক্ষমতা হারিয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, এখানে কিছু জাহাজ আছে ধারণক্ষমতা কম। সেসব জাহাজ কমিয়ে বেশি ধারণক্ষমতার আনতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।