ব্রাজিলের সাহিত্য একাডেমিতে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী
ব্রাজিল প্রথমবারের মতো একজন কৃষ্ণাঙ্গ নারীকে ব্রাজিলিয়ান একাডেমি অব লেটার্সের সদস্য নির্বাচিত করেছে। ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি ফরাসি একাডেমির আদলে গঠিত হয়েছিল।
৫৪ বছর বয়সী আনা মারিয়া গনসালভেস হচ্ছেন ব্রাজিলের সমকালীন সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর লেখক, অধিকারকর্মী, সাহিত্য গবেষকরা তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভাও তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তার খ্যাতনামা সাহিত্যকর্ম ‘উম দেফেইতো দি কোর’ (অ্যা কালারফুল ডিফেক্ট) এখনও ইংরেজিতে অনুবাদ হয়নি। এটি একটি ৯৫০ পৃষ্ঠার ঐতিহাসিক উপন্যাস। বইটিতে গনসালভেস একজন কৃষ্ণাঙ্গ নারীর দৃষ্টিকোণ ব্রাজিলের ইতিহাসের কথা বলেছেন।
সম্প্রতি ব্রাজিলের সংবাদপত্র ফলহা দে সাও পাওলো এই বইটিকে ২১ শতকের ব্রাজিলীয় সাহিত্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে নির্বাচন করেছে। ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে বইটি সমালোচক ও পাঠক উভয়ের প্রশংসা পেয়েছে এবং এক লাখ আশি হাজারের বেশি কপি বিক্রি হয়েছে।
গনসালভেসের এই অর্জনে প্রেসিডেন্ট লুলা লিখেছেন, ‘এই বইটি আমার কারাবাসের ৫৮০ দিনের সঙ্গী ছিল এবং আমি অন্যদের বইটি পড়ার সুপারিশ করি।’
আরও পড়ুন:
আহমদ ছফা মানবিকতায় ও দূরদর্শিতায়
গনসালভেস এখন আশা করছেন, ১২৮ বছর বয়সী একাডেমিতে তার নির্বাচিত হওয়া প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাস বদলে দেবে। এই প্রতিষ্ঠান যেটির মূল লক্ষ্য পর্তুগিজ ভাষা ও ব্রাজিলীয় সাহিত্য সংরক্ষণ করা। তিনি বলেন, ‘আমি প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী, কিন্তু আমি যেন একমাত্র না হই।’
বর্তমানে এই একাডেমির ৪০ জন সদস্যের মধ্যে তিনি হবেন ষষ্ঠ নারী। এছাড়া কেবল দুজন কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষ ও একজন আদিবাসী লেখকই সদস্য হয়েছেন, বাকিরা সবাই শ্বেতাঙ্গ পুরুষ। তার ভাষ্য, এই একাডেমির প্রথম সভাপতি ছিলেন একজন কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষ, জোয়াকিম মারিয়া মাশাদো দে আসিস। তিনি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ব্রাজিলীয় লেখক হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু একাডেমি তাকে নিয়ে এখনও গর্ব করলেও এর পর থেকে শুধু হাতেগোনা কয়েকজন কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষ সদস্য হয়েছেন। অনেকের মতে, এটি দেশটির বর্ণবাদের প্রতিচ্ছবি অথচ যেখানে অর্ধেকেরও বেশি জনগণ আফ্রিকান বংশো™ূ¢ত।
কবি ও অনুবাদক স্টেফানি বোর্জেস বিশ্বাস করেন, গনসালভেসের নির্বাচন আরও অনেক কৃষ্ণাঙ্গ নারীকে সাহিত্যপাঠ ও চর্চায় উৎসাহিত করবে।
আরও পড়ুন:
শুভ মৃত্যুদিন
এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন ১৩ জন প্রার্থী। বৃহস্পতিবার ৩১ জন সদস্য ভোট দেন, যার মধ্যে ৩০ জন ভোট দেন গনসালভেসকে। বাকি এক ভোট পেয়েছিলেন ৭৪ বছর বয়সী এলিয়ানে পোটিগুয়ারা, যিনি একাডেমির প্রথম আদিবাসী নারী সদস্য হতে চেয়েছিলেন। া
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান
আরও পড়ুন:
পুনর্জন্মের আগে