শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূতকরণ সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ

মাহফুজুর রহমান
২০ জুন ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূতকরণ সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ

খাদের কিনারা থেকে একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়ানো পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করার সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। আগামী নির্বাচনের আগেই ব্যাংকগুলোকে একীভূত করা হবে। এতে কোনো কর্মকর্তার চাকরি হারানোর আশঙ্কা নেই। ব্যাংকগুলো হচ্ছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক। গভর্নর জানিয়েছেন, ব্যাংকগুলো একীভূত করার ফলে কোনো কোনো ব্যাংকের শাখার অবস্থানের পরিবর্তন হতে পারে। অর্থাৎ বর্তমান সময়ে উপরোক্ত ব্যাংকগুলোর শাখা পাশাপাশি থাকলে নতুন প্রেক্ষিতে একটি শাখা বন্ধ করা বা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হতে পারে।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের আত্মগোপনে যাওয়ায় নতুন গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান ড. আহসান এইচ মনসুর। অর্থনীতিতে তখন প্রচণ্ড টালমাটাল অবস্থা। অনেকগুলো ব্যাংকের আকাশচুম্বী দায় থাকা সত্ত্বেও তাদের সম্পদের পরিমাণ ব্যাপকভাবে নেতিবাচক। ব্যাংকগুলো গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। দেশব্যাপী এক অবিশ^াস ও শঙ্কাপূর্ণ অবস্থা; ঠিক এমনি সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব গ্রহণ করা এক দুঃসাহসের বিষয়। গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সেই দুঃসময়ে চ্যাালেঞ্জ হিসেবেই দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তার সামনে প্রধান দায়িত্ব ছিল মূল্যস্ফীতি রোধ করা, অন্যদিকে ব্যাংকগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা। তিনি টাকা ছাপিয়ে ব্যাংকের হাতে তুলে দিয়েছেন; এতে ব্যাংক উপকৃত হলেও মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি ছিল। সে ক্ষেত্রে উচ্চ সুদে ঋণ গ্রহণ করে তিনি বাজার থেকে টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে তিনি নিঃসন্দেহে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার খোলাবাজারে ছেড়ে দেওয়ার পরও বিনিময় হার অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে না যাওয়ার কৃতিত্বও তার। গভর্নর বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়া টাকা উদ্ধারের উদ্যোগেও আংশিক সফল। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক খাত থেকে টাকা উদ্ধার করে ফিরিয়ে আনার হাজারো আইনগত ও প্রশাসনিক বিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়ে তিনি কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তাকে এজন্য ধন্যবাদ জানাই।

অথৈ সাগরে নাক ভাসিয়ে কোনোরকমে বেঁচে থাকা ৫টি ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগেও তিনি হয়তো সফলতা অর্জন করবেন। তবে কাজটি খুব সহজ নয়। পৃথিবীতে এ ধরনের একীভূতকরণের সফলতা এবং ব্যর্থতার ইতিহাস কম নয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, এটিঅ্যান্ডটি ও টাইম ওয়ার্নার, অর্থাৎ টেলিকম ও কনটেন্ট একত্রিত করতে গিয়ে ব্যবসায়িক লক্ষ্যে অমিল ও গ্রাহক আকর্ষণে ওরা ব্যর্থ হয়। ২০১৭ সালে ক্রাফট হেইঞ্জ ও ইউনিলিভার এদের সংস্কৃতিগত বিরোধ, নিয়ন্ত্রক বাধা এবং আগ্রাসী অধিগ্রহণের, যা ইউনিলিভার প্রত্যাখ্যান করায় ব্যর্থ হয়। ২০১৪ সালে মাইক্রোসফট ও নোকিয়ার সফটওয়্যার একত্র করতে ব্যর্থ হলে একীভূতির প্রোগ্রামও ব্যর্থ হয়। ২০১২ সালে গুগল ও মটোরোলার একীভূত ব্যর্থ হয় মটোরোলার দুর্বল বিক্রয় ও পরিচালনার জন্য। ২০০৬ সালে আলকেটেল ও লুসেন্টের একীভূতকরণ ব্যর্থ হয় এদের নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব ও সংস্কৃতিগত সংঘর্ষের কারণে। ২০০৫ সালে ইবে ও স্কাইপ একীভূতকরণের লক্ষ্যে ইবে স্কাইপকে অতিমূল্যায়ন করে। পারস্পরিক সংস্কৃতিগত মিল না থাকায় ২০০৫ সালে স্প্রিন্ট ও নেক্সটেল একত্রীকরণে ব্যর্থ হয় এবং ব্যবসা ও গ্রাহক হারায়। এ তো গেল অন্যান্য ধরনের ব্যবসায়ের কথা। ২০০৮ সালে আমেরিকায় মর্টগেজ সংকটের সময় ব্যাংক অব আমেরিকা ও কান্ট্রিওয়াইড আইনি সমস্যার কারণে একীভূত করতে ব্যর্থ হয় এবং বিশাল আর্থিক দায়ের ভেতর পড়ে যায়। এক কথায় ব্যর্থ প্রতিষ্ঠাগুলোর জন্য একীভূতকরণ কোনো জাদুর কাঠি নয় যে, এর মাধ্যমে অবশ্যই সফলতা অর্জন করা যাবে।

আবার অনেক ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান একীভূতকরণের মাধ্যমে সফলতা অর্জনের ইতিহাসও ব্যবসা-বাণিজ্যের ধারাকে উজ্জ্বল উদাহরণ করে রেখেছে। ইন্দোনেশিয়ায় শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো যখন নানা ধরনের সমস্যার আবর্তে হাবুডুবু খাচ্ছিল তখন ব্যাংক রাকিয়াত ইন্দোনেশিয়া, ব্যাংক নেগারা ইন্দোনেশিয়া ও ব্যাংক মান্দিরি ইন্দোনেশিয়া একীভূত হয়ে গড়ে তোলে ব্যাংক শরীয়াহ ইন্দোনেশিয়া। এটি এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম শরীয়াহ ব্যাংক হিসেবে কাজ করছে। একীভূতকরণের ফলে ব্যাংকের মূলধন বেড়েছে, প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে।

মালয়েশিয়ার বিনিয়োগ কোম্পানি বিআইএমবি হোল্ডিংস, ব্যাংক ইসলাম এবং শরিকাত তাকাফুল মালয়েশিয়া একীভূত করে ‘ব্যাংক ইসলাম মালয়েশিয়া বেরহাদ’ নাম ধারণ করেছে এবং ব্যাংক ও বীমা খাতে একীভূত ব্যবসায়ের সুযোগ করে নিয়েছে। এতে তাদের পরিচালন ব্যয় কমেছে এবং সেবার গুণগত মান বেড়েছে। ফলে গ্রাহক আকৃষ্ট করে বর্তমানে সফলতার সঙ্গে সেটি পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে গালফ্ কো-অপারেশন কাউন্সিলভুক্ত দেশসমূহে বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত এবং সৌদি আরবের দেশগুলোর শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোকে একীভূতকরণের প্রস্তাব সর্বপর্যায়ে সমর্থন পাচ্ছে। বাংলাদেশেও এই একীভূতকরণের উদ্যোগ সফল হলে দেশের শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং খাত এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যেতে পারে। তবে সেজন্য দরকার হবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একীভূত সফল প্রতিষ্ঠানসমূহের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো এবং কঠোর মনিটরিং। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন কোনোভাবেই নতুন করের লুটেরা পরিবার সৃষ্টি হতে না পারে এবং ব্যাংকগুলোকে সাইনবোর্ডসর্বস্ব করে ফেলতে না পারে।

গভর্নরের এই উদ্যোগের ভিত্তিতে অর্থনৈতিকভাবে বিধ্বস্ত উপরোক্ত পাঁচটি ব্যাংক একীভূত হলে ব্যাংকগুলোর ওপর কিছু ইতিবাচক এবং কিছু নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে নেতিবাচকের চেয়ে ইতিবাচক দিকগুলোই অধিক জোরদার বলে মনে হয়। এরূপ উদ্যোগের ফলে ইতিবাচক দিকগুলো হতে পারে: সরকারি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক এতে মূলধনের জোগান দেবে; এটি একটি বড় শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকে পরিণত হবে এবং নতুন আঙ্গিকে নতুন ব্যবস্থাপনায় কাজ শুরু করবে। সম্মিলিতভাবে খেলাপি ঋণ আদায়ের উদ্যোগ ও সরকারের সহযোগিতা ব্যাংকটির ভিত শক্ত করে তুলবে। এটি তখন বড় আকারের শিল্প ও অবকাঠামোগত প্রকল্পে অর্থায়নের সক্ষমতা অর্জন করবে। দেশের শতকরা ৯৩ জন মানুষ ইসলাম ধর্মের অনুসারী বিধায় শরিয়াহভিত্তিক এই ব্যাংকটিতে অনেকেই আমানত রাখা এবং বিনিয়োগ গ্রহণে আগ্রহী হতে পারেন। পাঁচটি ব্যাংক থেকে একীভূত কর্মকর্তাদের ভেতর প্রকৃত যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মকর্তাদের নিয়ে ব্যাংকের পরিচালন দক্ষতা যে কোনো পৃথক ব্যাংকের চেয়ে অধিক হবে। এতে সম্মিলিত পরিচালন ব্যয় কমবে, দক্ষতা বাড়বে এবং আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সেবা প্রদান সম্ভব হবে। পাঁচটি ব্যাংক একীভূত হলে এর আকারও বড় হবে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় একটি উঁচু আসন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এরূপ ক্ষেত্রে বিশে^র শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোর নেতৃত্বে পৌঁছে যাওয়াও বিচিত্র কিছু হবে না। ইতিবাচক দিকগুলোর ভেতর সবচেয়ে বড় হবে আমানতকারীদের আস্থা অর্জন। ব্যাংক শব্দের অর্থ হচ্ছে বিশ^াস। আমরা চোখ বন্ধ করেই ব্যাংককে বিশ^াস করতে চাই। কিন্তু কয়েকটি গোষ্ঠীর লুটপাটের শিকার হয়ে এই পাঁচটি ব্যাংকসহ আরও কটি ব্যাংক তাদের আমানতকারীসহ জনগণের সার্বিক আস্থা ও বিশ^াস হারিয়েছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকের আমানতের টাকা দিতে পারছে না। নতুন নামে নতুন সজ্জায় নতুন উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে নতুন একীভূত ব্যাংক লেনদেন শুরু করতে পারলে জনগণের আস্থা অর্জন করা সম্ভব হবেÑ যা ব্যাংকিং ব্যবসায়ের জন্য একান্ত অপরিহার্য।

অন্যদিকে এ ধরনের একীভূতকরণের ও নতুনভাবে ব্যবসা চালু করার পথটি খুব সুগম হবে বলে আশা করা যায় না। এ ক্ষেত্রে পৃথক পাঁচটি ব্যাংকের সাংগঠনিক সাংস্কৃতিক পার্থক্য তাদের কর্মপরিবেশ, ব্যবস্থাপনার কৌশল ও সেবা কাঠামোতে বিঘ্ন ঘটাতে পারে। নিজেদের ভেতর কর্মকর্তারা সমন্বয় ঘটাতে না পারলে অফিসের কাজে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। পৃথক পৃথক ব্যাংকগুলোর সম্পদ, সম্পদের মান, দায় এবং দায়ের পার্থক্য ভিন্নতর হবে। ফলে একীভূত ব্যাংকে মনোমালিন্য সৃষ্টি হতে পারে এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হতে পারে। ২০২৪ সালের জুলাই-পূর্ব সময়কালে এই ব্যাংকগুলো স্বৈরতন্ত্রের নীতিমালা অনুসরণ করে চলত। এর মালিক বা লুটপাটে নেতৃত্ব প্রদানকারী ব্যক্তির কথায় বা নির্দেশে সব কাজ সম্পন্ন হতো। এগুলোতে শরিয়াহ বোর্ড ছিল বটে, কিন্তু এদের হাতে শরিয়াহ পরিপালনের কোনো ক্ষমতা ছিল না। আবার কোনো কোনো ব্যাংকের মালিকদের আজ্ঞাবহ ইসলামি লেবাসধারী ব্যক্তিরা নামেমাত্র শরিয়া বোর্ডের সভা ডাকতেন এবং ব্যাংকের কাজগুলো শরিয়াহসম্মত হচ্ছে বলে সিদ্ধান্ত জানিয়ে চলে যেতেন। নতুনভাবে গঠিত ব্যাংকে এ ধরনের পুতুল-সদস্য না রেখে কেবল কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম এমন ব্যক্তিদের দ্বারা শরিয়াহ বোর্ড গঠন করতে হবে। একীভূতকরণের ফলে ব্যাংকের কিছু পদ বিলুপ্ত হতে পারে, কিছু লোক উদ্বৃত্ত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেই হিউম্যান রিসোর্সেস ব্যবস্থাপনা করা উচিত হবে। অবশ্য এ ক্ষেত্রে গভর্নর বলেছেন যে, কাউকেই ছাঁটাই করা হবে না।

ব্যাংক একীভূতকরণের এই যুগান্তকারী উদ্যোগটি সফল করতে হলে জনগণ ও অংশীজনের আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে সঠিক ও স্বচ্ছ পরিকল্পনা থাকা এবং ঘোষণা করা প্রয়োজন হবে, প্রত্যেক ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য ও দায়-সম্পদের নিরীক্ষা নিরপেক্ষ অভিজ্ঞ স্বতন্ত্র সংস্থা বা আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে করাতে হবে, আর্থিক বিষয়ে ইসলাম ধর্মের নির্দেশনাসংক্রান্ত সুস্পষ্ট জ্ঞানসম্পন্ন স্পষ্টবাদী এবং সাহসী আলেমদের নিয়ে শক্তিশালী শরিয়াহ বোর্ড গঠন করতে হবে, কর্মীদের প্রতি আন্তরিকতা থাকতে হবে, তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার, ডাটা সিকিউরিটি ও ক্লাউড ব্যবস্থাপনায় যথোপযুক্ত বিনিয়োগ করতে হবে।

গভর্নরের এই উদ্যোগটি হতে পারে দেশের শরিয়াহ অর্থনীতির ভবিষ্যৎ ভিত্তি। তবে সততা ও দক্ষতার সঙ্গে উপযুক্ত কর্মবল দ্বারা একীভূত ব্যাংকটি পরিচালনা করতে হবে। দক্ষতাসম্পন্ন, আস্থাভাজন এবং শরিয়াহ পরিপালনের মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত ব্যবস্থাপনা দ্বারা নতুন একীভূত ব্যাংকটি এগিয়ে যাক এবং পাঁচ ব্যাংকের হতাশাগ্রস্ত মানুষের মনে নতুন আশার আলো প্রজ্বালন করুকÑ এটাই আমাদের প্রত্যাশা।


মাহফুজুর রহমান : সাবেক নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক