আমরা সেই স্বপ্ন দেখি, যেখানে মেয়েরা পিরিয়ড নিয়ে বা প্যাড কিনতে লজ্জা পাবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৪ জুন ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
আমরা সেই স্বপ্ন দেখি, যেখানে মেয়েরা পিরিয়ড নিয়ে বা প্যাড কিনতে লজ্জা পাবে না

মাসিক একটি স্বাভাবিক ও জৈবিক প্রক্রিয়া। বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষের এই মাসিক বাস্তবতাটা হয়, তারপরও এটি একটি সোশ্যাল ট্যাবু এবং বিষয়টি নিয়ে অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে। বাংলাদেশে এর ফলে অনেক মেয়ে স্কুল মিস করে এবং এ কারণে অন্যান্য ক্ষেত্রেও অনেক সময় পিছিয়ে পড়ে। এর বাস্তবিক কিছু পরিণতি আছে।

এটা শুধু স্বাস্থ্যগত ইস্যুই নয়, বরং অর্থনৈতিক ও সামাজিক ইস্যুও। ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিনের মাধ্যমে আমরা এই শূন্যস্থান পূরণের চেষ্টা করছি। আমরা মনে করি স্যানিটারি ন্যাপকিনের প্রাপ্যতা আরও বাড়ানো উচিত এবং আমরা সেটাই নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।

আমরা করপোরেট অঙ্গনে ভেন্ডিং মেশিনের মাধ্যমে এর প্রাপ্যতা সহজলভ্য করার চেষ্টা করছি। আমাদের মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের অফিসগুলোয়ও তা আছে। ডেইলি স্টার, গ্রামীণফোনের মতো অন্য কর্পোরেট অফিস থেকে শুরু করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লার আলহাজ নুর মিয়া ইউনিভার্সিটিসহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও এই ভেন্ডিং মেশিন রয়েছে। এতে করে নারী শিক্ষার্থীরা সহজে ও কম খরচে স্যানিটারি ন্যাপকিন সংগ্রহ করতে পারছে। আমি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বলতে চাই আমরা সারাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এমন সুবিধা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আমাদের পণ্যই আমাদের স্বপ্নপূরণে কাজ করছে। বাংলাদেশে প্রথম দ্বিস্তরবিশিষ্ট ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন সুরক্ষা নিশ্চিত করছে। বাজারে একমাত্র ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিনই এডিএল ও এয়ারলেড পেপার ব্যবহার করে। আমাদের এই টেকনিক্যাল বিশেষত্বের বাইরেও আমাদের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। আমরা চেষ্টা করি সব জায়গায় যেন আমাদের পণ্য পাওয়া যায়। মাসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলা সুস্থ জীবনের অংশ যেন হয়, সেটাও আমরা নিশ্চিতের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

আমরা এমন এক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি যেখানে কোনো মেয়ে তার পিরিয়ড নিয়ে লজ্জা পাবে না এবং সবজায়গায় স্যানিটারি পণ্য পাওয়া যাবে।

প্রায়ই একটি প্রশ্ন ওঠে যে মাসিক তো মেয়েদের ইস্যু, ছেলেরা এই বিষয়টাতে কেন জড়াবে। আমরা বলতে চাই, যে ইস্যুর সঙ্গে পৃথিবীর অর্ধেক জনগোষ্ঠী জড়িত সেটা কোনোভাবেই নির্দিষ্ট কোনো গোষ্ঠীর বিষয় থাকতে পারে না। এটি পুরো সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়।

বিচ্ছিন্ন হলে উন্নয়ন সম্ভব না। আমরা এখন একসঙ্গে কাজ করি। একসঙ্গে জীবনের পথে এগিয়ে চলি। আমরা মেয়েরা এখন সবক্ষেত্রে- কাজে বলেন, লিডারশিপে বলেন, সব জায়গায় এগিয়ে যাচ্ছি। তবে এখনো অনেক বাধা রয়ে গেছে। পিরিয়ডের মতো এত সাধারণ একটা জিনিস নিয়ে কথা বলতে ২০২৫ সালে এসেও আমাদের সমস্যা হয়। এটা আমাদের সমাজের ব্যর্থতা। এটি আমাদের সবার দায়িত্ব, এটি সুস্থ সমাজ করতে।

পুরুষের মা আছে, বোন আছে, স্ত্রী আছে এবং নারী বন্ধু আছে। তাই তাদের বোঝাপড়াও অত্যন্ত জরুরি। এই মানসিক ট্যাবু ভাঙতে আমাদের অংশগ্রহণমূলক আলোচনা জরুরি। এতে করে এমপ্যাথেটিক সমাজ গড়ে উঠতে পারে।

আমাদের নতুন ব্র্যান্ডটি নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। মাত্র ২ বছর আগে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে আত্মপ্রকাশ করে ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন। পাশাপাশি দীর্ঘ ৫ দশক ধরে বাংলাদেশিদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে মেঘনা গ্রুপ।

আমার বাবা ও এই গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের স্বপ্ন এমজিআই সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ভূমিকা রাখবে। ফ্রেশ অনন্যার মাধ্যমে আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি।