ভারতীয় আমের চালান ফিরিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র

আমাদের সময় ডেস্ক
২০ মে ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
ভারতীয় আমের চালান ফিরিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র


নথিপত্রের ত্রুটির কারণে ভারতীয় আমের অন্তত ১৫টি চালান ফিরিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে রপ্তানিকারকদের প্রায় ৫ লাখ ডলার লোকসান গুনতে হচ্ছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

চলতি মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস, সান ফ্রান্সিসকো ও আটলান্টা শহরের বিমানবন্দর থেকে এসব আমের চালান বাতিল করা হয়েছে। মার্কিন প্রশাসন এসব আম ভারতকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, নয় তো সেখানেই নষ্ট করার শর্ত দিয়েছে। পরিবহন খরচ বিবেচনায় ফিরিয়ে আনার চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আমগুলো নষ্ট করে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রপ্তানিকারকরা।

ভারতীয় আমের শীর্ষ গন্তব্যগুলোর একটি হলো যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিবছর ব্যাপক পরিমাণ আম ভারত থেকে মার্কিন মুলুকে যাত্রা করে। তবে এবার যাত্রাপথে এই ভুল হলো।

টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ৮ ও ৯ মে মুম্বাইয়ে আমগুলোর প্রয়োজনীয় বিকিরণ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। মার্কিন কর্মকর্তারা এই বাধ্যতামূলক প্রক্রিয়াসংশ্লিষ্ট নথিপত্রে অসঙ্গতি পেয়েছেন। সাধারণত এই প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট মাত্রার বিকিরণে ফলের পোকামাকড় ধ্বংস ও সংরক্ষণের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়। এসব আমে কোনো পোকা ছিল না। মার্কিন কৃষি দপ্তর (ইউএসডিএ) থেকে ভারতীয় এক রপ্তানিকারকের কাছে এক বার্তায় বলা হয়েছে, মার্কিন শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগ ‘ভুলভাবে ইস্যু করা পিপিকিউ২০৩’-এর কারণে আম আমদানির অনুমতি দেয়নি। এতে আরও বলা হয়েছে, চালানটি পুনরায় রপ্তানি অথবা ধ্বংস করে ফেলতে হবে’ এবং এই চালানের কোনো ব্যয়ই যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বহন করবে না।

ভিসা নিষেধাজ্ঞা : অবৈধ অভিবাসনে সহায়তার অভিযোগে ভারতীয় বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থার মালিক, প্রধান নির্বাহী ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ভারতীয় এসব সংস্থা সচেতনভাবে অবৈধ অভিবাসনে সহায়তা করছে বলে অভিযোগ করেছে ওয়াশিংটন। গতকাল সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ভারতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলো প্রতিদিনই অবৈধ অভিবাসন, মানবপাচার এবং এর সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তের কাজ করে যাচ্ছে। খবার পিটিআইর।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ভারতীয় এসব ভ্রমণ সংস্থার মালিক, নির্বাহী ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে; যারা সচেতনভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসনে সহায়তা করেছে।’ এ ধরনের মানবপাচার চক্র ভেঙে দিতে ভবিষ্যতেও ওয়াশিংটনের ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমাদের অভিবাসননীতি কেবল বিদেশিদের যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করার জন্যই নয়, বরং যেসব ব্যক্তি এই আইন লঙ্ঘন করে তাদেরও জবাবদিহির আওতায় আনতে কাজ করে। এর মধ্যে অবৈধ অভিবাসনে সহায়তাকারীরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও মার্কিন নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইন ও নীতির বাস্তবায়ন করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এ ছাড়া, এই ভিসা নিষেধাজ্ঞায় বৈশ্বিক এবং এমনকি যারা সাধারণত ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রামের আওতায় পড়েন, তারাও নিশানা হবেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর।

গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই দেশ থেকে অবৈধ অভিবাসীদের তাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার অবৈধ অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। সেই তালিকায় আছে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী ভারতীয়রাও। কিছুদিন আগে হাতে ও কোমরে রশি বরে ফেলতে হবে’ এবং এই চালানের কোনো ব্যয়ই যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বহন করবে না।