মেধা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে

সাক্ষাৎকার

পলাশ সরকার
০৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
মেধা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে

এম.সাফাক হোসেন একজন কমিউনিকেশন স্পেশালিস্ট ও ট্রেইনার। তিনি ফাউন্ডার ও চিফ ট্রেইনার, সিএসডি একাডেমি এবং প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এইচ অ্যান্ড এইচ ফাউন্ডেশনের। এম. সাফাক হোসেন পরামর্শক হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে পার্টটাইম লেকচার দিয়ে থাকেন। তার দীর্ঘ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতার কথা, তরুণ প্রজন্মের ভেতরে স্বপ্ন তৈরি করা এবং সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথ দেখানোসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন আমাদের সময়ের সঙ্গে। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন পলাশ সরকার

আমাদের সময় : শৈশবে সবার মতো আপনি কী বহুমুখী স্বপ্ন দেখতেন?

এম.সাফাক হোসেন : শৈশবে বহুমুখী স্বপ্ন দেখতাম, কখনো এইটা কখনো ওইটা। স্থির তেমন কিছু ছিল না কিন্তু ছোটবেলা থেকেই নতুনত্ব নিয়ে কৌতূহল অনেক বেশি ছিল, যেমনÑ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, আবিষ্কার, সৃষ্টিজগৎ রহস্য নিয়ে।

আমাদের সময় : আপনি জীবনে যা হতে চেয়েছিলেন তা কী হতে পেরেছেন?

এম.সাফাক হোসেন : আমার জীবনে দুটি ঘটনা ঘটেছে! কিছু বাস্তবতার কারণে, যেমন- সুযোগের অভাব, সঠিক নির্দেশনা একদিকে, অপরদিকে একটা সময় পার হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে সাহসিকতা। এই দুইয়ের মিশ্রণে যা চেয়েছি তা হতে পারিনি। কিন্তু আজ অন্যদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে মানসিকভাবে সঠিক নির্দেশনা যাতে পায়, এ ধরণের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি।

আমাদের সময় : সিএসডি একাডেমি প্রতিষ্ঠা করার কারণ কী?

এম.সাফাক হোসেন : সিএসডি একাডেমি, যার পূর্ণ অর্থ কমিউনিকেশন অ্যান্ড স্কিলস ডেভেলপমেন্ট একাডেমি। এই একাডেমিতে প্রথম পরিকল্পনা করি কমিউনিকেশন স্কিলসটা নিয়ে কাজ করার জন্য। মানবসভ্যতার শুরু থেকেই কমিউনিকেশনের প্রচলন। ধার্মিকভাবে চিন্তা করলেও বলব, জগতের সৃষ্টি থেকেই কমিউনিকেশনের আবির্ভাব। যোগাযোগ কানেক্টিভিটি বলতে যেটাকে সহজভাবে আমরা বুঝি।

আমাদের সময় : কী ধরনের কাজ করা হয় এই একাডেমি থেকে?

এম. সাফাক হোসেন : এই একাডেমি করার মূল লক্ষ্যই হচ্ছে ইন্ডিভিজুয়াল কমিউনিকেশন স্কিল ডেভেলপমেন্ট করা, বিভিন্ন কর্মশালার মাধ্যমে নিজের দুর্বলতা খুঁজে বের করে তা মেরামত করে দক্ষতা বাড়ানের কৌশল, ক্যারিয়ার উন্নত করতে গাইডেন্স দেওয়া, উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ, দুস্থ বা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে থেকে প্রতিভাবান ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের ওপর সুযোগ করে দেওয়া।

আমাদের সময় : এইচ অ্যান্ড এইচ ফাউন্ডেশনের সভাপতি হিসেবে সমাজসেবামূলক কী ধরনের কাজ করেছেন?

এম.সাফাক হোসেন : এইচ অ্যান্ড এইচ ফাউন্ডেশন করোনা মহামারির সময়ে মেডিক্যাল ফ্রন্টলাইনে সাপোর্ট দিয়েছে। আমরা সমাজে পিছিয়ে পড়া কিছু শিশুকে মাধ্যমিক শিক্ষা পর্যন্ত সাহায্য করে আসছি। এ ছাড়া সামাজিক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন, পার্সোনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রশিক্ষণ, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা, স্বাবলম্বী করা ইত্যাদি।

আমাদের সময় : আপনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কী ধরনের বক্তব্য দিয়ে থাকেন?

এম.সাফাক হোসেন : বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ে পার্টটাইম লেকচার দিয়ে থাকি, তাছাড়া প্রায় সময় শিক্ষার্থীদের সেমিনারে বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ থাকে। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আমার বক্তব্যের মূল বিষয় সব সময় স্বপ্ন, জীবনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কীভাবে তৈরি করতে হবে, বাস্তবে আনতে হলে করণীয়, জীবনের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে সেগুলোকে কাজে লাগানের কৌশল, মানসিক চাপ কমানোর কৌশল, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট নিয়ে নিজের প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত, বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে নিজের স্বপ্নগুলোকে কীভাবে লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়, এসব বিষয়ে গুরুত্ব দিই।

আমাদের সময় : আপনি শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনেক কাজ করছেন। তাদের সংস্পর্শে গিয়ে কী বুঝতে পারছেন?

এম. সাফাক হোসেন : শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিগত বছর বেশ কাজ করেছি। তাদের মধ্যে মিশ্র অভিজ্ঞতা হয়েছে। অনেকের ভেতর বহু প্রতিভা রয়েছে, কারও ভেতর এক্সট্রা ট্যালেন্ট দেখেছি, আবার এমনও দেখেছিÑ কোনো রকম একটা ডিগ্রি সনদ আর চাকরি পেলেই হলো। বেশিরভাগ যেটা পেয়েছি, প্রতিভা-স্বপ্ন নিয়ে সামনে এগোতে চায়, কিন্তু বাস্তবতার কারণে তাদের স্বপ্ন বাধাগ্রস্ত হয় সুযোগের অভাবে।

আমাদের সময় : বর্তমান প্রজন্মকে জেন-জি বলা হয়। তাদের উদ্দেশে কিছু বলুন?

এম.সাফাক হোসেন : একসময় এই জেন-জিকে মূল্যায়ন করা হতো না। এরা কী করতে পারে। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে প্রত্যক্ষভাবে প্রমাণিত এই জেনারেশন কী করতে পারে। আজকের প্রযুক্তির যুগ আগামীতে হবে ভার্চুয়াল রিয়ালিটি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের যুগ। নিজেকে এগিয়ে নিতে মেধা, পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রতি মুহূর্তে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

আমাদের সময় : সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

এম.সাফাক হোসেন : আপনাকেও ধন্যবাদ।