চব্বিশে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

জুবায়ের হাসান
২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
চব্বিশে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

লন্ডনভিত্তিক প্রখ্যাত সংবাদ ম্যাগাজিন দ্য ইকোনমিস্ট বাংলাদেশকে ২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশ হিসেবে নির্বাচিত করেছে। গত ১৯ ডিসেম্বর দ্য ইকোনমিস্ট এ বিষয়ে একটি দীর্ঘ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। স্বৈরশাসককে ক্ষমতাচ্যুত করে উদার গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য দ্য ইকোনমিস্ট চব্বিশের চ্যাম্পিয়ন দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে এমন স্বীকৃতি দিয়েছে। এর মাধ্যমে মূলত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আরও একটি গৌরবজনক স্বীকৃতি অর্জন হলো। ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে যে অস্থায়ী সরকার গঠন হয় তা বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা, সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের বিপুল সমর্থন লাভ করতে সমর্থ্য হয়। ১৫ বছরের টানা স্বৈরশাসনের আচমকা অবসানের পর বাংলাদেশ চরম নৈরাজ্য ও ধ্বংসের পথে যেতে পারত। অর্থনৈতিক সংকটের দরুন দেশ দেউলিয়া হয়ে যেতে পারত। প্রতিহিংসার আগুনে হাজার হাজার মানুষ হতাহত হতে পারত এবং ভেঙে পড়তে পারত বিচারিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা। কৃষি, কলকারখানার উৎপাদন এবং দেশের সব ব্যবসা-বাণিজ্য ও ব্যাংক-বীমার প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গিয়ে সমগ্র দেশে সৃষ্টি হতে পারত দুর্ভিক্ষকালীন অবস্থা; কিন্তু তা হয়নি। নবগঠিত সরকারের প্রচেষ্টা ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পাহাড় পরিমাণ সমস্যা, বাধা, ষড়যন্ত্র ইত্যাদি সত্ত্বেও সীমাবদ্ধ শক্তি দিয়েই ড. ইউনূস বাংলাদেশকে সঠিক কক্ষপথে পরিচালিত করতে সক্ষম হন। বিশেষ করে বিমর্ষ ও নিশ্চল হয়ে পড়া পুলিশ বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে সক্ষম করে তোলা ইউনূস সরকার ও সেনাবাহিনী বিরাট কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখে। দেশের প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা, সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাজনিত কার্যাদি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ইত্যাদি সচল ও স্থিতিশীলতার দিকে অগ্রসর হতে থাকে। সেই সঙ্গে শত উসকানি সত্ত্বেও বাংলাদেশের মানুষ শান্তি বজায় রেখেছে এবং উগ্র আচরণ পরিহার করে নজিরবিহীন ঐক্য ও সংযম প্রদর্শন করেছে। দেশের মানুষ যেভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করে চলেছেন তা নিঃসন্দেহে ভূয়সী প্রশংসার দাবি রাখে। জনগণ এখন দীর্ঘ ১৫ বছর পর স্বাধীনতার আনন্দ উপভোগ করছে। এবারের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উদযাপনে জনগণের মধ্যে সেই উচ্ছ্বাসের ঢেউ-ই পরিলক্ষিত হয়েছে। দীর্ঘদিন কণ্ঠরোধ করে রাখা বিরোধী দলও এখন মুক্তভাবে কথা বলতে পারছে। এ অবস্থা চলমান থাকলে আশা করা যায় বর্তমান ইউনূস সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে আগামীতে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে পারবে।

ফ্যাসিস্ট হাসিনা-পরবর্তী ইউনূস সরকার আরও সুন্দর ও সহজভাবে দেশকে সংস্কার, নির্বাচন, উন্নতি ও সমৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করতে পারত; কিন্তু তা যথেষ্ট বাধাগ্রস্ত করে চলেছে নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় সরকার। ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশবিরোধী তাৎপরতা, অপতথ্য ছড়ানো এবং সংখ্যালঘু কার্ড খেলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। ভারত কিছুতেই ডক্টর ইউনূস সরকারকে মানতে চাইছে না। তাই ভারতের এসব কর্মকাণ্ড মোকাবিলা করার কাজকে ডক্টর ইউনূস সরকারকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিতে হচ্ছে। ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের ওপর চাপ প্রয়োগের যে কৌশল নেওয়া হয়েছে, তা ড. ইউনূস ছাড়া অন্য কেউ সামাল দিতে পারতেন কিনা সে বিষয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন থেকে যায়। শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে বাংলাদেশের শীর্ষ দুটি বিরোধী রাজনৈতিক দল অতিসত্বর দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন-ক্ষণ ঘোষণার দাবি করে আসছে; কিন্তু দেশের তরুণরা আরও অগ্রবর্তী চিন্তা করছে। দেশের তরুণ সমাজ নির্বাচনের আগে যথাযথভাবে রাষ্ট্র সংস্কারের দাবি করছে। তারা নির্বাচনের চেয়ে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং দেশের জাতীয় স্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকেই বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। এদেশের তরুণ সমাজের কাছে স্পষ্ট হয়েছে যে, অতীতে যেসব রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থেকেছিল তাদের শাসনকাল খুব বেশি সুখকর, কল্যাণকর ও জনবান্ধব ছিল না। এই তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকেই জনগণের পছন্দনীয় সরকার প্রধানে পরিণত হয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাকে ঘিরেই এখন মানুষের মধ্যে সংস্কার ও পরিবর্তনের প্রত্যাশা জন্মেছে।

শেখ হাসিনা-পরবর্তী যুগে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের যে অবনতি হয়েছে তার জন্য ভারতই দায়ী। ভারতীয় কর্মকাণ্ডই বাংলাদেশে ভারত বিদ্বেষী মনোভাব জাগিয়ে তুলেছে। ৫ আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত ভারতের আচরণ আদৌ বন্ধুসুলভ নয়। ভারত এখনও একচেটিয়াভাবে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে যাচ্ছে। ভারতে শেখ হাসিনার আশ্রয়লাভ বাংলাদেশের মানুষকে বিক্ষুব্ধ করেছে।

ভারতের ভূমি ব্যবহার করে শেখ হাসিনা অনর্গল বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য দিয়ে চলেছেন। এমনকি সম্প্রতি তিনি নিউইয়র্কে প্রচারিত এক ভিডিও ভাষণে ড. ইউনূসকেই জুলাই গণহত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। হাসিনার এ বক্তব্য দেশের মুক্তিকামী জনগণের মধ্যে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়। সেই সঙ্গে ভারতে বিজেপির সমর্থকদের দ্বারা ডক্টর ইউনূসের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো বাংলাদেশের মানুষকে চরমভাবে অপমানিত করে। জুলাই বিপ্লব কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর দ্বারা পরিচালিত ছিল না, বরং তা ছিল বাংলাদেশের গণমানুষের এক ঐতিহাসিক গণ-আন্দোলন। অতএব বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত উষ্ণ ও স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়তে চাইলে অবশ্যই হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি মেনে নিতে হবে এবং বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লবকে স্বীকৃতি দিতে হবে। শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের বিশেষ সম্পর্ক কোনো লুকোচুরির বিষয় ছিল না। হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে ভারত সব পন্থাই অবলম্বন করেছিল। বিনিময়ে ভারত বাংলাদেশ থেকে অপার সুযোগ-সুবিধা আদায় করে নিয়েছিল। তাই হাসিনার পতন ভারতের জন্য নিশ্চয়ই এক ধাক্কা; কিন্তু তার পরও বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবার সুবর্ণ সুযোগের চাবিকাঠি ভারতের হাতেই রয়েছে। এ সুযোগ নষ্ট করলে ভারতেরই ক্ষতি বেশি। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে ভারত বাংলাদেশে কয়েকগুণ বেশি ব্যবসা করে। এ ছাড়া বাংলাদেশের কাছ থেকে ভারত বাগিয়ে নিয়েছে নামমাত্রমূল্যে করিডর সুবিধা, যা দ্বারা ভারতের পশ্চিম অংশের সঙ্গে পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি অঙ্গরাজ্যের স্বল্প সময় ও খরচে সহজ যোগাযোগব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত।

মজার ব্যাপার হচ্ছেÑ ভারত-বাংলাদেশ বৈরিতা চলমান থাকলে বাংলাদেশই বরং বেশ কয়েকটি খাতে দ্রুত স্বনির্ভরতা অর্জন করতে পারবে এবং তাতে দেশের বিপুল পরিমাণ অর্থের সাশ্রয় ঘটবে। যেমনÑ কৃষি, ডেইরি, পোলট্রি ও মৎস্য খাতে বাংলাদেশ সহজেই স্বনির্ভরতা অর্জন করতে পারে এবং চিকিৎসা, উচ্চশিক্ষা ও পর্যটন খাতে প্রভূত বিকাশ সাধন লাভ করতে পারে। আর অন্যান্য পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ভারতের বিকল্প দেশ নির্বাচন করা বর্তমান দুনিয়ায় খুব কষ্টসাধ্য নয়। অতএব বাংলাদেশ অনায়াসে ভারতনির্ভরতা দূর করতে পারবে। ভারতের কোটি কোটি লোক এখনও চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য ভারত অবশেষে চীন-বৈরিতা পরিত্যাগ করতে চাইছে। গত অক্টোবরের শেষার্ধে রাশিয়ার কাজানে অনুষ্ঠিত ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে চীনের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির ভারতীয় আকাক্সক্ষার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল। সেই ধারাবাহিকতায় গত ১৮ ডিসেম্বর বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হলো চীন-ভারত সীমান্ত বিবাদ নিরসনের বৈঠক। সুতরাং নরেন্দ্র মোদি ভারতকে আঞ্চলিক ও বিশ্ব রাজনীতিতে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে বিশেষ শক্তিশালী দেশ হিসেবে চিত্রায়ন করে যে অহংবোধের প্রকাশ ঘটান তা বাস্তবে আপেক্ষিক। কেননা এসব ক্ষেত্রে ভারত যদি হাতি হয় তবে চীন হলো তিমি। সুতরাং বাংলাদেশের ওপর ভারতের চাপ প্রয়োগের নীতি একসময় উবে যাবে।

বস্তুত স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়ে ভারত একাধিকবার ব্যর্থ হয়েছে। ১৯৭৫-এর পট পরিবর্তনের পর এবং ১৯৯১ ও ২০০১-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের পর ভারত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে; কিন্তু এবার চব্বিশের জুলাই বিপ্লবের পর ভারত সবচেয়ে ভয়ংকর প্রতিক্রিয়া দেখানো অব্যাহত রেখেছে। গত ৯ ডিসেম্বর ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির ঢাকা সফরের পরও বাংলাদেশ বিষয়ে ভারতের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। স্বয়ং নরেন্দ্র মোদি ১৯৭১ সালে সংঘটিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হিসেবে আখ্যায়িত করে এদেশের জনগণের সঙ্গে উপহাস করেছেন। নরেন্দ্র মোদির একথা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নয়, বরং তা স্থানীয় নেতার দেশীয় হিন্দু ভোট কুড়ানোর চালবাজি। ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ বাংলাদেশের মুক্তিপাগল জনতা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ শুরু করেছিল, তা-ই শেষ পর্যন্ত ৩ ডিসেম্বর রূপ নেয় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করেই পাক-ভারত যুদ্ধ বেধে যায়, কাশ্মীর নিয়ে নয়। তাই ১৯৭১ সালের যুদ্ধকে নিছক পাক-ভারত দ্বিপক্ষীয় যুদ্ধ বলা চলে না, বরং তা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। পশ্চিম রণাঙ্গনে ১৪ দিনের পাক-ভারত যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল ঠিকই; কিন্তু পূর্ব রণাঙ্গনে তথা পূর্ব পাকিস্তানে বাংলাদেশ ৯ মাসব্যাপী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল। সুতরাং নরেন্দ্র মোদি মাত্র ১৪ দিনের পাক-ভারত যুদ্ধ নিয়ে বড়াই করেছেন; কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের অহংকার হলোÑ তারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস ভীষণ রক্তক্ষয়ী লড়াই করেছিল। আর সে কারণেই ভারত ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ১৯৭১ সালে নিছক পাক-ভারত যুদ্ধ হলে এ স্বীকৃতি দানের ঘটনা ঘটলো কী করে? বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ করেছিল বলেই ভারত ওই স্বীকৃতি দিয়েছিল।

বর্তমানে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির আলামত দেখা যাচ্ছে। এতে ভারত হয়ে পড়েছে বেশ উদ্বিগ্ন। ফলে ভারত আরও বেশি বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণায় লিপ্ত হয়েছে; কিন্তু ভারতকে মনে রাখা প্রয়োজন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান উভয়ে কাছাকাছি আসতে চাইছে নিছক ইসলাম ও মুসলমানিত্বের টানে নয়। বরং এই উভয় দেশের জনগণের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরাজ করছে ভারতীয় আধিপত্যবাদের ভীতি। বাংলাদেশের মানুষ হিন্দুত্ববাদের সমালোচনা করলেই তাদের বলা হচ্ছেÑ সাম্প্রদায়িক; কিন্তু আসলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্যই হিন্দুত্ববাদের বিরোধিতা করা হয় এবং তা এদেশের মানুষের অসাম্প্রদায়িক চেতনার বহিঃপ্রকাশ। অতএব বাংলাদেশের মানুষের ওপর সাম্প্রদায়িকতার তকমা লাগানোর অপতৎপরতা ভারতকে অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।


জুবায়ের হাসান : রাজনৈতিক বিশ্লেষক