কৃষি গুচ্ছে প্রথম হয়েছেন ময়মনসিংহের জাইমুন

আশিকুজ্জামান, বাকৃবি
০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
কৃষি গুচ্ছে প্রথম হয়েছেন ময়মনসিংহের জাইমুন

ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার প্রবল ইচ্ছা ছিল। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল খারাপ হওয়াই পরবর্তী সময়ে আর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি। তবে তিনি থেমে থাকেননি, হয়েছেন দেশসেরা কৃষি গুচ্ছ পরীক্ষায়। বলছিলাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (কে বি) কলেজের শিক্ষার্থী জাইমুন ইসলামের কথা। তিনি ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ৫১ হাজার ৮শ’ ১১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে দেশসেরা প্রথম স্থান অর্জন করেছেন। জাইমুনের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলায়।

কৃষি গুচ্ছ ছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং জিএসটি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেয়েছিলেন কিন্তু তার ভাষ্যমতে ফলাফল ততটা আশানুরূপ ছিল না। সত্যি বলতেই তেমন একটা খুশি হতে পারেননি। তবে জাইমুনের কৃষি গুচ্ছের প্রস্তুতি খুবই ভালো ছিল কৃষি গুচ্ছের প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল আহামরি যে ভালো হয়েছে তেমন নয়। জিপিএ-৫ পেলেও ইংরেজিতে পেয়েছিলাম এ মাইনাস। আমাকে নিয়ে সবার প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি তাই এই ফলাফলে কেউ খুশি হতে পারেনি। সত্যি বলতে আমার জীবনের বিশেষ কিছু মানুষ আমার ফলাফলে কোনোভাবে খুশি হতে পারেননি। ফলাফলের পর থেকে প্রায় অনেকদিন আমার পড়ালেখাটা তেমনভাবে হয়নি। সেজন্য আমি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো পজিশনে চান্স পাইনি। কিন্তু শেষ সময়ে এসে আমার মাঝে একটা অপরাধবোধ কাজ করতে শুরু করে। আমার জন্য আমার দাদা এতকিছু করেছেন আমাকে এত সাপোর্ট দিয়েছেন কিন্তু আমি ওনাকে খুশি করতে পারলাম না। তখন থেকেই আমি খুব ভালোভাবে কৃষি গুচ্ছের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করি। আমি এটা জানতাম যদি আমি পরীক্ষা দিতে পারি পরীক্ষার আগে পর্যন্ত যদি কোনো দুর্ঘটনা না হয় তবে ইনশাল্লাহ আমার ফলাফল ভালো হবে। আমি ৯৯টা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আসি এর মাঝে ৯৭টা প্রশ্নের উত্তর সঠিক হয়। নেগেটিভ মার্কিংসহ আমি মোট ৯৬.৫০ পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করি। নিজের স্বপ্ন সম্পর্কে জাইমুন আরও বলেন, ছোটবেলায় বড় একজন ব্যবসায়ী হতে চাইলেও বর্তমানে আমার ইচ্ছা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি নিয়ে পড়ার। আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কৃষিতে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে বাংলাদেশের কৃষি গবেষণায় অবদান রাখা। কৃষি গুচ্ছের ফলাফলের বিষয়ে আমি বলব এটা আমার জীবনের একটা টার্নিং পয়েন্ট। চেষ্টা করব যেন আগামীতে এই ফলাফলের মর্যাদা ধরে রাখতে পারি। অনুজদের উদ্দেশ্যে জাইমুন বলেন, জুনিয়রদের উদ্দেশ্যে একটাই কথা বলার থাকবে তুমি যে অবস্থাতেই আছো যেই পজিশনে আছ কখনো হাল ছেড়ে দিও না। পরিশ্রম করতে থাক সফলতা অবশ্যই ধরা দেবে। আর সফলতার কোনো শর্টকাট নেই। লক্ষ্য নির্ধারণ করো আর পরিশ্রম করে যাও। কখনো হতাশ হওয়া যাবে না। হতাশা কখনোই তোমাকে জীবনে ভালো কিছু দেবে না। জাইমুন ইসলামের পরিবারে রয়েছে মা আনজু আরা খাতুন ও বোন। তিনি বলেন, দুই ভাই-বোনের মধ্যে আমি ছোট। ২০১৮ সালে বাবা মোবারক হোসেন মারা যান। বাবা মারা যাবার পরে পরিবার ও পড়াশোনার সমর্থন দিয়েছেন আমার চাচাতো দাদা জনাব আবু তালেব সাহেব। ফুলপুরের পয়ারীর গোকুল চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক সম্পন্ন করে পরবর্তী সময়ে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করতে বাকৃবি চত্বরের কে বি কলেজে ভর্তি হই।