হুমকির মুখে তেলের ডিপোসহ তিন সেতু
ভৈরবের মেঘনা নদীতে ভয়াবহ ভাঙনে ১৩০ মিটার জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে বিএডিসি’র দুটি সারের গুদাম ও অফিস, যমুনা অয়েল কোম্পানির তেলের ডিপো ও অফিস এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের সেতু।
গতকাল ভোরে নদীর পাড়ের রেলওয়ে সেতু সংলগ্ন সারের গুদাম ও যমুনা তেলের ডিপো এলাকায় ভাঙনের ঘটনাটি ঘটে। এ সময় বিএডিসির সারের গোডাউনের সামনে দরিদ্রদের বসতবাড়ির ১৫-২০ টি ঘর ও যমুনা অয়েল কোম্পানির একটি অফিসের অর্ধেক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। আশঙ্কাজনভাবে হুমকিরমুখে পড়েছে বিএডিসি গোডাউনে মজুদকৃত সরকারিভাবে সদ্য বিদেশ থেকে আমদানি করা ২৫০ কোটি টাকার টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি সার। অন্যদিকে যমুনা ও মেঘনা তেলের ডিপু থেকে দেশের ২৩ জেলায় তেল সরবরাহ করা হয়ে থাকে। দ্রুত ভাঙন রোধ করা না গেলে বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতিতে পড়বে বাংলাদেশ, এমনটাই মনে করছেন এ অঞ্চলের মানুষ। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ভারপ্রাপ্ত) রেদোয়ান আহমেদ রাফি, কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আতিকুল গনি, বিএডিসি (সার) কিশোরগঞ্জের যুগ্ম পরিচালক ইকবাল মোহাম্মদ মোত্তাকিন, যমুনা অয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাক এলাহী, ভৈরব র্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার মো. শহীদুল্লাহ, ভৈরব পুলিশ সার্কেলের এএসপি মো. দেলুয়ার হোসেন খাঁন, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
নদীর পারের বাসিন্দা পিয়ারা বেগম বলেন, গতকাল রবিবার ভোরে লোকজনের হইচই চিৎকার শুনে আমি ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখি আমার ঘরের অর্ধেক নদীগর্ভে চলে গেছে। এ সময় কোনোরকম জীবন নিয়ে পরিবারসহ ঘর থেকে বের হয়ে প্রাণ বাঁচাই। তবে নিজের ঘর ও আসবাবপত্র নদীগর্ভে চলে যায়।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আতিকুল গনি বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে নদী এলাকা পরিদর্শন ও পরীক্ষা করে জেনেছি ১৩০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন এলাকায় নদীর গভীরতা ৭ থেকে ১২ মিটার। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রাথমিকভাবে ভাঙনরোধে আমরা কাজ শুরু করেছি। জিও ব্যাগের মাধ্যমে ভাঙন প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে জানান তিনি। ভৈরব বিএডিসি’র সহকারী পরিচালক (সার) শিপন সাহা জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ঘটনাটি অবহিত করা হয়েছে। যমুনা অয়েল কোম্পানির ভৈরব অফিসের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. মতিউর রহমান জানান, আমাদের ডিপোতে ১৮ লাখ লিটার জ্বালানি তেল মজুদ আছে, যার মূল্য ১৮ কোটি টাকা। নদীভাঙনে আমাদের একটি অফিস অর্ধেক ভেঙে গেলেও ডিপোর ক্ষতি হয়নি। তবে ভাঙন এলাকা বৃদ্ধি পেলে মারাত্মক ক্ষতি হবে। ভৈরব রেলওয়ের সিনিয়র সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হাসান বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে আমি ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ঘটনাটি অবহিত করেছি। তিনি বলেন, মেঘনা নদীর ওপর ২৯নং রেলওয়ে সেতু থেকে ভাঙন এলাকা সম্ভবত ১ হাজার গজ দূরে হবে।