সাদেক খান গ্রেপ্তার
রিমান্ডে সালমান আনিসুল দীপু মনি ফিরোজ ও জিয়াউল
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের হওয়া শাহরিয়ার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক এমপি সাদেক খানকে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানী তেজগাঁও থানাধীন পশ্চিম নাখালপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
অন্যদিকে গতকাল পৃথক দুই হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান
এবং মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউল আহসানকে প্রত্যেক মামলায় ৫ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ ছাড়া রাজধানীর বাড্ডা থানার সুমন সিকদার হত্যা মামলায় সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনির চার দিনের এবং ভাটারা থানার সোহাগ মিয়া হত্যা মামলায় সাবেক হুইপ আ স ম ফিরোজের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম শুনানি শেষে এ রিমান্ডের আদেশ দেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শাহরিয়ার হোসেন নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৬৮ জনের বিরুদ্ধে গত ২২ আগস্ট মামলা দায়ের করেন নিহতের বন্ধু রবিউল খান। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে দায়ের করা এ মামলায় সাদেক খানও আসামি। এ ছাড়া বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের ওপর হামলার ঘটনায়ও অভিযুক্ত তিনি। হত্যা ছাড়াও দুর্নীতি, জবরদখল, লুটপাট ও সরকারি জায়গা ভাড়া দিয়ে কোটি কোটি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সাদেক খানের বিরুদ্ধে। সাদেক খানকে গ্রেপ্তারের পর তার বিরুদ্ধে এলাকায় লুটপাট, জবরদখল, পরিবহন চাঁদাবাজির বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড রিলেশনস বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ওবায়দুর রহমান জানান, সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলার আসামি। ওই মামলায় শনিবার রাজধানীর নাখালপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জানা গেছে, মার্শা বার্নিকাট ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালের ৪ আগস্ট রাতে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের মোহাম্মদপুরের বাসায় নৈশভোজ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার পথে মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। এ কাণ্ডে একই বছরের ১০ আগস্ট ড. বদিউল আলম মজুমদার বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় ২০২১ সালের মার্চ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। তবে পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রপক্ষ অধিকতর তদন্তের আবেদন করে। আবেদনে বলা হয়, অভিযোগকারীসহ পাঁচজন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন আসামি হিসেবে ইশতিয়াক মাহমুদের নাম উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা তার নাম উল্লেখ করেননি। তাই প্রকৃত অপরাধীকে চিহ্নিত করতে অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন। মামলাটির দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করে ডিবি। মামলায় অন্যতম আসামিদের মধ্যে রয়েছেনÑ ইশতিয়াক মাহমুদ ও ছাত্রলীগের মোহাম্মদপুর থানার সভাপতি নাইমুল হাসান ওরফে রাসেল। অন্য আসামিরা হলেনÑ ফিরোজ মাহমুদ, মীর আমজাদ হোসেন, সাজু ইসলাম, রাজীবুল ইসলাম, শহিদুল আলম খান, সিয়াম ও অলি আহমেদ। তাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী, যারা বর্তমানে জামিনে আছেন।