কুবির ৫১ শিক্ষকের সংহতি প্রকাশ
কোটা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
কোটা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বিভিন্ন বিভাগের ৫১ জন শিক্ষক। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হক ভূঁইয়ার স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন শিক্ষকরা। এতে মোট ৮ জন অধ্যাপক, ১৩ জন সহযোগী অধ্যাপক, ২৮ জন সহকারী অধ্যাপক এবং ২ জন প্রভাষক স্বাক্ষর করেন।
৫১ জন শিক্ষকের সংহতি প্রকাশের বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘আমরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক কোটা সংস্থার আন্দোলন মোকাবিলায় নজিরবিহীন প্রাণহানি ও হতাহতের ঘটনায় হতাশ, মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। গণমাধ্যমের সংবাদ অনুযায়ী নিহতদের সিংহভাগই কমবয়সী ও শিক্ষার্থী এবং ৭৮ শতাংশ নিহতের দেহে প্রাণঘাতী গুলি পাওয়া গেছে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আন্দোলন ও প্রতিবাদ থামাতে এমন মারণাস্ত্রের ব্যবহার মেনে নেওয়া যায় না। উপরন্তু যেভাবে নিজ ঘরে অবস্থান করেও মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, সেটি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। আমরা মনে করি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আরও সুশৃঙ্খল ও দায়িত্বশীল আচরণ করতে পারত। আমাদের পর্যবেক্ষণ, দাবি পূরণ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দীর্ঘায়িত হয়েছে। নাশকতা এবং সম্পদ বিনষ্টের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা জড়িত নয় বলেই আমরা বিশ্বাস করি।’ বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, ‘আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে এমন প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার ও বলপ্রয়োগ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের হয়রানিমূলক গণগ্রেপ্তার, নির্যাতন বন্ধ করতে হবে এবং নিরাপদ তদন্তের মাধ্যমে সব হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে দেশের নাগরিকদের গণতন্ত্র অনুশীলনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’
এদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক নিরপরাধ কোনো শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হলে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রক্টরিয়াল বডি।
শুক্রবার রাতে কুবি প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, সমন্বয়কদের সহযোগিতার কারণে আন্দোলনের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যকে প্রবেশ করতে হয়নি। সবশেষে বলতে চাইÑ শিক্ষার্থীদের পাশে আমরা সবসময় আছি। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন বলেন, ‘আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের কল্যাণের কথা চিন্তা করেছি। নানারকম চাপ থাকলেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো পুলিশকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া আমরাই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে হয়তো আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয় বহন করব বলে ঘোষণা দিয়েছে। সর্বশেষ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সহযোগিতায় তিন শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে। আরও যদি কোনো শিক্ষার্থী আটক থাকে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিকে জানালে তারা ব্যবস্থা নেবে।’