আতর-টুপির দোকানে শেষ মুহূর্তে ভিড়

বায়তুল মোকাররমের সামনে কেনাবেচা জমজমাট

রেজাউল রেজা
০৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
আতর-টুপির দোকানে শেষ মুহূর্তে ভিড়

ঈদের নতুন জামা, পাঞ্জাবি, জুতার পর শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় এখন সবাই ছুটছেন টুপি, আতর, জায়নামাজের দোকানে। রাজধানীর মার্কেট ও ফুটপাতের এসব দোকানে ক্রেতার ভিড় কয়েকগুণ বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন বেচাবিক্রিতে ধুম লেগেছে।

আতর-টুপি কেনাকাটার জন্য জনপ্রিয় বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকার দোকানগুলো। মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ গেট সংলগ্ন দোকানগুলোতে ভিড় সবচেয়ে বেশি। এসব দোকানে টুপি, আতর, আতরদানি, সুরমা, তসবিহ, জায়নামাজের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। ক্রেতাদের নজরও কাড়ছে এসব পণ্য। সবাই হাতে নিয়ে পণ্য যাচাই করছেন, দরদামে মিললে কিনে নিচ্ছেন তারা।

এখানকার ব্যবসায়ীরা জানান, এখানে ২০০টির মতো দোকান রয়েছে। চলতি সপ্তাহে বিক্রি বেড়েছে। গতবারের চেয়ে এবার ঈদে ২০ শতাংশের বেশি রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

বিক্রয়কর্মী মো. সানাউল্লাহ জানান, গত শুক্রবার থেকে বিক্রি বেড়েছে। চাঁদরাত পর্যন্ত ভালো বাণিজ্য হবে বলে আশা করছি। একই কথা জানান এখানকার মো. সালাউদ্দিন ও মো. রাসেল হোসেনসহ অন্যান্য বিক্রেতারাও। তারা জানান, সবচেয়ে বিশি বিক্রি হচ্ছে টুপি। এরপর আতর। জায়নামাজ, সুরমা, তাসবিহর বিক্রি তুলনামূলক কম।

গুলিস্তান পীর ইয়ামেনি মার্কেট, কাঁটাবন মসজিদ মার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকার ছোট বড় মার্কেট ও ফুটপাতের দোকানে এখন ব্যস্ত আতর-টুপির ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, কম দামের মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ টাকাতেও টুপি পাওয়া যাচ্ছে। তবে ডিজাইনের মধ্যে দেশি টুপি ১০০ টাকা থেকে হাজার টাকা, চায়না টুপি ২০০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। এর থেকে একটু বেশি দামে মিলছে ভারতীয় টুপি। এসব টুপির বিক্রি বেশি। এর বাইরে মালয়েশিয়া, তুরস্ক, ভারত, সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমদানিকৃত টুপির দাম হাজার টাকার ওপরে। ৫-৭ হাজার টাকারও টুপি আছে। ডিজাইন ভেদে টুপির বাহারি নামও রয়েছে। এর মধ্যে নেটের জালি টুপি, পুঁতি ও চুমকির কাজ করা টুপি, কুশিকাটা, সিডনি, ওয়ানি, পাঠানি, গুজরাটি ইত্যাদি অন্যতম।

নতুন টুপি, আতর ও জায়নামাজে ঈদের নামাজের আনন্দ অনেকখানি বাড়িয়ে দেয়। তাই ঈদের কেনাকাটার শেষ মুহূর্তে এসব পণ্যের কদর কয়েক গুণ বেড়ে যায়। কেউ নিজের ও পরিবারের জন্য, কেউ বা আবার গ্রামের বাড়ির বয়স্ক এবং মুরুব্বিদের জন্যও এসব পণ্য কেনেন। এ উপলক্ষে জমে ওঠে এসব পণ্যের বাণিজ্য।

গ্রামের বাড়ি যাওয়ার আগে বাবা, ভাই ও ভাতিজাদের জন্য আতর, টুপি ও সুরমা কিনতে বায়তুল মোকাররমে এসেছেন মো. তালহা নূর। তিনি বলেন, ঈদের দিন নতুন টুপি, আতর, সুরমা লাগিয়ে ঈদগাহে যাওয়ার আনন্দটাই আলাদা।

বিক্রেতা মো. রাসেল হোসেন বলেন, দামি জায়নামাজের বিক্রি সেভাবে না বাড়লেও কম দামের মধ্যে বিক্রি বেড়েছে। এর মধ্যে সুতির জায়নামাজ ২০০ টাকা থেকে শুরু এবং মখমালেরগুলো ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। আর সৌদি আরব ও কাতার, কাশ্মীর থেকে আনা পশমি ও প্রিমিয়াম কোয়ালিটির জায়নামাজগুলোর বিক্রি ঢিলেঢালাভাবে চলছে।

বাজারে জেসমিন, বেলি, রজনীগন্ধা, হাসনা হেনা, চকলেট, রয়েল, হাজরে আসওয়াদ, মাস্ক সুলতান, কদম, ফেরারি, রাসা ও ফিগোর মতো নানা নামের ও ঘ্রাণের আতর পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে সাশ্রয়ী মূল্যের ছোট শিশির আতরের দিকেই আগ্রহ বেশি ক্রেতার। ব্যবসায়ীরা জানান, ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা এবং ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হওয়া আতরের শিশির চাহিদা সবচেয়ে বেশি।