স্বাধীন বিচারব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা সমীচীন নয়

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী
৩০ জানুয়ারী ২০২৪, ০০:০০
শেয়ার :
স্বাধীন বিচারব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা সমীচীন নয়

গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় যে কোনো জাতিরাষ্ট্রের সংবিধান সুরক্ষার প্রধান নিয়ামক হচ্ছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা। সভ্যতার সোপান নির্মাণে যে বিষয়টি সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল; তা হলো জনগণের সামগ্রিক নাগরিক অধিকার প্রয়োগের ভিত্তিকে সুসংহত করা। এই মৌলিক অনুষঙ্গকে ধারণ করেই জনগণের ক্ষমতায়নকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে গণতন্ত্রের বিজয় অব্যাহতভাবে সুনিশ্চিত রয়েছে। এটি সর্বজনবিদিত যে, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একে অপরের সম্পূরক ও পরিপূরক। জনগণের বাকস্বাধীনতা-অবাধ মুক্তচিন্তা ও অবারিত জীবনপ্রবাহের সব স্তরে পবিত্র সংবিধানসম্মত অধিকার ভোগের নিশ্চয়তা স্বাভাবিক সমাজব্যবস্থাকে সচল রাখে। পবিত্র সংবিধানে জনগণকে দেশের প্রকৃত মালিকানা ও প্রত্যেক নাগরিককে সমান অধিকার ভোগের অধিকার অর্পিত। তৃণমূল থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নয়নের ধারাবাহিক গতিধারা গণতন্ত্রের মূল্যবোধেই পরিশীলিত। এর অন্যথা হলে অন্যায়-অবিচার-শোষণ-শাসন-নির্মমতা-সহিংসতা-অসাম্প্রদায়িকতা-অমানবিকতা ইত্যাদি বৈরী মনোভাব সমাজকে কদর্য পথে পরিচালিত করে। এর থেকে উত্তরণের জন্যই সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাবলীল ধারায় উন্নত জীবনের মানদণ্ডে অধিকতর উঁচু মার্গে পৌঁছানোর উদ্যোগগুলো প্রশস্ত করার প্রক্রিয়াই সর্বত্র বিরাজিত।

আধুনিক শিক্ষা-জ্ঞান-বিজ্ঞান-তথ্যপ্রযুক্তি-ধর্মদর্শন ও পরিপূর্ণ জীবনাদর্শের মূলে রয়েছে সামষ্টিক বিচারব্যবস্থার ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান। অপরাধীকে শাস্তি প্রদান শুধু অপরাধকে নিয়ন্ত্রণ করে না; অন্য কেউ যাতে এ ধরনের অপরাধে যুক্ত না হয় সে শিক্ষাবার্তায় জনগণকে সতর্কিত করে। ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ-বয়স-দলমত নির্বিশেষে আইনি কাঠামোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে প্রত্যেক নাগরিক তার প্রতি রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত দায়িত্বপালন অপরিহার্য। বিচারহীনতার সংস্কৃতি শুধু ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান বা দেশকে নয়; পুরো বিশ্বকে কলুষিত করার প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ উপাদান হিসেবে বিবেচ্য। স্বচ্ছ-স্বাধীন-নৈর্ব্যক্তিক বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা সর্বোত্তম বৈশিষ্ট্যরূপে পরিগণিত। আদিম সমাজ থেকে শুরু করে দাসপ্রথা-সামন্তযুগ-পুঁজিবাদী-সমাজতান্ত্রিক বা সাম্যবাদী উৎপাদন ব্যবস্থার মোড়কে সমাজ পরিবর্তন এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা-আইন-দর্শন-বিশ্বাস ইত্যাদির অনুশীলন কার্যকর থাকার প্রাসঙ্গিকতা অভিন্ন পরিক্রমায় দেশে-দেশে যুগে যুগে প্রচলিত।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে রাষ্ট্রের উৎপত্তিসং?ান্ত মতবাদ ব্যাখ্যা করেছেন। এ কারণে রাষ্ট্রের উৎপত্তির ব্যাপারে বেশ কয়েকটি মতবাদের জন্ম হয়েছে। রাষ্ট্রের উৎপত্তিসং?ান্ত বিভিন্ন মতবাদের মধ্যে ঐশ্বরিক-বল প্রয়োগ-পিতৃতান্ত্রিক-সামাজিক চুক্তি-ঐতিহাসিক মতবাদ প্রভৃতি প্রণিধানযোগ্য। ঐশ্বরিক সৃষ্টি মতবাদ রাষ্ট্রের উৎপত্তি সং?ান্ত মতবাদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন। এ মতবাদের মূল কথা হলোÑ বিধাতাই রাষ্ট্রের সৃষ্টিকর্তা। রাজা বা শাসক, সৃষ্টিকর্তার প্রতিনিধি হিসেবে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। শাসক রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয়। শাসকের মনোনয়ন কিংবা বিনাশ জনগণের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল নয়। তবে শাসক ঈশ্বরের কাছে দায়বদ্ধ। রাষ্ট্রের উৎপত্তির ক্ষেত্রে ‘বল প্রয়োগ’ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। মিশরীয়, ব্যবলনীয়, চৈনিক, রোমান কিংবা মায়া সভ্যতার ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে স্পষ্টই বোঝা যায়, এসব সভ্যতার সৃষ্টিতে কাজ করছে ‘শক্তি প্রয়োগ’ নীতি। শুধু রাষ্ট্রের উদ্ভব নয়; রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব রক্ষার ক্ষেত্রেও বল প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা আছে। যুদ্ধ-বিগ্রহের মাধ্যমে বিশ্বে অনেক রাষ্ট্রেরই জন্ম হয়েছে। বাংলাদেশসহ আফ্রিকা-এশিয়া-ল্যাটিন আমেরিকার অসংখ্য উন্নয়নশীল রাষ্ট্র যুদ্ধ-বিগ্রহ তথা স্বাধীনতা যুদ্ধের অপরিসীম ত্যাগের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেছে। বর্তমানে দেশে দেশে যুদ্ধ ও সামরিক শক্তি বৃদ্ধি এ মতবাদকে বৈরী অনুভবে অনিবার্যতা দান করছে। তাই বল প্রয়োগ নৈতিক বিচারে সমর্থনযোগ্য না হলেও রাষ্ট্র সৃষ্টির ব্যাপারে এ মতবাদের ইতিবাচক অবদানের কথা স্বীকার না করার উপায় নেই।

সামাজিক চুক্তি মতবাদ একটি কাল্পনিক মতবাদ। এ মতবাদের মূল কথা হলোÑ প্রকৃতির রাজ্যে মানুষ পরম শান্তিতে বসবাস করত। তারা প্রাকৃতিক আইন মেনে চলত। কিন্তু কাল?মে সমাজে সম্পত্তির ধারণা বিস্তার লাভ করায় প্রাকৃতিক আইন নিয়ে মতভেদের কারণে সমাজজীবনে বিশৃঙ্খলা ও যুদ্ধাবস্থা দেখা দেয়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য মানুষ সামাজিক চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্র ও শাসক কর্তৃপক্ষ সৃষ্টি করে। টমাস হবস, জন লক ও জ্যাঁ জ্যাঁক রুশো সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দীতে এ মতবাদ সমৃদ্ধ করেন। মূলত সামাজিক চুক্তি মতবাদের মধ্য দিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্র প্রসারিত হয়। রাষ্ট্রের উৎপত্তি সং?ান্ত বিবর্তনবাদ বা ঐতিহাসিক মতবাদের মূল কথা হলোÑ কোনো একটি বিশেষ কারণে রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়নি। রক্তের সম্পর্ক, ধর্মের বন্ধন, যুদ্ধ-বিগ্রহ, অর্থনৈতিক প্রয়োজন, রাজনৈতিক সচেতনতার সংমিশ্রণে রাষ্ট্র নামক সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের জন্ম। বিবর্তনবাদকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা রাষ্ট্রের উৎপত্তি সং?ান্ত মতবাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ, যুক্তিযুক্ত ও সর্বজন গ্রাহ্য বলে বর্ণনা করেছেন। তাই রাষ্ট্রের উৎপত্তি সং?ান্ত মতবাদগুলোর মধ্যে ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদই বৈজ্ঞানিক ও যৌক্তিক হিসেবে বিবেচ্য।

বিভিন্ন অর্থবহ মতানুসারে রাষ্ট্রের উৎপত্তির পেছনে যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ ছিল তার মধ্যে অন্যতম হলো স্বাধীন বিচারব্যবস্থা। বিচার বিভাগ যে কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ। ব্যক্তিস্বাধীনতা কার্যকর, অপরাধীর শাস্তিবিধান ও পবিত্র সংবিধান সমুন্নতকরণে বিচার বিভাগ মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ সংরক্ষণ এবং এর বিকাশ বিস্তার আধুনিক সমাজ প্রতিষ্ঠার মাপকাঠি। সরকারের সাফল্য ও ব্যর্থতা এবং জনপ্রিয়তার উত্থান-পতন নির্ভর করে বিচার বিভাগের কর্মক্ষমতা-কার্যকারিতার ওপর। বিচার বিভাগের উৎকর্ষ-দক্ষতা ও প্রকৃতির উন্নয়ন তথা শ্রীবৃদ্ধি সাধনের জন্য এর স্বাধীনতা ন্যায়সঙ্গত। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বলতে সেই অবস্থাকে বোঝায় যখন বিচার বিভাগ তার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শাসন বিভাগ, আইন বিভাগ বিভিন্ন প্রকার চাপ সৃষ্টিকারী-কায়েমি শক্তি ইত্যাদির নিয়ন্ত্রণ-হুমকি-প্রভাবমুক্ত থাকে এবং কেবল সংবিধান, প্রচলিত আইন, মূল্যবোধ, বিবেক, জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও পেশাদারিত্ব দ্বারা পরিচালিত হয়। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা একজন বিচারককে তার রায় প্রদানের ক্ষেত্রে এবং সত্যানুসন্ধান-ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠায় সব রকমের সামাজিক-রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তি ও সরকার নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত রাখে। অধ্যাপক গার্নারের মতে, বিচারকরা যদি প্রজ্ঞা-সাধুতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতার অভাবে পীড়িত হন তা হলে বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে।

পক্ষান্তরে বিচারকদের দায়িত্ব হচ্ছে বিচার প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা এবং নিরপেক্ষতা বজায় রাখা। সংবিধানের ১১৬ক অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘এই সংবিধানের বিধানাবলি সাপেক্ষে বিচার-কর্ম বিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিগণ এবং ম্যাজিস্ট্রেটগণ বিচারকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকবেন।’ সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনে ন্যায়বিচার সম্পাদন বিচার বিভাগের মৌলিক কাজ। এ ক্ষেত্রে বিচারকরা দোষী ব্যক্তির শাস্তিবিধান করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত কোনোক্রমেই যেন নির্দোষ ব্যক্তি শাস্তি না পায় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখেন। বাস্তব ঘটনাবলি সংক্রান্ত তথ্য-নথিপত্র-সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণে যে কোনো মামলায়ই বিচারকরা এ কর্তব্য সুষ্ঠুভাবে পালন করেন যাতে অপরাধের মাত্রা নির্ণয় করে প্রকৃত অপরাধীকে শনাক্ত করা ও দণ্ড প্রদান সহজ হয়। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বপরিমণ্ডলে অনন্য মর্যাদায় সমাসীন বাংলাদেশ সরকারের শোষণ-বঞ্চনামুক্ত ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় আইনের শাসন-মৌলিক মানবাধিকার ও সুবিচার সুনিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও আধুনিক বিচারব্যবস্থা গঠন অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আইনের শাসন নিশ্চিতকল্পে বিচারকার্যের গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে বিচারকের সংখ্যা বাড়ানোসহ নানা উদ্যোগের ফলে বর্তমানে উপেক্ষিত ও অধিকারবঞ্চিত মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল বিচার বিভাগ।

দুঃখজনক হলেও সত্য, দীর্ঘ সময় ধরে দেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থা নিয়ে কতিপয় উন্নত দেশ তাদের প্রতিনিধির অযাচিত-অনভিপ্রেত আলোচনা-সমালোচনা-মন্তব্য-বার্তা-হস্তক্ষেপ অতিশয় দৃশ্যমান। মিথ্যা-ভিত্তিহীন-বানোয়াট কল্পকাহিনির মোড়কে অহেতুক বিভ্রান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে উন্নত বিশ্বের কথিত রাজনৈতিক বিশিষ্ট ব্যক্তিরা দেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। আইনের কোনো ব্যত্যয় কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের অবৈধ-অনৈতিক প্রভাব বিস্তারের সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও সম্প্রতি দেশের উঁচুমার্গের এক ব্যক্তিত্বের মামলা নিয়ে এসব বিশিষ্ট ব্যক্তির অপাঙক্তেয় পদক্ষেপ নানামুখী বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। প্রাসঙ্গিকতায় এটুকু বলা যায়, স্বাধীন দেশের পবিত্র সংবিধানসম্মত বিচারব্যবস্থার প্রচলিত ধারায় সব জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারপ্রধানসহ দেশের সমগ্র জনগণের প্রতি উল্লেখ্য মনোভাব অশ্রদ্ধা-অসম্মান-আস্থাহীনতার অনাকাক্সিক্ষত প্রয়াস।

এটি গভীর অনুভূত যে, বিশ্ব শান্তি সুরক্ষায় সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ বা জাতিসংঘের উন্মেষ ঘটলেও কথিত আধুনিক-উন্নত পরাশক্তিগুলোর আধিপত্য বিস্তারে কদর্য অভিপ্রায়ের বহির্প্রকাশ বন্ধ হয়নি। বৈষম্যের নির্মম প্রাচীর ভেঙে ফেলার যে উদাত্ত মানবতাবাদী চিন্তা-চেতনা থেকে ভারসাম্যহীন বিশ্বকে একটি সঙ্গত পর্যায়ে নিয়ে আসার প্রচেষ্টা কার্যকর করার সব উদ্যোগ কালক্রমে ব্যর্থতায় পর্যবসিত। গণতন্ত্র-মানবতার রক্ষাকবচদের মুখোশ উন্মোচনে সমগ্র ধরিত্রীর দরিদ্রতা-মানবিকতা চরম অসহায় পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। শতকোটি মানুষের প্রাণ বিসর্জন বা মানবেতর জীবনযাপনের প্রতি ন্যূনতম ভ্রƒক্ষেপ না করে ঘৃণ্য অপকৌশল অবলম্বনে অনৈতিক সুবিধা অর্জনে এসব দেশÑ তাদের প্রতিনিধিদের অভিন্ন চক্রান্তমূলক দুরভিসন্ধির বিস্তার এক প্রকার স্বাভাবিক ধারায় প্রবাহিত। দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তির পক্ষে মার্কিন সিনেটরদের কল্পনাপ্রসূত পত্রপ্রদান অতিসম্প্রতি উচ্চ আদালতে স্থায়ী জামিনব্যবস্থায় সম্পূর্ণ অযৌক্তিক-অমূলক-অসার প্রমাণিত হয়েছে। এসব বৈশ্বিক চক্রান্ত মোকাবিলায় বিশ্বের সব নিপীড়িত-নির্যাতিত ও বৈষম্যের শিকারে পর্যুদস্ত দেশ-সরকার ও জনগণের ঐক্যবদ্ধতার কোনো বিকল্প নেই। মোদ্দা কথা এদের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থে সব ধরনের অগ্রহণযোগ্য নষ্টামি প্রতিরোধে বিশ্বের সব সচেতন-বিবেকবান-গণতান্ত্রিক ও মানবতাবাদী ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের জোরালো কণ্ঠস্বর অধিকতর সোচ্চার করা অত্যন্ত জরুরি।


ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়