কম্পিউটার প্রকৌশলে পড়ার প্রয়োজনীয়তা
কম্পিউটার প্রকৌশল বর্তমান সময়ের একটি আলোচিত বিষয়। অনেকাংশে প্রকৌশল বলতেই আমরা কম্পিউটার প্রকৌশল বলে থাকি। বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাশাপাশি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও বর্তমানে প্রকৌশল ডিগ্রি প্রদান করে থাকে। কম্পিউটার প্রকৌশলে পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার প্রকৌশল ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মতামত তুলে ধরছেন
নাজমুচ্ছাকিব
প্রকৌশলী হতে হলে যা জানা প্রয়োজন
মো. তাহজীব উল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক
তথ্যপ্রযুক্তির যুগে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বর্তমান শিক্ষার্থীদের একটি অতি পছন্দের বিষয়। এর কারণ যে শুধু চাকরি বাজারে প্রচুর সুযোগ এবং চাহিদা তা নয় বরং দেশের বাইরেও উচ্চশিক্ষায় অনেক সুযোগ তৈরি হয়েছে এই দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য। প্রচুর চাহিদার কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি সব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েও এই বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু অনেক অভিভাবক এবং শিক্ষার্থী এই বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পূর্ববর্তী যেসব বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান থাকা অতীব জরুরি সে সম্পর্কে না জানায় ভর্তি হওয়ার পর অনেকেই অকালে ঝরে যায়। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে অন্তত গণিত, আইসিটি এবং পদার্থ বিষয়ে যদি যথাসম্ভব জ্ঞান না থাকে প্রথম কয়েক সেমিস্টার পার হওয়াই তার জন্য অনেক কষ্টকর হয়ে যায়। নিয়মিত ক্লাস, ল্যাবের পাশাপাশি ক্লাসটেস্ট, মিডটার্ম পরীক্ষা, প্রচুর অ্যাসাইনমেন্ট, কেস স্টাডি বিশ্লেষণ, প্রেজেন্টেশন, প্রজেক্টের প্রেসার নেওয়ার মতো শারীরিক বা মানসিক সক্ষমতাও অনেকের থাকে না। তবে হয়তো তাদের জীবনটা অন্যরকম হতে পারত। তাই আমার প্রিয় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আমার উপদেশ থাকবেÑ যদি তোমার আগ্রহ থাকে টেকনোলজির এবং গণিতের প্রতি তবেই শুধু কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সিদ্ধান্ত নেবে, ঝোকে নয়।
কম্পিউটার প্রকৌশল আধুনিক জীবনের হাতিয়ার
আরও পড়ুন:
বৈষম্য ঘোচানোই সত্যিকার মানবিক অর্জন
মীর আমিনুল হক, প্রভাষক
কম্পিউটার প্রকৌশল অধ্যয়ন আজকের ডিজিটাল যুগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, এটি ব্যক্তিদের অত্যন্ত চাওয়া-পাওয়া দক্ষতার সঙ্গে সজ্জিত করে, সফটওয়্যার উন্নয়ন, ডেটা সায়েন্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং সাইবার নিরাপত্তার মতো বিভিন্ন শিল্পে কর্মজীবনের সুযোগ তৈরি করে। অধিকন্তু, কম্পিউটার বিজ্ঞান সমস্যা-সমাধান এবং সমালোচনামূলক চিন্তার ক্ষমতাকে উৎসাহিত করে, যা জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য অপরিহার্য। এটি সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে, ব্যক্তিদের সফ্টওয়্যার, অ্যাপ্লিকেশন এবং প্রযুক্তি তৈরি করতে ক্ষমতায়ন করে যা শিল্পগুলোকে রূপান্তরিত করতে পারে এবং জীবনকে উন্নত করতে পারে। কম্পিউটার সায়েন্স গ্র্যাজুয়েটরা প্রায়ই ফ্রিল্যান্সিং, রিমোট ওয়ার্ক এবং উদ্যোক্তার বিকল্পসহ একটি নমনীয় কাজের পরিবেশ উপভোগ করেন। এ ছাড়া কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করলে খুব সহজেই স্কলারশিপ নিয়ে বাইরের দেশে পড়াশোনা করার সুযোগ পাওয়া যায়, নিজেকে একজন রিসার্চার হিসেবে পরিচিত হওয়ার জন্যও রয়েছে অনেক ক্ষেত্র। বর্তমান চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে কম্পিউটার সায়েন্স এক
অনন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে অবদান রাখছে।
কম্পিউটার প্রকৌশলে কেন পড়ব?
মো. নাজমুছ ছাকিব, প্রভাষক
আরও পড়ুন:
ইবিতে শীতের আগমনী বার্তা
বর্তমান বাংলাদেশে ট্রেন্ডিং একটি সাবজেক্ট হলো সিএসই (কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং)। যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে সবাই একাধারে এই বিষয়টি নিয়ে পড়ছে বা পড়ার জন্য তৈরি হচ্ছে। আমাদের দেশের অধিকাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যান্য বিষয়ের তুলনায় কম্পিউটার প্রকৌশলের শিক্ষার্থী বেশি। কিন্তু আমাদের দেশ আইটিতে আক্ষরিক অর্থে উন্নয়ন করতে পারছে না। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হচ্ছে কলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের মতো আমাদের প্রকৌশল অনুষদের শিক্ষার্থীরাও আত্মস্থকরণের দিকে বেশি ঝুঁকছে। কিন্তু যে কোনো প্রকৌশল বিদ্যা তাত্ত্বিক জ্ঞানের সঙ্গে ব্যবহারিকের ওপর বেশি নির্ভরশীল হওয়া জরুরি। বর্তমান সময়ে এসে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। একজন শিক্ষার্থী যদি এই বিষয়ে খুব ভালোভাবে অধ্যয়ন করে মূল বিষয়সমূহকে ভালোভাবে আয়ত্ত করতে পারে তবে সে নিজের ব্যক্তিগত জীবনকে যেমন উন্নত করতে পারবে, তেমনি নিজের দেশের সমৃদ্ধিতে ও ভূমিকা রাখতে পারবে। বর্তমান সময়ে ব্যাংকিং, শিক্ষাদান, যোগাযোগমাধ্যম, ক্রয়-বিক্রয় থেকে শুরু করে সব কার্যক্রম আইটির মাধ্যমে চলছে। এ ছাড়া বর্তমান বিশ্বে অও (অৎঃরভরপরধষ ওহঃবষষরমবহপব), ওড়ঞ (ওহঃবৎহবঃ ড়ভ ঞযরহমং), ইষড়পশ পযধরহ, ঈৎুঢ়ঃড়মৎধঢ়যু, উধঃধ ঝপরবহপব, ঝবপঁৎরঃু এর চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে চলেছে। তাই যারা সদ্য কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি হচ্ছে তাদের প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে, তোমরা কম্পিউটারের এসব বিষয় ভালোভাবে আত্মস্থ করার চেষ্টা করবে। যে কোনো একটি বিষয়কে ভালোভাবে আত্মত্ম করো। সফলতা তোমার পদচুম্বন করবে। আশা করি তোমরা অনেক ভালো কিছু করবে। আমি তোমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।
সভ্যতার বিকাশে বিস্ময়কর আবিষ্কার হলো কম্পিউটার
সাদিয়া সাবরিনা, শিক্ষার্থী
শুরু থেকেই মানুষের কম্পিউটারের প্রতি আগ্রহ ছিল এবং আছে। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের কাছে সিএসই বিষয়টি সর্বোচ্চ প্রাধান্য পেয়ে থাকে। কেননা কম্পিউটার বিজ্ঞানের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন ধরনের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে থাকে যা বর্তমান প্রজন্মের জন্য একান্তই প্রয়োজনীয়। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশেও সিএসই বিষয়টি প্রথম সারিতে রয়েছে। চাহিদা ও সুযোগ থাকায় তরুণ প্রজন্মের পছন্দের বিষয় হয়ে উঠেছে। শিক্ষার্থীদের অধিক আগ্রহের প্রতি বিবেচনা করে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি একটি মানসম্মত স্বল্প খরচে সিএসই ডিপার্টমেন্টে অধ্যয়ন করার সুযোগ করে দিয়েছে শিক্ষার্থীদের এবং প্রতিবছর এই প্রতিষ্ঠান অসংখ্য প্রতিভাবান কম্পিউটার প্রকৌশলী গড়ে তুলতে বিশেষভাবে অবদান রেখে যাচ্ছে। তাই বর্তমান সময়ের চাহিদা অনুযায়ী নিজেকে একজন কম্পিউটার প্রকৌশলী হিসেবে গড়ে তুলতে বিকল্প নেই। এখানে আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ-সুবিধাও রয়েছে। তাই দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র শিক্ষার্থীরা বহির্বিশ্বে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিতে পারছে। কম্পিউটার প্রকৌশলী হিসেবে শিক্ষার্থীদের সব সাফল্যের প্রত্যক্ষ অংশীদার ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা সিএসই ডিপার্টমেন্টের সব শিক্ষার্থী চিরকৃতজ্ঞ।
বিভিন্ন জ্ঞান অর্জন ও তার প্রয়োগ ঘটাতে পারছি
আরও পড়ুন:
আগামীর পৃথিবী হবে নিপীড়িত মানুষের
মরিয়ম মীম, শিক্ষার্থী
বর্তমান পৃথিবী হয়ে গেছে অনেকটা লার্নিং বেসড। বর্তমান সময়ে যার কাছে যত বেশি ডেটা আছে সে সে তত বেশি সমৃদ্ধ এবং যে যত দ্রুত সময়ে ও সহজ উপায়ে সমস্যার সমাধান করতে পারেন তার চাহিদা অন্যদের চেয়ে বেশি। আর এসব কিছুর জন্য প্রয়োজন ভালো শিক্ষার পরিবেশ। আমাদের দেশে প্রতিবছর কয়েক হাজার প্রকৌশলী পাস করে বের হচ্ছে কিন্তু আমাদের দেশের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন কেন হচ্ছে না? কারণ আমরা লার্নিং বেসড শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তুলতে পারিনি। হাজারো প্রতিকূলতা কাটিয়ে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি আমাদের একটা শিক্ষার পরিবেশ দিয়েছে। যেখানে আমরা খুব ভালোভাবে কম্পিউটার রিলেটেড বিভিন্ন জ্ঞান অর্জন ও তার প্রয়োগ ঘটাতে পারছি। আগামীর বিশ্ব শাসন করবে ডাটা সায়েন্স। আর এই ডাটা সায়েন্সের নিয়ন্ত্রণ কম্পিউটার প্রকৌশলীদের হাতে। তাই আমি এ কথা বলতেই পারি যে, আগামীর বিশ্ব শাসন করবে কম্পিউটার প্রকৌশলীরা। নিজেকে বর্তমান সময়ের চাহিদা অনুযায়ী প্রস্তুত করতে ডিআইইউর বিকল্প নেই। কারণ লো-কস্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একমাত্র ডিআইইউ দিচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ-সুবিধা।
আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।