ভুরুঙ্গামারীতে দার্জিলিং কমলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে

মো. আব্দুল জলিল সরকার, ভুরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম)
১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
শেয়ার :
ভুরুঙ্গামারীতে দার্জিলিং কমলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে

সর্ব উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে চাষ হচ্ছে দার্জিলিং কমলা। এবার সমতল ভূমিতে বাণিজ্যিকভাবে দার্জিলিং কমলা চাষ করছেন মুক্তি নার্সারি অ্যান্ড অর্গানিক কমলা বাগানের মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী। তিনি কমলা চাষ করে সফলতাও পেয়েছেন। বাগানের সারিবদ্ধ প্রতিটা গাছে ধরেছে অসংখ্য কমলা। ভালো ফলন দেখে কমলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে দর্শনার্থীদের। প্রতিদিন বাগান দেখতে দূরদূরান্ত থেকে আসছেন দর্শনার্থীরা।

জানা গেছে, উদ্যোক্তা ফরমান আলী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাইকেরছড়া গ্রামের ২০২০ সালে নিজ উদ্যোগে দুই একর জমি নিয়ে শুরু করেন কমলার চাষ। তিনি বিগত দিনে চাকরির সুবাদে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে তার এ কমলা বাগান করার পরিকল্পনা মাথায় আসে। সে ভাবনা থেকেই তিনি খোঁজ নিয়ে বিভিন্ন নার্সারি যাচাই করে পরীক্ষিত দার্জিলিং, চায়না, আফ্রিকা ও পাকিস্তানি নব থাইসহ ছয়টি জাতের চারা গাছ সংগ্রহ করে রোপণ করেন। বর্তমানে তার বাগানে ৭৫০টি গাছে শোভা পাচ্ছে হলুদ ও সবুজ বর্ণের ছয় জাতের কমলা। পর্যায়ক্রমে এখন পরিপূর্ণ ফল পেতে শুরু করেছে গাছগুলোতে। এসব গাছ থেকে নার্সারিতে প্রস্তুত করা হয় দশ হাজার কমলার চারা। বাগানে প্রতিদিন ৭ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এক সময়ের সরকারি চাকরিজীবী হয়ে উঠেছেন সফল কমলা বাগানের উদ্যোক্তা।

সরেজমিন বাগান ঘুরে দেখা যায়, থোকায় থোকায় ঝুলছে মিষ্টি হলুদ রঙের কমলা। এ কমলা আকারে বড়, মিষ্টি, সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ক্রেতারা পাইকারি দরে কমলা কিনছেন এবং গাছের চারা সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন ছাদ বাগানসহ বাড়ির উঠানে বাগান করবেন বলে।

বাগান মালিক ফরমান আলী জানান, কমলা চাষ খুবই উপযোগী এবং বাণিজ্যিকভাবে এর চাষবাদ করা সম্ভব। মৌসুমি সবজি চাষ করে শেষ পর্যন্ত বাজারে এর ভালো দাম পাওয়া যায় না এবং অনেকেই লোকসানে পড়েন। কমলার ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো সমস্যায় পরতে হয় না, এর চাহিদা সবসময় বাজারে থাকে। বাগানের বয়স মাত্র তিন বছর হলেও ফলন ভালো হওয়ায় প্রতিবছর খরচ বাদে কমলা বাগান ও নার্সারি থেকে লাভবান হচ্ছেন তিনি। পাইকেরছড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সরকার বলেন, তার কাজের প্রশংসা করি এবং তাকে অনুসরণ করে এলাকার অনেকে বাগান করতে আগ্রহী হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার জানান, এখানে আবহাওয়া ও মাটি অনুকূলে থাকায় প্রচুর মাল্টা ও কমলার চাষ উপযোগী। এ উপজেলায় প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে মাল্টা ও কমলা জাতীয় ফলের চাষ হচ্ছে। দার্জিলিংয়ের এই সম্ভাবনাময় কমলার চাষ বাণিজ্যিকভাবে দেশের কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে দেশের কৃষক। অন্যদিকে পুষ্টি চাহিদা পূরণে বিরাট ভূমিকা রাখবে।