সঞ্চয়পত্র ও প্রাইজবন্ড বিক্রি সেবা বন্ধ হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:০৭
শেয়ার :
সঞ্চয়পত্র ও প্রাইজবন্ড বিক্রি সেবা বন্ধ হচ্ছে

সঞ্চয়পত্র ও প্রাইজবন্ড বিক্রিসহ পাঁচ ধরনের সেবা বন্ধ করে দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্য সেবার মধ্যে রয়েছে- গ্রাহক পর্যায়ে ছেঁড়া-ফাটা নোট বদল, সরকারি চালান সেবা এবং চালান সংক্রান্ত ভাংতি টাকা দেওয়া।

আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস এসব সেবা বন্ধ করে দেবে। পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগীয় অফিসেও এসব কার্যক্রম। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেবা বন্ধ করলেও বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখাগুলোয় এসব সেবা পাবেন গ্রাহক।

গংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেন নির্বিঘ্নে এসব সেবা দেয়, তা নিশ্চিত করতে তদারকি বাড়াবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গ্রাহকদের এসব বিষয়ে অবহিত করতে শিগগিরই প্রচারণা চালানো হবে। এরই মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়কে এসব সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑ গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর গত ২২ জুন মতিঝিল অফিসের ক্যাশ বিভাগ সরেজমিন পরিদর্শন করেন। ক্যাশ বিভাগ আধুনিকায়নে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সেই বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন। এরপর একটি কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কমিটির সুপারিশে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এর আগে গত ১৮ আগস্ট ও ২২ সেপ্টেম্বর করণীয় নির্ধারণে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা। সেখানে আলোচনা হয়, দুইজন গভর্নর এর আগেই গ্রাহক সংশ্লিষ্ট সব ধরনের সেবা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে ওই সময়ের প্রেক্ষাপটে শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা যায়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয়সহ বিভিন্ন শাখা কার্যালয় থেকে সঞ্চয়পত্র, প্রাইজবন্ড এবং কেনাবেচাসহ ১০ ধারার সেবা দেওয়া হয়। সরকারের ও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এসব সেবা দেওয়া হয়ে থাকে। বর্তমান মতিঝিল কার্যালয়ের ২৮টি কাউন্টারের মাধ্যমে এসব সেবা দেয়। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যালয় আধুনিকায়ন, উন্নত নিরাপত্তাব্যবস্থা-স্বয়ংক্রিয় ভল্ট স্থাপন এবং মূল ভবনের নিরাপত্তাব্যবস্থা উন্নতির জন্য সম্প্রতি কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব বাণিজ্যিক ব্যাংক, সঞ্চয় অধিদপ্তর ও পোস্ট অফিস থেকে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। আর সব ব্যাংক শাখায় প্রাইজবন্ড পাওয়া যায়। ব্যাংকগুলো ছেঁড়াফাটা নোট বদল ও অটোমেটেড চালান সেবাও দেয়। তবে ভোগান্তিমুক্ত সেবা ও আস্থার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকেই বেশি ভিড় করেন গ্রাহক। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, গ্রাহকদের ৩ লাখ ৪০ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র রয়েছে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশের বেশি রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে।

এদিকে গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসের সার্ভার জালিয়াতি করে ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়ে। আরও দুইজনের ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা শেষ সময়ে ধরা পড়ে। এ ঘটনায় মতিঝিল থানায় চারজনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। এরপর থেকে মতিঝিল অফিসের সঞ্চয়পত্র বিক্রি বন্ধ রয়েছে।