ইতালিকে শঙ্কায় ফেলে ২৮ বছর পর বিশ্বকাপে নরওয়ে
ইতালিকে তাদেরই ঘরের মাঠে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করে ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা পাকা করেছে নরওয়ে। ফলে টানা দুই বিশ্বকাপ মিস করা চারবারের চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে এবারও প্লে-অফে নামতে হচ্ছে।
বাছাইপর্ব সবগুলো জয়ে শেষ করেছে নরওয়ে-আট ম্যাচে আট জয়। ইতালির চেয়ে ছয় পয়েন্ট এগিয়ে থেকে তারা নিশ্চিত করেছে বিশ্বকাপের টিকিট। অন্যদিকে, টানা তৃতীয়বারের মতো প্লে-অফের কঠিন পরীক্ষায় নামতে হবে ইতালিকে।
৯ গোলের বিশাল ব্যবধানে জিতলেই কেবল সরাসরি বিশ্বকাপে যাওয়ার আশা ছিল ইতালির। তাই শুরু থেকেই আগ্রাসী খেলায় নেমে ১০ মিনিটের মাথায় ফ্রানচেসকো পিও এস্পোসিটোর গোলে লিডও পায় স্বাগতিকরা। প্রথমার্ধজুড়ে ইতালির দাপট থাকলেও নরওয়ের তেমন কোনো সুযোগ ছিল না।
তবে বিরতির পর যেন বদলে যায় ম্যাচের চিত্র। ৬৩ মিনিটে অ্যান্টোনিও নুসার গোল নরওয়েকে সমতায় ফেরায়। এরপর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় অতিথিদের হাতে।
৭৮ মিনিটে চরম ভুল করে আরলিং হলান্ডকে ফাঁকা জায়গায় রেখে দেয় ইতালি। সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুর্দান্ত ভলিতে দলকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন তিনি। মাত্র এক মিনিট পরই দ্বিতীয় গোল করে হলান্ড বাছাইয়ে নিজের গোলসংখ্যা নিয়ে যান ১৬-তে।
অতিরিক্ত সময়ে ইয়র্গেন স্ট্র্যান্ড লারসেনের গোল নরওয়ের ৪-১ জয় নিশ্চিত করে। দারুণ ফর্ম দেখিয়ে তারা জানিয়ে দিল যে আগামী বছরের বিশ্বকাপে তাদেরকে হালকাভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আবারও প্লে-অফের তিক্ত বাস্তবতায় ইতালি
খেলা শুরুর আগেই বাস্তবতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল-ইতালিকে আবারও প্লে-অফে নামতে হবে। এর আগে ২০২২ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে উত্তর মেসিডোনিয়ার কাছে এবং ২০১৮ সালে সুইডেনের বিপক্ষে প্লে-অফে হেরে বিশ্বকাপ মিস করে চারবারের চ্যাম্পিয়নরা।
ইতালি কোচ জেনারো গাত্তুসো বলেন, ‘আমরা সমাধান খুঁজে নেব। সেমিফাইনালে যেতে চাই, তারপর ফাইনাল এবং শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপে স্থান নিশ্চিত করতে চাই। ভক্তদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, ৪-১ ফলটা কঠিন।’
প্রথমার্ধে দুর্দান্ত খেলেও গোলের সামনে অদক্ষতায় ভুগেছে ইতালি। অন্যদিকে নরওয়ের হলান্ড আবারও প্রমাণ করেছেন কেন তাকে ‘গোল মেশিন’ বলা হয়।
২৮ বছরের অপেক্ষার অবসান-নরওয়ের স্বপ্ন পূরণ
প্রায় তিন দশক পর বিশ্বকাপে ফিরতে পেরে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি নরওয়ে অধিনায়ক মার্টিন ওডেগার্ড। তিনি বলেন, ‘এটা অবর্ণনীয়। আমরা বহু বছর ধরে এই স্বপ্ন দেখেছি। এত কষ্ট, এত ব্যর্থতার পর আজকের এই অর্জন সত্যিই অবিশ্বাস্য।’
ইনজুরির কারণে মাঠের বাইরে থাকলেও দলের সাফল্য তাকে আপ্লুত করেছে, ‘আমরা এত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে গেছি, তবুও বিশ্বাস হারাইনি। আজ সেই বিশ্বাসেরই পুরস্কার পেলাম। পারফেক্ট যোগ্যতা অর্জন—অবিশ্বাস্য!’