অর্থ সংকটে ভেনম রিসার্চ সেন্টার
চন্দ্রবোড়া বা রাসেলস ভাইপারের অ্যান্টিভেনম উৎপাদনে শতভাগ সাফল্য পেয়েছে দেশের একমাত্র সাপের বিষ গবেষণা প্রতিষ্ঠান-ভেনম রিসার্চ সেন্টার। কিন্তু এই সাফল্যের মধ্যেই ঘনিয়ে এসেছে ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা। টানা ১৬ মাস ধরে কোনো সরকারি বরাদ্দ না থাকায় প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে গবেষণা কার্যক্রম; ধার-দেনা করে কোনোভাবে চলছে ল্যাব পরিচালনা।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের পরিত্যক্ত একটি ভবনের নিচতলায় ২০১৮ সালের মার্চে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। শুরুতে যেখানে সাপ ছিল ৫৬টি, এখন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০০। দেশের একমাত্র সাপের বিষ গবেষণা কেন্দ্র হওয়ায় এখানেই চলছিল অ্যান্টিভেনম উৎপাদন, সাপ সংগ্রহ, লালন-পালন ও বিভিন্ন পরীক্ষামূলক গবেষণা।
গবেষকরা জানান, প্রতিষ্ঠানটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অপারেশনাল প্ল্যানের আওতায় পরিচালিত হতো। প্রতি বছর কর্মীদের বেতন, সাপের খাবার, যন্ত্রপাতি কেনা এবং গবেষণার সব খরচই আসত এই বাজেট থেকে। কিন্তু ২০২৪ সালের ৩০ জুনের পর অপারেশনাল প্ল্যান বন্ধ হয়ে গেলে তহবিল পুরোপুরি থেমে যায়। আগে বছরে ১ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ মিললেও বর্তমানে কোনো অর্থ নেই। ফলে প্রায় ১৫ জন গবেষক-কর্মীর বেতন, ল্যাবরেটরি সরঞ্জাম, প্রাণীঘর পরিচালনাসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলো মারাত্মক সংকটে পড়েছে।
আরও পড়ুন:
আকতার পারভেজ সর্বোচ্চ ভোটে সিএসই পরিচালক
তার ওপর জায়গার অভাব, যন্ত্রপাতির নষ্ট হয়ে থাকা এবং রক্ষণাবেক্ষণের অক্ষমতা গবেষণার পরিবেশকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। যেখানে নতুন প্রযুক্তি ও আধুনিক ল্যাব প্রয়োজন, সেখানে আর্থিক সংকট পুরো কার্যক্রমকে থামিয়ে দিচ্ছে।
সরকার ভেনম রিসার্চ সেন্টারকে পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে একটি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে আধুনিক ল্যাব, উন্নত প্রযুক্তি ও পর্যাপ্ত জায়গার মাধ্যমে গবেষণার পরিসর বাড়বে। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি কীভাবে টিকে থাকবেÑ সেই প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। বাধ্য হয়ে ধার-দেনার ওপর নির্ভর করেই চালাতে হচ্ছে কার্যক্রম।
আরও পড়ুন:
বৃহত্তম হিমশৈল
ভেনম রিসার্চ সেন্টারের সমন্বয়ক ও চমেক হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহ আবু সাঈদ বলেন, ১৬ মাস ধরে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কেউ এগিয়ে আসেনি। গবেষণার গতি থেমে গেছে। জায়গা পেয়েছি, কিন্তু বরাদ্দ না থাকায় ল্যাব বসাতে পারছি না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গবেষণা ও পরিকল্পনা শাখার পরিচালক আফরিনা মাহমুদ বলেন, অপারেশনাল প্ল্যান এখন বন্ধ। গবেষণা প্রকল্পটি এখনও রাজস্ব খাতে যায়নি। প্রশাসনিক অনুমোদন পেলেই সমস্যা সমাধান হবে। আমরা মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় চিঠি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।
আরও পড়ুন:
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম