হাসারাঙ্গার লড়াই থামিয়ে পাকিস্তানের রোমাঞ্চকর জয়
রাওয়ালপিন্ডিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার অলরাউন্ড নৈপুণ্য সত্ত্বেও পাকিস্তান ৬ রানের রোমাঞ্চকর জয় তুলে নিয়েছে। এর ফলে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।
৩০০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলংকা শুরুটা চমৎকার করেছিল। ওপেনিং জুটিতে আসে ৮৫ রান, কিন্তু মাঝের ওভারে দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যেতে থাকে অতিথিরা। মাঝের সারিতে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি।
শেষ দিকে ৫২ বলে ৫৯ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে আশা জাগান হাসারাঙ্গা। শেষ ১০ বলে ২১ রান দরকার থাকতেই তিনিও আউট হন। তবু শেষ ওভারে মাহিশ থিকশানার দুটি বাউন্ডারিতে শ্রীলংকার আশার আলো জ্বলে ওঠে, কিন্তু হুসাইন তালাত ঠাণ্ডা মাথায় শেষ ওভার সামলে পাকিস্তানকে জয় এনে দেন।
এ জয়ের ভিত গড়ে দেন সালমান আগা। তার দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরিতে ভর করে পাকিস্তান ধীরগতির শুরুর পরও ২৯৯ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায়। বল হাতে হারিস রউফ ছিলেন আগুনে- ১০ ওভারে ৬১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন তিনি। যদিও পাকিস্তানের বোলাররা ২৬টি ওয়াইড আর দুটি সহজ ক্যাচ মিস করে কিছুটা হতাশাও বয়ে আনেন।
শুরুতে শ্রীলংকার ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা ও অভিষিক্ত কামিল মিশারার ৮৫ রানের ঝড়ো জুটি পাকিস্তানের জন্য বিপদের বার্তা হয়ে এসেছিল। কিন্তু রউফের এক ওভারে মিশারা ও কুশল মেন্ডিসের পরপর দুই উইকেটে ম্যাচের গতি বদলে যায়। পরের ওভারে নিসাঙ্কাও উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ৮৫ রানে কোনো উইকেট না হারানো লঙ্কানরা হঠাৎই হয়ে যায় ৯০ রানে ৩।
এরপর চরিথ আসালাঙ্কা ও সদীরা সামারাবিক্রমা ৫৭ রানের জুটি গড়ে কিছুটা স্থিতি ফেরালেও শাহিন শাহ আফ্রিদির নিখুঁত বোলিং আর বাবর আজমের দুর্দান্ত ক্যাচে ভেঙে যায় সেই প্রতিরোধ। পরের দিকে জানিথ লিয়ানাগে দ্রুত রান তুললেও আসালাঙ্কার হঠকারী স্টাম্পিংয়ের পর আবারও ভেঙে পড়ে শ্রীলংকা।
শেষ দিকে একাই লড়াই করেন হাসারাঙ্গা। ২০২২ সালের নভেম্বরের পর প্রথম ওয়ানডে হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তিনি। বাবরের হাতে ধরা পড়ে তার ইনিংসের ইতি ঘটে।
এর আগে পাকিস্তান টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে। ২৪তম ওভারে ৯৫ রানে ৪ উইকেট হারানো অবস্থায় আগা ও তালাতের ১৩৮ রানের জুটি দলকে উদ্ধার করে। তালাত তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি। শেষ ১০ ওভারে পাকিস্তান যোগ করে আরও ১০৪ রান, আগা অপরাজিত থেকে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন।
শ্রীলংকার পক্ষে হাসারাঙ্গা নেন ৩ উইকেট, আসিথা ফার্নান্দো ও থিকশানা পান একটি করে উইকেট। তবে শুরুতে নো-বল ও ওয়াইডে ভরা বোলিং এবং পঞ্চম বোলার না থাকায় লিয়ানাগেকে আট ওভার বল করতে হওয়ায় চাপ বাড়ে লংকানদের ওপর।
শেষ পর্যন্ত আগার সেঞ্চুরি, রউফের আগুনে স্পেল এবং তালাতের ঠাণ্ডা মাথার বোলিংয়ে পাকিস্তানই হাসল শেষ পর্যন্ত-আর শ্রীলংকা পেছনে তাকিয়ে ভাবল, ‘কি হতো যদি...!’
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান ২৯৯/৫ (আগা ১০৫*, তালাত ৬২, নওয়াজ ৩৬*, হাসারাঙ্গা ৩-৫৪)
শ্রীলংকা ২৯৩/৯ (হাসারাঙ্গা ৫৯, সামারাবিক্রমা ৩৯, মিশারা ৩৮, রউফ ৪-৬১)।
পাকিস্তান ছয় রানে জয়ী