টেস্ট নেতৃত্বে ফিরে আসার গল্প শোনালেন শান্ত

স্পোর্টস ডেস্ক
১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৮:১০
শেয়ার :
টেস্ট নেতৃত্বে ফিরে আসার গল্প শোনালেন শান্ত

শ্রীলংকার বিপক্ষে গত জুলাইয়ে কলম্বোয় সর্বশেষ টেস্ট খেলেছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচেও দলের অধিনায়ক ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর প্রায় চার মাসের বিরতি শেষে আবারও টেস্টের নেতৃত্বে ফিরছেন তিনি-আগামীকাল সিলেটে শুরু হবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ, যেখানে নেতৃত্ব দেবেন শান্তই।

তবে এই ফিরে আসার পথটা মোটেও সরল ছিল না। শ্রীলংকা সিরিজ চলাকালীন সময়েই টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন শান্ত। কিন্তু আইরিশদের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তাকে আবার দায়িত্ব নেওয়ার অনুরোধ জানায়।

আজ সিলেটে সংবাদ সম্মেলনে সেই সময়ের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে শান্ত বলেন, ‘কত দিন যেন মাঝখানে অধিনায়ক ছিলাম না, ওই সময়টা রিল্যাক্স করেছি, উপভোগ করেছি। ভালো সময় কেটেছে।’

অধিনায়কত্ব ছাড়ার কারণ এবং ফিরে আসার পেছনের প্রেক্ষাপট নিয়েও খোলামেলা কথা বলেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট বোর্ড যেভাবে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, সবার সঙ্গে সুন্দর আলাপ হয়েছে। তখন মনে হয়েছে, আমি ব্যক্তিগতভাবে নাজমুল হোসেন যত বড়ই হই না কেন, বাংলাদেশের ক্রিকেট তার চেয়েও অনেক বড়। দলের প্রয়োজনই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’

নাজমুলকে রাজি করানোর দায়িত্ব ছিল বিসিবির সহসভাপতি ফারুক আহমেদ–এর ওপর। প্রায় এক ঘণ্টার আলোচনায় তাকে পূর্ণ স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। শান্ত বলেন, ‘বোর্ডে থাকা সাবেক ক্রিকেটাররা যখন পরামর্শ দেন, আমি সেটা খুবই শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করি। তাদের পরামর্শেই আমি বুঝেছি-ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের চেয়ে দেশের ক্রিকেটের স্বার্থই আগে।’

বোর্ডের সমর্থন নিয়ে আশাবাদী শান্ত জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে যেকোনো সমস্যা হলে বোর্ড তার পাশে থাকবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

‘যে যে সমস্যা হতে পারে, আমরা সবাই মিলে কীভাবে সামলে নিতে পারি, সেটা নিয়ে সবাই ইতিবাচক। আমি বিশ্বাস করি, বোর্ড আমাকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন দেবে।’

শ্রীলংকা সফরের সময় অধিনায়কত্ব ছাড়ার মূল কারণ ছিল তিন সংস্করণে তিন অধিনায়ক নীতির প্রতি তার আপত্তি। গত বছর তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন শান্ত। কিন্তু এ বছর শুরুতেই তিনি নিজে টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব ছাড়েন, পরে বিসিবি তাকে ওয়ানডের অধিনায়কত্ব থেকেও সরিয়ে দেয়।

এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েই টেস্ট নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। বর্তমানে বাংলাদেশের তিন সংস্করণের অধিনায়ক-নাজমুল হোসেন শান্ত (টেস্ট), লিটন দাস (টি-টোয়েন্টি) ও মেহেদী হাসান মিরাজ (ওয়ানডে)।

তবে এখন তিন অধিনায়কের নীতি নিয়ে শান্তর অবস্থান অনেকটাই নরম। তিনি বলেন, ‘আগে মনে হয়েছিল তিন সংস্করণে তিন অধিনায়ক সমস্যা তৈরি করবে, এবং সে ভাবনার পেছনে যুক্তিও ছিল। কিন্তু বোর্ডের সঙ্গে আলোচনায় আমরা এখন পরিষ্কার-সমস্যাগুলো যেন না হয়, সে বিষয়ে আমরা সবাই একমত। আমি আশাবাদী, এবার আর এমন কিছু হবে না।’

নাজমুল আরও জানান, বাকি দুই অধিনায়ক লিটন ও মিরাজের সঙ্গে তার সম্পর্কও দারুণ।

‘আমাদের বোঝাপড়া খুব ভালো। আমরা তিনজন বসে আলোচনা করেছি, কীভাবে তিন সংস্করণের দলকে এগিয়ে নেওয়া যায়। সবাই ইতিবাচক, সবাই চায় দলের সাফল্যই আগে আসুক। আমি বিশ্বাস করি, বোর্ড এবং সতীর্থদের সহযোগিতা পেলে আমরা একসঙ্গে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আরও এগিয়ে নিতে পারব।’