জোড়া গোল করে লাল কার্ড পেলেন দিয়াস, তবুও পিএসজিকে হারাল বায়ার্ন

স্পোর্টস ডেস্ক
০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৫
শেয়ার :
জোড়া গোল করে লাল কার্ড পেলেন দিয়াস, তবুও পিএসজিকে হারাল বায়ার্ন

লুইস দিয়াসের জোড়া গোল ও পরবর্তীতে তার লাল কার্ড-এই নাটকীয়তাতেই রঙিন হলো প্যারিসে এক মহারণ। মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়নস লিগের রোমাঞ্চকর ম্যাচে প্যারিস সেন্ট জার্মেইকে (পিএসজি) ২-১ গোলে হারিয়ে টানা জয় ধরে রাখল বায়ার্ন মিউনিখ।

পার্ক দে প্রিন্সে ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই কলম্বিয়ান উইঙ্গার দিয়াস বায়ার্নকে এগিয়ে নেন। এরপর ৩২তম মিনিটে পিএসজির রক্ষণভাগের ভুলে দ্বিতীয়বার জাল খুঁজে পান তিনি। কিন্তু প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে হাকিমির ওপর বেপরোয়া ট্যাকলে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় এই সাবেক লিভারপুল তারকাকে। চোট পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়েন হাকিমি।

এক খেলোয়াড় কম নিয়ে পুরো দ্বিতীয়ার্ধ খেলেও বায়ার্ন হারেনি লড়াইয়ের ধার। জোয়াও নেভেসের একমাত্র গোল সত্ত্বেও জার্মান জায়ান্টরা ২-১ ব্যবধানে জয় ধরে রাখে। হ্যারি কেইন যদিও এই ম্যাচে গোল পাননি, তবুও বায়ার্নের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রইল—সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এটাই তাদের টানা ১৬তম জয়।

চ্যাম্পিয়নস লিগে চার ম্যাচে পূর্ণ ১২ পয়েন্ট নিয়ে আর্সেনালের সঙ্গে শীর্ষে আছে তারা।

ম্যাচের সবচেয়ে উদ্বেগজনক মুহূর্ত আসে হাকিমির ইনজুরিতে। আগামী মাসে ঘরের মাঠে আফ্রিকা কাপ অব নেশন্সে মরক্কোকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা তার-এই চোট সেই পরিকল্পনায় বড় ধাক্কা হতে পারে।

এছাড়া ব্যালন ডি’অরজয়ী উসমান দেম্বেলেও প্রথমার্ধেই হ্যামস্ট্রিংয়ের সমস্যায় মাঠ ছাড়েন, মাত্র দুই মাসের মধ্যে এটি তার দ্বিতীয় ম্যাচ ছিল। গত মৌসুমে ইন্টার মিলানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা দলটি এখন পড়েছে ইনজুরির সংকটে; সেই ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় দেজিরে দুএ আগেই চোটের কারণে বাইরে।

তবে এই হারের পরও পিএসজির অবস্থান খুব একটা নড়বড়ে হয়নি—গ্রুপে তারা এখনও ভালো অবস্থানে আছে এবং নকআউট পর্বে ওঠার সম্ভাবনা জোরালো।

এই ম্যাচ ছিল আসলে জুলাইয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের পুনরাবৃত্তি, যেখানে ২-০ ব্যবধানে জিতেছিল পিএসজি। সেই পর থেকে বায়ার্ন আর কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ হারেনি।

চমকপ্রদ শুরুতেই গোল পায় বায়ার্ন—মাইকেল ওলিসের শট ফিরিয়ে দেন পিএসজি গোলকিপার লুকাস শেভালিয়ে, কিন্তু ফিরতি বলে তড়িৎগতিতে শট নিয়ে জাল খুঁজে পান দিয়াস।

পিএসজি প্রথমার্ধের মাঝামাঝি মনে করেছিল সমতা ফিরিয়েছে, যখন ডেম্বেলে ফাবিয়ান রুইজের শট বুক দিয়ে জালে পাঠান। কিন্তু সেটি অফসাইড ধরা পড়ে এবং পরে চোটে মাঠ ছাড়েন তিনি।

অর্ধঘণ্টার মাথায় দ্রুতগতির এক পাল্টা আক্রমণে মারকিনিয়োসের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে দ্বিতীয় গোল করেন দিয়াস।

হাফটাইমের ঠিক আগে হাকিমির ওপর তার বেপরোয়া ট্যাকলেই বদলে যায় ম্যাচের রং—প্রথমে হলুদ কার্ড দেখানো হলেও ভিএআরে দেখে সেটি লালে উন্নীত হয়। হাকিমির বাঁ-পায়ের গোড়ালিতে মচকানো সেই দৃশ্য ছিল বেদনাদায়ক।

দ্বিতীয়ার্ধে এক খেলোয়াড় বেশি নিয়েও পিএসজি খুব একটা সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। ৭৪তম মিনিটে বদলি খেলোয়াড় জোয়াও নেভেস লি কাং-ইনের ডিফ্লেক্টেড ক্রস থেকে কাছ থেকে গোল করেন। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে চাপ বাড়ালেও বায়ার্ন রক্ষণের দেয়াল ভাঙতে পারেনি স্বাগতিকরা।

১০ জনের দল নিয়েও বায়ার্ন মিউনিখ প্রমাণ করল—তাদের জয়যাত্রা থামানো এখনো কারও পক্ষে সহজ নয়।