মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদের ধুম
চলতি মাসের শুরুতে বৃষ্টির কারণে রাজবাড়ীতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদে কিছুটা দেরি হয়েছে। তবে এখন কৃষকরা পুরোদমে পেঁয়াজ চাষ শুরু করেছেন। মুড়িকাটা পেঁয়াজ বীজের দাম কিছুটা কম হলেও সার ও ওষুধের দাম বেশি হওয়ায় চিন্তিত চাষিরা। আর কৃষি বিভাগ বলছে, বীজের দাম কম হওয়ায় লাভবান হবেন কৃষক। সার নিয়ে কেউ যাতে নয়ছয় না করতে পারে, সে জন্য কড়া নজরদারি রয়েছে প্রশাসনের।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজবাড়ীর তথ্যমতে, রাজবাড়ীতে এ বছর ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, যার মধ্যে মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৫ হাজার ৭০০ হেক্টর। রাজবাড়ীতে মুড়িকাটা
পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার টন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে আরও জানা যায়, সারাদেশের পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয় অবস্থানের জেলা রাজবাড়ী। দেশের ১৪ শতাংশ পেঁয়াজ এ জেলায় উৎপাদন হয়। সাধারণত সেপ্টেম্বরের শেষ ও অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে মুড়িকাটা পেঁয়াজ লাগানো শুরু করেন চাষিরা। রোপণের নব্বই দিন পরই ঘরে তোলা যায় এ পেঁয়াজ। কিন্তু এ বছর বৃষ্টির কারণে মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণে অন্তত দুই সপ্তাহ পিছিয়েছে। যে কারণে এ পেঁয়াজ বাজারে আসবে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে।
আরও পড়ুন:
আকতার পারভেজ সর্বোচ্চ ভোটে সিএসই পরিচালক
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির কারণে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ কিছুটা দেরিতে হলেও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সার নিয়ে কেউ যাতে নয়ছয় করতে না পারে, সে জন্য সবসময় বাজার
তদারকি করা হচ্ছে।
এদিকে রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার হরিণবাড়িয়ার চর, সাদার চর, রতনদিয়ার চরাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, সেখানকার মাঠের পর মাঠ মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণে ব্যস্ত শত শত কৃষক।
এ সময় কৃষক হারু মোল্লা বলেন, এ মাসের শুরুতে বৃষ্টির কারণে মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণে দুই সপ্তাহ পিছিয়ে গেছি। যে পেঁয়াজটি বাজারে আশার কথা ছিল ডিসেম্বরের শুরুতে, সেটি আসবে ডিসেম্বরের শেষে। এ ছাড়া বাজারে সার ও ওষুধের দাম বেশি হওয়ায় আমরা কিছুটা চিন্তিত। তবে সরকার যদি কৃষকের কথা ভাবে, তাহলে দেশ কৃষিতে আরও এগিয়ে যাবে।
আরও পড়ুন:
বৃহত্তম হিমশৈল
কোরবান আলী নাকে এক কৃষক বলেন, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজ বীজের দাম কম, কিন্তু বেড়েছে সার ও কীটনাশকের দাম। এ বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণে বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা, যা গত বছরের তুলনায় অর্ধেক। আবার বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত। এমন দাম থাকলেও কৃষক লাভবান হবে।
হাচেন খাঁ নামে এক কৃষক বলেন, এ বছর বস্তাপ্রতি সারের দাম বেড়েছে ২০০ টাকা। সারের দাম একটু কম হলে কৃষকের ভালো হয়। আবার এ পেঁয়াজটা যখন উঠবে সরকার তখন পেঁয়াজ আমদানি করে। ওই সময় আমদানি বন্ধ করলে লাভবান হবেন কৃষক।
আরও পড়ুন:
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম