ব্রুক-সল্ট ঝড়ে নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে দিল ইংল্যান্ড
বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়া প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতার পর সতীর্থদের জন্য অধিনায়ক হ্যারি ব্রুকের বার্তা ছিল সহজ-‘পুরো ইনিংসে আক্রমণাত্মক থাকো’। কথা রেখেছেন তিনি নিজেই। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে তিনি ঝড় তুলেছেন ৩৫ বলে ৭৮ রানের ইনিংস খেলে। তার সঙ্গে ওপেনার ফিল সল্টের ৫৬ বলে ৮৫ রানের দারুণ ব্যাটিং মিলে ইংল্যান্ড গড়েছে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২৩৬ রান। হ্যাগলি ওভালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। এই পাহাড়সম লক্ষ্য নিউজিল্যান্ডের জন্য হয়ে ওঠে অনেক বড়।
এবারের পিচ ছিল দ্রুতগতির, বলও ব্যাটে সুন্দরভাবে আসছিল-সল্ট ইনিংস বিরতিতে সেটাই বলেছিলেন। মিচেল স্যান্টনার টস জিতে বোলিং নেওয়ার পর থেকেই বোঝা যাচ্ছিল ঝড় আসছে। ম্যাট হেনরির দ্বিতীয় বলেই মিড–উইকেটের ওপর দিয়ে ছক্কা, পরের বলেই চার—প্রথম ওভারেই ১১ রান নিয়ে শুরু করেন সল্ট।
জ্যাকব ডাফির পরের ওভারে তিনটি বাউন্ডারি আসে, তবে জস বাটলার মাত্র একটি মারতে পেরেই শর্ট বলে ক্যাচ দেন। এরপর সামান্য বিরতির পর জ্যাকব বেথেল ছন্দ পান দুটি বাউন্ডারিতে। ষষ্ঠ ওভারে স্যান্টনার স্পিনার মাইকেল ব্রেসওয়েলকে আনেন, কিন্তু সিদ্ধান্তটা ভয়াবহ ভুল প্রমাণিত হয়। সল্ট মারেন দুই চার, বেথেল টানা দুই ছক্কা—যদিও ওভারের শেষ বলে বেথেল (১২ বলে ২৪) আউট হন, ততক্ষণে পাওয়ারপ্লেতে ইংল্যান্ডের স্কোর ৬৮।
ব্রুক নামেন ফিল্ড ছড়িয়ে যাওয়ার পর এবং প্রথম কয়েক বল দেখে নিয়েই আগ্রাসন দেখান। নবম ওভারে স্যান্টনারকে মারেন একটি ছক্কা, একটি চার, আরেকটি ছক্কা—ওভারে ১৯ রান। প্রথম ম্যাচে যিনি তাকে ধোঁকা দিয়েছিলেন, সেই জেমস নিসামকেই এবার মারেন ২০ রান, তারপর ৩৯ রানে থাকা অবস্থায় হেনরির বলে নিসামই ক্যাচ ফেলেন লং–অনে। সুযোগটা কাজে লাগিয়ে ব্রুক আরও এক ছক্কা মারেন। তখন সল্ট ছিলেন ৪৪ বলে ৭০ রানে।
জেমিসনকে পরপর দুটি ছক্কা মেরে নিজের ইনিংস শেষ করেন ব্রুক—৩৫ বলে ৭৮ রান, ৫টি ছক্কা। শেষদিকে সল্টও (৫৬ বলে ৮৫) আউট হন, তবে টম ব্যানটনের ১২ বলে অপরাজিত ২৯ রানে ইংল্যান্ডের ইনিংস থামে ২৩৬ রানে।
জবাবে নেমে নিউজিল্যান্ড শুরুতেই ধাক্কা খায়। ব্রাইডন কার্স প্রথম ওভারেই টিম রবিনসন ও রাচিন রবীন্দ্রকে আউট করেন। যদিও মার্ক চ্যাপম্যান ও টিম সেইফার্ট মিলে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন—পাওয়ারপ্লেতে স্কোর ৬ ওভারে ৬০/২, ইংল্যান্ডের চেয়ে মাত্র ৮ রান পিছিয়ে।
কিন্তু এরপর ইনিংস থেমে যায়। পরের চার ওভারে মাত্র ৩০ রান আসে। লিয়াম ডসন দারুণ এক ওভারের পর চ্যাপম্যানকে লং–অনে ক্যাচ করান। এরপর আদিল রশিদ সেইফার্টকে (২৯ বলে ৩৯) আউট করেন, ডসন ফেরান ব্রেসওয়েলকে।
ড্যারিল মিচেল রশিদের বলে মিড উইকেটে ক্যাচ দিলে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস কার্যত শেষ। স্যান্টনার (১৮ বলে ৩৫) কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও রশিদ একই ওভারে তাকেও এবং নিসামকেও ফিরিয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত ১৮ ওভারে ১৭১ রানে গুটিয়ে যায় কিউইরা—৬৫ রানের বিশাল জয় পায় ইংল্যান্ড এবং সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে যায়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ২৩৬/৪ (ফিল সল্ট ৮৫, হ্যারি ব্রুক ৭৮; মিচেল স্যান্টনার ০–৪১)
নিউজিল্যান্ডকে ১৭১ রান (টিম সেইফার্ট ৩৯, মিচেল স্যান্টনার ৩৫; আদিল রশিদ ৪–৩২)
ফলাফল: ইংল্যান্ড জয়ী ৬৫ রানে, সিরিজে ১–০ তে এগিয়ে।