রেকর্ডবুক কাঁপানো রিশাদ বললেন, ‘এটা আমার কাজ’
বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে এতদিন কোনো স্পিনার ৬ উইকেট পাননি, এমনকি কোনো ডানহাতি স্পিনারের ৫ উইকেটও ছিল না। এক ম্যাচেই সেই দুটি অপূর্ণতা মুছে দিলেন রিশাদ হোসেন। মাত্র ২৩ বছর বয়সেই গড়লেন ইতিহাস, যা করতে পারেননি বিশ্বের বহু কিংবদন্তি স্পিনারও।
রিশাদের কাছে অবশ্য এই কীর্তি নিয়ে বাড়তি উচ্ছ্বাস নেই। ম্যাচ শেষে সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় তিনি শুধু বললেন,‘আলহামদুলিল্লাহ… আল্লাহ দিয়েছেন…।’
পুরো সংবাদ সম্মেলনজুড়ে এমনই ছিল রিশাদের মেপে বলা, সংযত প্রতিক্রিয়া। বল হাতে যেমন নিখুঁত ও প্রভাবশালী, কথায় তেমনই নীরব ও বিনয়ী তিনি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সেরা দিনে, রেকর্ডের ঝলকেও নিজেকে আগের মতোই শান্ত রেখেছেন এই তরুণ লেগ স্পিনার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক ছিলেন রিশাদ। ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন উইকেটে শেষ দিকে তার ১৩ বলে ২৬ রানের ইনিংস ছিল অমূল্য। এরপর বল হাতে তিনি যেন একাই ধস নামান—নেন বাংলাদেশের ইতিহাসে স্পিনারদের প্রথম ছয় উইকেট।
টি-টোয়েন্টি দলে নিয়মিত মুখ হলেও ওয়ানডেতে এখনও নতুন তিনি। এ ম্যাচের আগে মাত্র ১১ ওয়ানডে খেলে দুই উইকেটের বেশি পাননি কখনো। সেই তিনিই এবার নিজেকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে লিখে ফেললেন নতুন অধ্যায়।
তবুও রিশাদের মুখে বিনয়ী স্বর, ‘তেমন কিছু বলার নেই। এটা আমার কাজ, করতে হবে। আমি চেষ্টা করেছি সেরাটা দিতে। এটা নরম্যাল, আমার কাজ।’
মিরপুরের টার্নিং উইকেটে তাকে গুগলি বেশি করতে হয়নি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে, বিশেষ করে এশিয়া কাপ ও আফগানিস্তান সিরিজে, তার গুগলি নজর কাড়ে। গুগলি রপ্তিতে আরও উন্নতি করতে পারলে নিঃসন্দেহে তিনি হয়ে উঠবেন আরও ভয়ঙ্কর।
বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদ নিজেও গুগলির জন্য বিশ্বজোড়া খ্যাত ছিলেন। রিশাদের গুগলিতে তার প্রভাব আছে কি না—এমন প্রশ্নে রিশাদ বললেন, ‘কাজ করছি… তো সেটা ম্যাচে দেখবেন। এটা তো এখানে বলার কিছু নাই।’
রশিদ খানের সঙ্গে তার আলোচনার বিষয়েও খুব বেশি কিছু বলতে চাননি তিনি। আফগানিস্তান সিরিজের সময় প্রায় এক ঘণ্টা রাশিদের সঙ্গে কথা হয় তার, মুশতাক আহমেদের উপস্থিতিতে।
‘টেকনিক্যাল কিছু ব্যাপার ছিল, প্রসেস নিয়ে কথা বলেছি। একজন লেগ স্পিনারের সঙ্গে যেরকম আলোচনা হয়, তেমনই। সামনে কীভাবে এগোব, এসব নিয়েই কথা হয়েছে। ইনশাল্লাহ, সামনে দেখবেন।’
রিশাদের এই সংযম আর মনোযোগই যেন তার বড় শক্তি। তিনি জানেন—সব উত্তরই দিতে হবে ব্যাটে-বলে। মাঠেই কথা বললেই যথেষ্ট।