প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের ৮ কারখানা বন্ধ ঘোষণা

শ্রমিক অসন্তোষ

চট্টগ্রাম ব্যুরো
১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৪৯
শেয়ার :
প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের ৮ কারখানা বন্ধ ঘোষণা

চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড) এলাকায় প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের আটটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের দুপক্ষের সংঘর্ষ, কারখানায় হামলা ও কর্মপরিবেশ না থাকায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আজ শনিবার থেকে সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে কারখানাগুলো বন্ধের নোটিশ দেয় প্যাসিফিক কর্তৃপক্ষ।

কারখানাগুলো হলো- প্যাসিফিক জিন্স-১, প্যাসিফিক জিন্স-২, প্যাসিফিক অ্যাটায়ারস, প্যাসিফিক অ্যাক্সেসরিজ, প্যাসিফিক ওয়ারকওয়্যারস, ইউনিভারসেল জিন্স, এইচটি ফ্যাশন ও জিন্স ২০০০। প্যাসিফিক জিন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীরের সই করা পৃথক আটটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৪ অক্টোবর থেকে কিছু শ্রমিক বেআইনিভাবে কর্মবিরতি পালন করে। বারবার নির্দেশনা দেওয়ার পরও তারা কাজে ফেরেনি। বরং ১৫ ও ১৬ অক্টোবরও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে এবং নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালায়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শ্রমিকদের এ ধরনের আচরণ বেআইনি ধর্মঘট হিসেবে গণ্য হয়। এ অবস্থায় কারখানার কার্যক্রম চালু রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ায় কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গত ৯ অক্টোবর প্যাসিফিক গ্রুপের শ্রমিকরা পুলিশের হয়রানির অভিযোগে বিক্ষোভ করে। এরপর ১৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয় নতুন বিক্ষোভ। গত বৃহস্পতিবার ইপিজেডের বিভিন্ন সেক্টরে প্যাসিফিক গ্রুপের কারখানার সামনে বিক্ষোভ করে শ্রমিকরা। এ সময় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের ওপর হামলার অভিযোগও ওঠে। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ২২ দফা

দাবিতে প্যাসিফিক ক্যাজুয়াল লিমিটেডের শ্রমিকরা আন্দোলনে নামলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তখন দুটি ইউনিট বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষ। পরে শ্রমিকরা মুচলেকা দিয়ে কাজে যোগ দেয়।

প্যাসিফিক গ্রুপের চিফ অপারেটিং অফিসার সুহৃদ চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার শ্রমিক বিক্ষোভের পর সাময়িক ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে রাতে মালিকপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।

পুলিশ জানায়, শ্রম আইনে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী, বেআইনি ধর্মঘটের কারণে কোনো প্রতিষ্ঠানের মালিক চাইলে কারখানা বন্ধ করে দিতে পারবেন। যত দিন বন্ধ থাকবে, শ্রমিকরা তত দিন কোনো বেতন পাবেন না। শ্রমিকদের সংঘর্ষ ঘিরেই কারখানাটি বন্ধ হয়ে গেছে। আট কারখানায় মোট শ্রমিক ৩৫ হাজারের বেশি।

চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, আমরা কারখানা বন্ধের চিঠি পেয়েছি। কারখানায় শ্রমিকদের মধ্যে কিছু অভ্যন্তরীণ ঝামেলা আছে। বাইরে থেকে শ্রমিকদের কোনো ইন্ধন দেওয়া হচ্ছে কি না, সেটি তদন্ত করা হচ্ছে।