মেরিনোর জোড়া গোলে স্পেনের শতভাগ জয়

স্পোর্টস ডেস্ক
১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১৬
শেয়ার :
মেরিনোর জোড়া গোলে স্পেনের শতভাগ জয়

স্পেনের জয়ের নায়ক মিকেল মেরিনো-তার দুটি দারুণ হেডে করা গোলের মাধ্যমে লা রোহারা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বুলগেরিয়াকে ৪–০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে। এস্তাদিও মিউনিসিপাল হোসে যোরিয়ায় অভিষিক্ত আতানাস চেরনেভের আত্মঘাতী গোলেই কার্যত ম্যাচের ফল নিশ্চিত হয়ে যায়, আর ইনজুরি টাইমে মিকেল ওইয়ারজাবাল পেনাল্টি থেকে গোল করে জয়ের ব্যবধান পূর্ণতা দেন।

এই জয়ে স্পেন ছুঁয়ে ফেলেছে ইতিহাস-টানা ২৯টি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে অপরাজিত থেকে তারা সমান করেছে তাদের বিশ্বকাপজয়ী প্রজন্মের রেকর্ড।

ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন স্পেন এই ম্যাচে শতভাগ জয়ের রেকর্ড নিয়ে নামে, আর শুরু থেকেই তার প্রমাণও মেলে। প্রথম বাঁশি বাজার পর থেকেই স্পেন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। বার্সেলোনার তরুণ মিডফিল্ডার পেদ্রি ছিলেন দলের আক্রমণের মূল কেন্দ্রবিন্দু, যিনি একের পর এক পাসে বুলগেরিয়ার ডিফেন্স ছিন্নভিন্ন করে দেন।

২২ বছর বয়সী পেদ্রি দু’বার অ্যালেক্স বাইয়েনাকে দুর্দান্ত পাসে খুঁজে নেন-প্রথমবারের শটটি ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যায়, আর দ্বিতীয়বার তিনি তরুণ স্ট্রাইকার সামু আগেহোয়াকে সুযোগ করে দেন। কিন্তু বুলগেরিয়ান গোলরক্ষক সভেতোস্লাভ ভুতসোভ দারুণ সেভ করে বল ফিরিয়ে দেন। এরপরও আগেহোয়া আরেকবার ভালো শট নেন, কিন্তু ভুতসোভ সেটিও ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠিয়ে দেন।

পেদ্রি নিজেও গোলের চেষ্টা চালান-গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বল চিপ করেন, কিন্তু তা ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। এরপর আরেকটি শটে বল সামান্য বাইরে চলে যায়, যেন বুলগেরিয়ার গোলপোস্ট ছিল সৌভাগ্যের প্রাচীরের মতো।

অবশেষে ৩৫তম মিনিটে স্পেন গোলের দেখা পায়। আর্সেনাল মিডফিল্ডার মেরিনো হেডে গোল করে সেই বন্ধ দরজা খুলে দেন। রোবিন লে নরমান্দের মাথা থেকে আসা বলটি নিখুঁতভাবে জালে পাঠান তিনি। পেদ্রিরই এক টাচে তোলা পাস থেকে তৈরি হয়েছিল সুযোগটি। কঠিন অবস্থান থেকে মেরিনোর হেডে বল জালে জোরে আঘাত করে-একদম নিখুঁত ফিনিশিং।

গোল করার পর মেরিনো আবারও নায়কের ভূমিকায় আসতে পারতেন-ভুতসোভের এক ভুল পাস কেটে নিয়ে আগেহোয়াকে সুযোগ করে দেন, কিন্তু ২১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড ভারসাম্য হারিয়ে বল বাইরে পাঠান।

প্রথমার্ধে স্পেনের ১৮টি শটের বিপরীতে বুলগেরিয়ার ছিল মাত্র একটি সুযোগ-সেটিও গোলপোস্টের বাইরে চলে যায়, কিরিল দেসপোদভের পায়ের শটে।

দ্বিতীয়ার্ধেও দৃশ্যপট বদলায়নি। বিরতির পর আগেহোয়ার জায়গায় নামা সেল্তা ভিগোর বরহা ইগলেসিয়াসও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি-একবার ফাঁকা হেডে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেও বল বাইরে পাঠান।

এরপর আবারও দায়িত্ব নেন মিকেল মেরিনো। এবার আলেক্স গ্রিমালদোর বাম দিক থেকে তোলা ক্রসে দুর্দান্ত হেডে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন। ভুতসোভ হাত ছোঁয়ালেও বলের শক্তিতে সেটি জালে ঢুকে যায়। ঘণ্টা পেরোতেই ম্যাচের ফল নির্ধারিত হয়ে যায়।

শেষদিকে বুলগেরিয়ার দুর্ভাগ্য চূড়ান্ত রূপ নেয়-চেরনেভের আত্মঘাতী গোলে ব্যবধান বাড়ে, আর ইনজুরি টাইমে মিকেল ওইয়ারজাবাল পেনাল্টি থেকে গোল করে ৪–০ জয় নিশ্চিত করেন।

দাপুটে এই জয়ে স্পেন শুধু বিশ্বকাপের আরও কাছাকাছি গেল না, বরং নিজেদের সোনালি যুগের স্মৃতি ফিরিয়ে আনল।