রাকসু নির্বাচনে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় এগিয়ে যারা

রাবি প্রতিনিধি
১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
রাকসু নির্বাচনে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় এগিয়ে যারা

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন ঘিরে পুরো ক্যাম্পাসে বইছে উৎসবের আমেজ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রার্থীদের প্রচারে মুখর একাডেমিক ভবন, আবাসিক হল ও শিক্ষার্থীদের আড্ডাস্থল। পাশাপাশি অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও চলছে জোর প্রচার।আগামীকাল মঙ্গলবার রাত ১২টায় প্রচারণার সময়সীমা শেষ হবে। তাই প্রার্থীরা এখন শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

নির্বাচনী প্রচারণায় কোন প্যানেল বা কারা এগিয়ে আছে. তা কলা মুশকিল। ঢাকসু ও জাকসুতে অনেকটা অপ্রত্যাশিত ফলাফলে রাকসু নির্বাচনে সব ছাত্র-সংগঠনই ভীষণ সিরিয়াস। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কোনো অংশে পিছিয়ে নেই প্রচারষায়। বলা যেতে পারে, কেউ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান।


আগামী ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় রাকসু নির্বাচনে ১১টি প্যানেল ও স্বতন্ত্র পদে মোট ৯০০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিয়েছে। ছাত্র শিবির চাইছে, ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে। আর ছাত্রদল চাইছে, দেশের দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনে অনাকাঙ্খিত ভরাডুবি মুছে ফেলে হৃতগৌরব ফিরিয়ে আনতে।  আবার স্বতন্ত্র প্রাথীরা বলছেন, এখন সময় এসেছে দলীয় লেজুড়বৃক্কিব চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে আসার।

ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, টুকিটাকি চত্বর, প্যারিস রোড, আমতলা কিংবা পরিবহন মার্কেটসহ যেখানেই শিক্ষার্থীদের ভিড়Ñ সেখানেই হাজির হচ্ছেন বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা। কেউ লিফলেট ও হ্যান্ডবিল বিলি করছেন। কেউবা দলবদ্ধভাবে কুশল বিনিময় করছেন। শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতি ও প্রার্থীদের প্রচারে জমে উঠেছে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া। 


শিক্ষার্থীরা বলছেন, রাকসু নির্বাচন কেবল নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রক্রিয়াই নয়, বরং নিজেদের মতামত ও অধিকার প্রকাশেরও গুরুত্বপূর্ণ একটি মঞ্চ। স্বতন্ত্র ভিপি পদপ্রার্থী বিল্লাহ হোসেন বলেন, রাকসু পুনর্জাগরণে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা অনেক। সেই প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটাতে চাই। স্বতন্ত্র এজিএস পদপ্রার্থী শাহ্ পরাণ লিখন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের স্বার্থে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার অঙ্গীকার নিয়েই নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।’ মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক পদপ্রার্থী (স্বতন্ত্র) মীর কাদির বলেন, ‘৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত এ নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস সত্যিই অনন্য। আমরা চাই একটি অংশগ্রহণমূলক, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন।’ 


সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের সহ মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক পদপ্রার্থী মুনান হাওলাদার বলেন, প্রচার বেশ প্রাণবন্তভাবে চলছে। শিক্ষার্থীরা আগ্রহ নিয়ে মতামত দিচ্ছেনÑ এটা ইতিবাচক দিক। সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের সহ নারী বিষয়ক সম্পাদক পদপ্রার্থী নাদিয়া হক মিথি বলেন, এবারের নির্বাচনে মেয়েদের অংশগ্রহণ দৃশ্যমানভাবে বেড়েছে। আমরা চাই, রাকসুতে নারী প্রতিনিধিত্ব আরও শক্তিশালী হোক। আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ পাভেল বলেন, অনেক দিন পর এমন উচ্ছ্বাস দেখছি। সবাই চায় রাকসু আবার শিক্ষার্থীদের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠুক। বিজনেস অনুষদের শিক্ষার্থী চৈতী আহমেদ বলেন, প্রচার প্রাণবন্ত হলেও আমরা চাই নির্বাচনের দিনটি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হোক।

উল্লেখ্য, এবার রাকসু নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ২৮ হাজার ৯০৫ জন। এর মধ্যে ছেলেদের ১১টি হলে ১৭ হাজার ৬০০ এবং মেয়েদের ৬টি হলে ১১ হাজার ৩০৫ জন শিক্ষার্থী ভোটাধিকার পপ্রয়োগ করবেন।