শেষ সময়ের গোলে পর্তুগালের রোমাঞ্চকর জয়
রুবেন নেভেস শেষ মুহূর্তে গোল করে পর্তুগালকে রক্ষা করেছেন। রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ইনজুরি টাইমে তারই একমাত্র গোলে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ১-০ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে পর্তুগিজরা। এর আগে আবশ্য ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো পেনাল্টি মিস করেছেন।
২০২১ সালের মতোই এবারও শেষ দিকে নাটকীয়ভাবে জয় পেয়েছে পর্তুগাল। ইনজুরি টাইমের প্রথম মিনিটে নেভেসের হেডে আসে নির্ধারক গোল, চার বছর আগে যেমন রোনালদো শেষ মুহূর্তে দুটি গোল করে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়েছিলেন।
হেইমির হালগ্রিমসনের দল (আয়ারল্যান্ড) মনে হচ্ছিল লিসবনের জোসে আলভালাদে স্টেডিয়াম থেকে একটি কঠিন লড়াইয়ের পর ড্র নিয়েই ফিরবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের খালি হাতে ফিরতে হয়েছে, যদিও দলের পারফরম্যান্স কিছুটা হলেও গত মাসে আর্মেনিয়ার বিপক্ষে পরাজয়ের ক্ষত মুছে দিয়েছে।
তবুও এই পরাজয়ে তারা কঠিন অবস্থায় পড়েছে—গ্রুপ ‘এফ’-এর প্রথম তিন ম্যাচে মাত্র এক পয়েন্ট তাদের প্লে-অফের আশা প্রায় নিভিয়ে দিয়েছে।
মঙ্গলবার ডাবলিনে আর্মেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে জয় পেতেই হবে, বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ মিডফিল্ডার জশ কুলেন নিষিদ্ধ থাকায় তাদের কাজ আরও কঠিন হয়ে যাবে।
প্রথম দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষের কাছে দুটি করে গোল খাওয়ার পর হালগ্রিমসন এবার রক্ষণাত্মক কৌশল নিয়েছিলেন—৫-৪-১ ফরমেশনে দল সাজিয়ে প্রতিপক্ষকে আটকে রাখার পরিকল্পনা ছিল তার।
সাত মিনিটের মাথায় নেভেসের ক্রসে নুনো মেন্ডেসের শক্তিশালী ভলি কেলেহারের গোলে অল্পের জন্য বাইরে যায়। দুই মিনিট পর ব্রুনো ফার্নান্দেজও ডান পায়ে একটি শট নেন, যা পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।
রোনালদো যখন নিজে জায়গা বানিয়ে শট নেন, তখন কেলেহারকে বাঁচায় পোস্ট—বলটি এমন জোরে ফিরে আসে যে, বার্নার্দো সিলভা ফাঁকা জালে রিবাউন্ড পাঠাতে ব্যর্থ হন।
২১ মিনিটে দিওগো জোটার স্মরণে পুরো স্টেডিয়াম করতালিতে মুখর হয়। ঠিক তখনই আয়ারল্যান্ড ম্যাচে কিছুটা ছন্দ ফিরে পায়। ফেস্টি এবোসেলের দারুণ দৌড়ে তৈরি করা ক্রস থেকে জেসন মোলামবি দূর থেকে একটি শট নেন, যা ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যায়।
৩৮ মিনিটে ভিটিনহার শট ডিফেন্ডার জেক ও’ব্রায়েনের গায়ে লেগে লুপ করলে কেলেহারকে পিছিয়ে গিয়ে তা ঠেকাতে হয়। এরপর গনসালো ইনাসিওর হেডও তিনি দারুণভাবে বাঁচান। বিরতির আগ মুহূর্তে ফার্নান্দেজের আরেকটি দূরপাল্লার শটও তিনি ধরে ফেলেন।
বিরতির পর রোনালদো একাই আক্রমণে নামেন—দুটি সুযোগ পেলেও দুটিই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ভিটিনহাও আধা সুযোগ পেয়ে বাইরে পাঠান।
মাঠে অস্বস্তির ছাপ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। রোনালদো তখন কেলেহারকে ব্যঙ্গাত্মকভাবে তাড়াতাড়ি গোলকিক নিতে উৎসাহ দেন, করতালি দিয়ে মেজাজ দেখান।
ঘণ্টা পার হওয়ার সময় নেভেস দারুণ এক দৌড়ে এগিয়ে গিয়ে শট নেন, কিন্তু কেলেহার সেটিও বাঁচান। কিছুক্ষণ পর ফার্নান্দেজের পাসে ভিটিনহার শটও তার গ্লাভসে থামে।
৭১ মিনিটে বদলি হিসেবে নামা নেলসন সেমেদোর ক্রস থেকে রোনালদোর শট অল্পের জন্য বাইরে যায়। আর ১৫ মিনিট বাকি থাকতে যখন স্লোভাক রেফারি ইভান ক্রুজলিয়াক ফ্রান্সিসকো ট্রিনকাওয়ের শট ডারা ও’শিয়ার হাতে লাগায় পেনাল্টি দেন, তখন কেলেহার অবিশ্বাস্যভাবে রোনালদোর স্পট-কিক ঠেকিয়ে দেন, পা বাড়িয়ে বল বাঁচিয়ে নেন।
তবে ইনজুরি টাইমের প্রথম মিনিটেই আসে ম্যাচের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত—ট্রিনকাওয়ের ক্রসে নেভেস দুর্দান্ত হেডে কেলেহারকে পরাস্ত করেন, আর সেই গোলেই পর্তুগালের জয় নিশ্চিত হয়।