জাকেরের নেতৃত্বে আফগান মিশনে নামছে বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক
০২ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:৪৪
শেয়ার :
জাকেরের নেতৃত্বে আফগান মিশনে নামছে বাংলাদেশ

এশিয়া কাপ শেষ হলেও সংযুক্ত আরব আমিরাত ছাড়েনি বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সীমিত ওভারের সিরিজে খেলবে টাইগাররা। যেখানে আজ বৃহস্পতিবার শারজায় বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি মুখোমুখি হবে দুদল।

সাইড স্ট্রেইন ইনজুরির কারণে সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন লিটন দাস। তার পরিবর্তে নেতৃত্বের দায়িত্ব পেয়েছেন জাকের আলি। এর আগে এশিয়া কাপে লিটনের অনুপস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জাকের, তবে দল হেরেছিল দুই ম্যাচেই।

যদিও এশিয়া কাপের আগে জাকের কখনো কোনো পর্যায়ে, হোক তা ঘরোয়া ক্রিকেট বা অনূর্ধ্ব-১৯-এ নেতৃত্ব দেননি। সেই দুই ম্যাচে তার ব্যাটিং পারফরম্যান্সও ছিল হতাশাজনক, যথাক্রমে মাত্র ৪ ও ৫ রান।

বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলে নেতৃত্ব সংকট স্পষ্ট। মে মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত সিরিজের পর মাহেদি হাসানকে সহ-অধিনায়ক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর থেকে এই সংকট আরও প্রকট হয়েছে। সিনিয়র পেসার তাসকিন আহমেদ নেতৃত্বের বিকল্প হতে পারতেন, তবে ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের কারণে সম্ভবত তাকে বিবেচনা করা হয়নি। এখন দেখার বিষয়, জাকের কীভাবে নেতৃত্ব, উইকেটকিপিং ও ব্যাটিং—তিন দায়িত্ব সামলান আফগানিস্তানের বিপক্ষে। প্রয়োজনে নুরুল হাসানের হাতে কিপিং গ্লাভস তুলে দিয়ে চাপ কমাতে পারে দল।

বাংলাদেশ এখন বুঝতে শুরু করেছে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ছক্কার গুরুত্ব কতটা। তবে কখনো কখনো অতিরিক্ত ঝুঁকি নিচ্ছে তারা। পাকিস্তানের বিপক্ষে এশিয়া কাপে ফাইনালে ওঠার ম্যাচে বারবার ছক্কা মারতে গিয়ে ফিল্ডারদের হাতে ধরা পড়েছিল ব্যাটাররা। দুবাইয়ের উইকেট সে ধরনের ব্যাটিংয়ের অনুকূল ছিল না। তবে শ্রীলংকার বিপক্ষে ১৬৯ রান তাড়া করে জেতার সময় তারা সঠিক ভারসাম্য খুঁজে পেয়েছিল। সাইফ হাসান ও তৌহিদ হৃদয় অর্ধশতক করেছিলেন সেই ম্যাচে। বাংলাদেশ সাধারণত দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ভালো খেলে এবং সাম্প্রতিক এশিয়া কাপেও আফগানিস্তানকে হারিয়েছে।

এদিকে এশিয়া কাপে সুপার ফোরে উঠতে ব্যর্থ হওয়ার পর আফগানিস্তান দলে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। গুলবাদিন নাইব, করিম জানাত ও ফজল হক ফারুকিকে বাদ দিয়েছে তারা টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে দুই ফরম্যাট থেকেই। জানাত এ বছর আট ইনিংসে করেছেন মাত্র ৬৮ রান, বল হাতেও ছিলেন অকার্যকর। নাইবও ধীরে ধীরে দল থেকে পিছিয়ে যাচ্ছেন। রহস্যময় স্পিনার গজনফর মূল দলে জায়গা পাননি, তবে রিজার্ভ হিসেবে রাখা হয়েছে তাকে। তবে ওয়ানডে দলে রয়েছেন তিনি।

এবার নজর থাকবে নতুন দুই মুখের ওপর—ওয়াফিউল্লাহ তারাখিল ও বশির আহমদ। বশির লম্বা গড়নের বামহাতি পেসার, যিনি ফারুকির বিকল্প হতে পারেন। আর তারাখিল পেয়েছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত ফর্মের পুরস্কার। ২০২৫ সালের শাপাগিজা ক্রিকেট লিগে তিনি তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন—নয় ইনিংসে ২৯৮ রান, গড়ে ৩৭.২৫ এবং স্ট্রাইক রেট ১৫৫.২০।

যদিও দলে পরিবর্তন এসেছে, আফগানিস্তান এখনও স্পিন বোলিং শক্তিতে সমৃদ্ধ। রশিদ খান আছেন আক্রমণের নেতৃত্বে। অন্যদিকে বাংলাদেশ শিবিরে উদীয়মান লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন নতুন মাত্রা যোগ করেছেন। তবে ২০২০ সালের পর থেকে আফগানিস্তানের স্পিনাররা গড়, ইকোনমি ও স্ট্রাইক রেটে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে। তাই দুই দলের স্পিন আক্রমণের দ্বন্দ্ব হতে পারে দেখার মতো।

শারজাতে আফগানিস্তানের রেকর্ডও দারুণ। এখানে তারা খেলেছে ৩০টি টি-টোয়েন্টি, জিতেছে ২০টিতেই। প্রথমে ব্যাটিং করে শারজাহতে জিতেছে ১৮ ম্যাচের মধ্যে ১৪টিতেই, সর্বশেষ ছয়বার প্রথমে ব্যাট করে সব ম্যাচেই জয় পেয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ শারজাতে খেলেছে ছয় ম্যাচ, জিতেছে মাত্র একটি। চরম গরমও খেলোয়াড়দের জন্য বড় পরীক্ষা হয়ে উঠবে।