সাবেক অধিনায়ক দুর্জয়কে কাঠগড়ায় দেখে কাঁদলেন স্ত্রী
মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ও ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয়কে দুর্নীতির মামলায় আজ রবিবার কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাকে কাঠগড়ায় দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্ত্রী ফারহানা রহমান হ্যাপি।
আজ দুপুরের দিকে ঢাকা মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে এদৃশ্য দেখা যায়। দুর্জয়কে দেখতে সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে অপেক্ষায় থাকেন স্ত্রী ও বোন।
আজ কারাগার থেকে দুর্জয়কে মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। দুর্জয়ের আইনজীবী লতিফুর রহমান তাকে এজলাসে তোলার আবেদন জানান। পরে আদালত দুর্জয়কে এজলাসে তোলার আদেশ দেন।
আরও পড়ুন:
১১ বছরেও বিচারে অগ্রগতি নেই
বেলা ১২টার দিকে দুর্জয়কে আদালতে তোলা হয়। এ সময় তার মাথায় হেলমেট, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হাতে হাতকড়া ছিল। কাঠগড়ায় নেওয়ার পর তার হেলমেট, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট এবং হাতকড়া খুলে ফেলা হয়। আদালতে অবস্থান করা দুর্জয়ের স্ত্রী ও বোন কাঠগড়ার কাছে এগিয়ে যান। দুর্জয়ও একটু এগিয়ে আসেন। তারা কথা বলতে থাকেন। এ সময় স্বামীকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন ফারহানা রহমান হ্যাপি। ভাইয়ের হাতে চুমু খান বোন। মিনিট দুয়েক কথা বলার পর পুলিশ সদস্যরা তাদের সরে যেতে বলেন। পরে তারা সেখানে থেকে সরে যান।
দুর্জয় কাঠগড়ায় আসামিদের জন্য রাখা বেঞ্চে গিয়ে বসেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মামলার শুনানি হয়। দুর্জয়ের আইনজীবী মামলা সংক্রান্তে একান্তে কথা বলা অনুমতি চান। আদালত কারাবিধি অনুযায়ী তাকে দুর্জয়ের সঙ্গে আইনজীবীকে কথা বলার আদেশ দেন। এরপর কারাগারে নেওয়ার জন্য দুর্জয়কে প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। প্রিজনভ্যানে দাঁড়িয়ে হাতের ইশারায় স্ত্রী এবং বোনকে বিদায় জানান তিনি।
অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে মোট ১১ কোটি ২১ লাখ ৮১ হাজার ৭৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর দুদকের পরিচালক আবুল হাসনাত বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় গত ২৯ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, নাঈমুর রহমান দুর্জয় অপরাধমূলক অসদাচরণ করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে মানিকগঞ্জ পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড থেকে ৪ কোটি ২২ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। এ ছাড়া তার নিজের নামে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে মোট ৪৭ কোটি ১৯ লাখ ৩৭ হাজার ৬৯০ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৩ জুলাই রাতে ঢাকার লালমাটিয়া এলাকা থেকে দুর্জয়কে গ্রেপ্তার করে মানিকগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।