১১ বছরেও বিচারে অগ্রগতি নেই

তাজরীনে অগ্নিকাণ্ডে ১১১ শ্রমিকের মৃত্যু

রহমান জাহিদ
২৫ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
শেয়ার :
১১ বছরেও বিচারে অগ্রগতি নেই

তাজরীন গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ডে ১১১ শ্রমিক নিহত হওয়ার মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী হাজির করতে না পারায় থমকে আছে বিচারকাজ। ফলে গত ১১ বছরেও এ মামলার বিচার শেষ হয়নি। ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর ঢাকার আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত হন ১০৪ জন শ্রমিক।

২০১৫ সালে মামলাটির বিচার শুরুর পর প্রথম ২ বছরের মধ্যে ৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। এরপর ২০১৮ ও ২০২০ সালে কোনো সাক্ষী হাজির করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। মাঝে ২০১৯ সালের ৭ মার্চ ১ জন ও পরের ২ বছরে আরও ৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করতে করেন আদালত। এ নিয়ে ১০৪ জন সাক্ষীর এ মামলায় গত ৮ বছরে মাত্র ১১ জন সাক্ষ্যগ্রহণ করতে পেরেছেন আদালত। তাই এ মামলার নিষ্পত্তি কবে নাগাদ শেষ হবে তা কেউ বলতে পারছেন না।

এ প্রসঙ্গে ওই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর একেএম শাহ নেওয়াজ বলেন, চার্জশিটে প্রদত্ত সাক্ষীদের ঠিকানায় সমন ও ওয়ারেন্ট পাঠানো হলেও পুলিশ তাদের না পাওয়ায় হাজির করা যাচ্ছে না। তাই বিচার বিলম্ব হচ্ছে। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী না আনতে পারায় আসামিরাও হয়রানির শিকার

হচ্ছেন। তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সময় অপচয় হচ্ছে। আমরাও চাই দ্রুত বিচার সম্পন্ন হোক।

মামলায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তারসহ ১৩ জন আসামি। অপর আসামিরা হলেনÑ প্রতিষ্ঠানটির লোডার শামীম, স্টোর ইনচার্জ (সুতা) আল আমিন, সিকিউরিটি ইনচার্জ আনিসুর রহমান, সিকিউরিটি সুপারভাইজার আল আমিন, স্টোর ইনচার্জ হামিদুল ইসলাম লাভলু, অ্যাডমিন অফিসার দুলাল উদ্দিন, প্রকৌশলী এম মাহবুবুল মোর্শেদ, সিকিউরিটি গার্ড রানা ওরফে আনোয়ারুল, ফ্যাক্টরি ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক, প্রোডাকশন ম্যানেজার মোবারক হোসেন মঞ্জুর ও শহীদুজ্জামান দুলাল। এর মধ্যে রানা, রাজ্জাক, মঞ্জুর ও দুলাল পলাতক রয়েছেন।

দুর্ঘটনার সময় গার্মেন্টসটিতে ৯৮৪ জন শ্রমিক কর্মরত ছিলেন। নিহতের মধ্যে পরিচয় শনাক্ত হওয়ায় ৫৮টি লাশ তাদের আত্মীয়স্বজনের নিকট হস্তান্তর করা হয়। বাকি ৫৩টি লাশের পরিচয় না পাওয়া জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়। সিআইডির চার্জশিটে ভবনটির নকশায় ত্রুটি ও জরুরি নির্গমনের পথ না থাকায় এবং অগ্নিকাণ্ডকে অগ্নিনির্বাপণ মহড়া বলে শ্রমিকদের কাজে ফেরত পাঠিয়ে কলাপসিবল গেট লাগিয়ে দেওয়ার কারণে হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে উল্লেখ করা হয়।