সরকারি পরিবহন পুলে যাচ্ছে সাবেক এমপিদের ৩০ গাড়ি

চট্টগ্রাম ব্যুরো
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
সরকারি পরিবহন পুলে যাচ্ছে সাবেক এমপিদের ৩০ গাড়ি

নিলামে কাক্সিক্ষত দর না পাওয়ায় সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ৩০টি গাড়ি সরকারের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গত শনিবার চট্টগ্রাম বন্দরে এক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। চট্টগ্রাম বন্দর অডিটরিয়ামে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এ কর্মশালার আয়োজন করে।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গাড়িগুলো শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করেছিলেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা। ওই বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর ৬ আগস্ট জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়। ফলে শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল করে দেয় এনবিআর। অন্যদিকে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পালিয়ে যাওয়া সংসদ সদস্যরাও গাড়িগুলো আর ছাড় করেননি। পরে আমদানি করা মোট ৪২টি গাড়ির মধ্যে ২৪টি গাড়ি গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম দফায় নিলামে বিক্রির জন্য তুলে চট্টগ্রাম কাস্টমস। কিন্তু কাক্সিক্ষত দর না পাওয়ায় তা ছাড় দেয়নি কাস্টমস। এ অবস্থায় প্রথম ধাপে ৩০টি গাড়ি সরকারকে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় এনবিআর।

এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সিদ্ধান্ত হলো গাড়িগুলো আমরা সরকারকে দিয়ে দেব। সরকার এগুলো ব্যবহার করবে। সে হিসেবে সরকারের জনপ্রশাসনে যে পরিবহন পুল আছে, সেখানে গাড়িগুলো যাবে। এরপর সরকারের যারা ব্যবহার করার তারা করবেন। আমরা জাতীয় স্বার্থ চিন্তা করে এসব গাড়ি সরকারি পরিবহন পুলে দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানিকারকদের মধ্যে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সানজিদা খানম, মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর, সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, অনুপম শাহজাহান জয়, সাজ্জাদুল হাসান, মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তারানা হালিম, নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, মো. আবুল কালাম আজাদ, আবদুল মোতালেব, শাম্মী আহমেদ, মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ, রুনু রেজা, মো. তৌহিদুজ্জামান, শাহ সারোয়ার কবীর, একরামুজ্জামান, এস এম আল মামুন, এস এম কামাল হোসেন, মুজিবুর রহমান, মো. আসাদুজ্জামান, নাদিয়া বিনতে আমিন ও আখতারউজ্জামানসহ আরও কয়েকজন ছিলেন।

কাস্টমস কর্তৃপক্ষ শুল্ক-করসহ গাড়িগুলোর প্রতিটির সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণ করেছিল ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। প্রথম নিলামে ৬০ শতাংশ বা তার বেশি সর্বোচ্চ দরদাতা এ গাড়ি কিনতে পারবেন। এ হিসেবে প্রতিটি গাড়ি কিনতে ন্যূনতম ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা দর দিতে হতো। ২৫ শতাংশ করসহ এই গাড়ির সর্বনিম্ন দাম পড়ে ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা। গাড়িগুলো নিলামে বিক্রির মাধ্যমে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ১৭৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের আশা করেছিল।