অবসরে জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী ডিফেন্ডার
ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী জেরোমে বোয়াটেং। প্রায় দুই দশক জুড়ে চলা ৩৭ বছর বয়সী এই সেন্টার-ব্যাক ক্যারিয়ারে বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে খেলেছেন ৩৬৩ ম্যাচ ও জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নেমেছেন ৭৬ বার।
অস্ট্রিয়ার ক্লাব লাস্ক লিনৎসে শেষ মৌসুমে কঠিন সময় কাটানোর পর অবসরের সিদ্ধান্ত নেন বোয়াটেং। চলতি মৌসুম শুরুর মাত্র ১৩ দিন পর তার চুক্তি বাতিল হয়ে যায়।
ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমি দীর্ঘ সময় খেলেছি, বড় ক্লাবে খেলেছি, দেশের হয়ে খেলেছি। শিখেছি, জিতেছি, হেরেছি। ফুটবল আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। এখন এগিয়ে যাওয়ার সময়। কারণ আমাকে নয়, আমি প্রস্তুত বলে। আমার পরিবার, সন্তান, ভক্ত—সবাইকে ধন্যবাদ, তারা সবসময় আমার পাশে ছিল।’
হার্থা বার্লিন একাডেমি থেকে উঠে আসা বোয়াটেং ২০১০ সালে ম্যানচেস্টার সিটিতে খেলেছিলেন। তবে ইউরোপজুড়ে নাম কুড়িয়েছেন বায়ার্ন মিউনিখে। যেখানে তিনি ছিলেন জার্মানির ২০১৪ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য।
২০২১ সালে বুন্দেসলিগা ছাড়ার পর লিওঁ, স্যালের্নিতানা এবং সর্বশেষ লাস্কে খেলেছেন তিনি। তবে শেষ মৌসুমটা একেবারেই ভালো কাটেনি। ফ্রি এজেন্ট হিসেবে ২০২৪ সালের মে মাসে লাস্কে যোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু ক্লাবের হয়ে খেলেছেন মাত্র ১৩ ম্যাচ।
এর মাঝেই বড় এক ঝামেলায় জড়ান তিনি। সাবেক বান্ধবীর ওপর ‘ইচ্ছাকৃত শারীরিক ক্ষতি’ করার অভিযোগে জার্মান আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে। যদিও জেল হয়নি, তবে স্থগিত জরিমানা ও সতর্কবার্তা পান। ২০১৮ সালের এক ঘটনায় তাকে অভিযুক্ত করা হয় ছুটি কাটাতে গিয়ে বান্ধবীর দিকে ল্যাম্প ছোড়ার চেষ্টা, কুলার দিয়ে হাত আঘাত করা, চুল টেনে ধরা ও মারধরের অভিযোগে।
যদিও গুরুতর অভিযোগ থেকে তিনি খালাস পান ‘ইন ডুবিও প্রো রেও’ নীতির কারণে—অর্থাৎ প্রমাণে সন্দেহ থাকলে অভিযুক্তের পক্ষেই সিদ্ধান্ত যায়।
তবু এই মামলার কারণে মাঠে কঠিন সময় পার করতে হয়েছে তাকে। গত মার্চে লাস্কের সমর্থকরা তাকে ‘ওয়াইফ বিটার’ বলে দুয়ো দেয়।
যদিও ক্লাব ছাড়ার সময় লাস্কের স্পোর্টিং ডিরেক্টর ডিনো বুরিচ তার প্রশংসা করে বলেন, ‘বিশেষ করে তরুণ খেলোয়াড়দের পাশে দাঁড়িয়ে জেরোমে দারুণ ভূমিকা রেখেছে। তাদের উৎসাহ ও সহায়তা দিয়েছে।’
বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে দুটি চ্যাম্পিয়নস লিগসহ অসংখ্য শিরোপা জেতা বোয়াটেংয়ের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সাফল্য অবশ্যই ২০১৪ সালে জার্মানির বিশ্বকাপ জয়।