হাইকোর্টের রুল /

ভাঙ্গা থেকে ২ ইউনিয়ন বাদ কেন অবৈধ নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
ভাঙ্গা থেকে ২ ইউনিয়ন বাদ কেন অবৈধ নয়


ফরিদপুর-৪ আসন (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) থেকে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন বাদ দিয়ে সেগুলোকে ফরিদপুর-২ আসনের (নগরকান্দা ও সালথা) সঙ্গে যুক্ত করা সংক্রান্ত গেজেট কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুজন মনোনয়নপ্রত্যাশীর করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হুমায়ন কবির পল্লব। তিনি জানান, আদালত রুল দিয়েছেন। সংবিধানের ১২৫ (ক) অনুচ্ছেদ ও নির্বাচনী আইনের সেকশন ৭ কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না এবং গেজেট কেন অবৈধ হবে না- এ মর্মে রুল দিয়েছেন। ১০ দিনের মধ্যে

বিবাদীদের জবাব দিতে বলেছেন। এর আগে ভাঙ্গা উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে আগামী সংসদ নির্বাচনে দুজন মনোনয়নপ্রত্যাশী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল ও সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মাহবুবুর রহমান দুলালের পক্ষে গেজেট বাতিল চেয়ে নির্বাচন কমিশনকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে গেজেট জারি করে নির্বাচন কমিশন। সেখানে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন বাদ দিয়ে সেগুলোকে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।

এদিকে ফরিদপুরে সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তন নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আদালতের রুল ও জেলা প্রশাসকের (ডিসি) চিঠি বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। গতকাল সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা বলেন। আখতার আহমেদ আরও বলেন, যেহেতু রিটের ব্যাপারটা আছে, অতএব কমিশন রিট এবং ডিসির যে সুপারিশ, এগুলো বিবেচনায় নিয়ে যেটা আইনগতভাবে প্রযোজ্য, সেভাবেই ব্যবস্থা নেবে। এটা হচ্ছে সচিব হিসেবে আমার কথা। তবে কমিশন এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। কমিশন এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে।

বাগেরহাটে ৪টি সংসদীয় আসন বহাল প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল : বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি আসন করে নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ ?দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। গতকাল বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন। এর আগে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে দুটি রিট দায়ের করা হয়েছে। বাগেরহাট প্রেসক্লাব, জেলা আইনজীবী সমিতি, জেলা বিএনপি, জেলা জামায়াতে ইসলামী, জেলা ইসলামী আন্দোলন, জেলা ট্রাক মালিক সমিতি রিট দুটি করে।

রিটে বাংলাদেশ সরকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে বিবাদী করা হয়। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি করার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনে নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তারা গড়ে তোলে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি এবং হরতাল-অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেন সংশ্লিষ্টরা।

কিন্তু নির্বাচন কমিশন গত ৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। এতে চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে বাগেরহাটকে তিন আসনে ভাগ করা হয়। আগের প্রস্তাবের তুলনায় শুধু সীমানা পরিবর্তন করা হয়। এর পর থেকেই সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি আসন কমানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হরতাল, অবরোধ, অবস্থান, বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।

তাদের অভিযোগ, ইসির আসন পুনর্বিন্যাস গণমানুষের দাবিকে উপেক্ষা করেছে। চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট সদর, চিতলমারী ও মোল্লাহাট নিয়ে বাগেরহাট-১; ফকিরহাট, রামপাল ও মোংলা নিয়ে বাগেরহাট-২ এবং কচুয়া, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা নিয়ে বাগেরহাট-৩ গঠিত হয়েছে। ১৯৬৯ সাল থেকে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল। সে অনুযায়ী বাগেরহাট-১ ছিল চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট; বাগেরহাট-২ ছিল বাগেরহাট সদর-কচুয়া; বাগেরহাট-৩ ছিল রামপাল-মোংলা এবং বাগেরহাট-৪ ছিল মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা।