৩০ লিটার স্তন্যদুগ্ধ দান করেছেন ভারতের ব্যাডমিন্টন তারকা
ভারতের ব্যাডমিন্টন তারকা জ্বালা গুট্টা শুধু ক্রীড়াক্ষেত্রেই নয়, সমাজসেবায়ও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মা হওয়ার পর এক অভিনব ও মানবিক উদ্যোগে তিনি স্তন্যদুগ্ধ দান করছেন।
সম্প্রতি এক সরকারি হাসপাতালে তিনি দান করেছেন প্রায় ৩০ লিটার স্তন্যদুগ্ধ—যা প্রি-ম্যাচিউর (সময়ের আগেই জন্ম নেওয়া), অসুস্থ এবং মা-বিহীন শিশুদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
গত এপ্রিলে জ্বালা ও তার স্বামী, অভিনেতা ও প্রযোজক বিষ্ণু বিশালের ঘরে আসে তাদের দ্বিতীয় সন্তান, একটি কন্যাসন্তান। মেয়ের জন্মের পর থেকেই এই উদ্যোগ শুরু করেন জ্বালা, এবং এখনও পর্যন্ত নিয়মিত দুধ দান করে চলেছেন তিনি।
নিজের এক্স (পূর্বে টুইটার) হ্যান্ডেলে এই খবর জানিয়ে জ্বালা লেখেন, ‘মায়ের দুধ জীবন বাঁচায়। যারা সময়ের আগেই জন্মায় বা অসুস্থ, তাদের জন্য স্তন্যদুগ্ধ দান জীবন বদলে দিতে পারে। আপনি যদি দুধ দান করতে পারেন, তাহলে কারও কাছে আপনি নায়ক হয়ে উঠতে পারেন। দয়া করে আরও জানুন, বিষয়টি শেয়ার করুন এবং মিল্ক ব্যাংকের পাশে দাঁড়ান।’
জ্বালার এই পদক্ষেপ শুধু প্রি-ম্যাচিউর শিশুদের জন্য নয়, বরং মা হারানো কিংবা দুগ্ধের অভাবে ভোগা অনেক নবজাতকের জন্যও আশীর্বাদ হয়ে উঠছে।
অনেকে মনে করছেন, এই মানবিক উদ্যোগের পেছনে রয়েছে জ্বালার মাতৃত্বযাত্রার অভিজ্ঞতা।
স্বামী বিষ্ণু বিশাল এক সাক্ষাৎকারে জানান, তাদের সন্তান লাভের পথটা ছিল চরম কঠিন ও আবেগময়, ‘জ্বালার বয়স তখন ৪১। আমরা প্রায় দুই বছর ধরে চেষ্টা করছিলাম। অনেকগুলো আইভিএফ সাইকেল ব্যর্থ হওয়ার পর জ্বালা প্রায় হাল ছেড়ে দিয়েছিল। ঠিক তখনই পাশে দাঁড়ান অভিনেতা আমির খান।’
বিষ্ণু আরও বলেন, ‘আমির স্যার নিজে আমাদের মুম্বাইতে ডেকে নিয়ে যান। একজন চিকিৎসকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন এবং ১০ মাস আমাদের নিজের বাড়িতে রাখেন। তার সহায়তায় দুই-তিনটি আইভিএফ সাইকেলের পর জ্বালা গর্ভবতী হয়। আমির স্যারের সাহায্য না পেলে আজ আমাদের মীরা (মেয়ের নাম) থাকত না।’
এমনকি জ্বালা ও বিষ্ণু আমির খানের প্রতি সম্মান জানিয়ে তাদের কন্যার নাম রাখার অনুরোধও প্রত্যাখ্যান করেন।
তাদের বিবাহবার্ষিকীতে মেয়ের কথা বলতে গিয়ে আবেগে কেঁদে ফেলেন জ্বালা—যার পেছনে রয়েছে দীর্ঘ লড়াইয়ের ইতিহাস ও মাতৃত্বের গভীর উপলব্ধি।
আজ সেই অভিজ্ঞতা থেকেই জ্বালা গুট্টা সমাজের অন্য শিশুদের জীবনেও বয়ে আনছেন আশার আলো। এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে সমাজে এক ইতিবাচক বার্তা দেয় এবং অনেক নতুন মাকে উৎসাহিত করে স্তন্যদুগ্ধ দানে অংশ নিতে।