নরওয়ের ১১ গোলের বন্যা, হালান্ডের ৫
আর্লিং হালান্ড মানেই গোলের গ্যারান্টি—এটা যেন এখন আর শুধু প্রশংসা নয়, বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। মলদোভার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে আরও একবার নিজের নামের ভার টের পাইয়ে দিলেন তিনি। প্রথমার্ধে হ্যাটট্রিকের পর দ্বিতীয়ার্ধে আরও দুটি গোল করে এক ম্যাচেই করলেন পাঁচ গোল।
অসলোতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে একতরফা আধিপত্য দেখিয়ে নরওয়ে ১১-১ গোলে বিধ্বস্ত করে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের ১৫৪তম দল মলদোভাকে। এই জয়ে গ্রুপের শীর্ষে অবস্থান আরও মজবুত করেছে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দলটি।
ম্যাচের শুরু থেকেই বলের দখল ও মাঠের নিয়ন্ত্রণ ছিল স্বাগতিক নরওয়ের হাতে। তারা ৭০ শতাংশ সময় বল নিজেদের দখলে রেখে গোলের উদ্দেশ্যে শট নেয় ৩৪টি, যার ১৮টি ছিল লক্ষ্যে। মলদোভা মাত্র দুটি শট নিলেও, একটিও ছিল না লক্ষ্যে—তাদের একমাত্র গোল আসে আত্মঘাতী ভুল থেকে।
নরওয়ের হয়ে প্রথম গোলটি করেন ফেলিক্স হর্ন মাইরা, হালান্ডের পাস থেকে। এরপর নিজেই স্কোরশিটে নাম তোলেন হালান্ড—ডি-বক্সে পাওয়া সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবধান বাড়ান।
এরপর একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ ভেঙে পড়ে। ম্যাচের ৩৬তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে হালান্ড দ্বিতীয়বার জালে বল পাঠান। বিরতির আগ মুহূর্তে হ্যাটট্রিক পূরণ করে ম্যাচে নিজের আধিপত্য নিশ্চিত করেন তিনি।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে অধিনায়ক মার্টিন ওডেগোর গোল নরওয়ের লিড আরও বড় করে দেয়—বিরতিতে যায় ৫-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে।
দ্বিতীয়ার্ধে ফের আক্রমণের ঝড় তোলে নরওয়ে। ৫২তম মিনিটে হেডে নিজের চতুর্থ গোল করেন হালান্ড। পরে ৮৩তম মিনিটে বাঁ পায়ে নেওয়া শটে ম্যাচে নিজের পঞ্চম গোলও আদায় করে নেন তিনি।
এদিকে, বদলি হিসেবে নামা থেলো আসগার্ডও চমক দেখান। মাঠে নামার তিন মিনিট পরই গোল করেন তিনি। এরপর ৭৬ ও ৭৯ মিনিটে আরও দুটি গোল করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন রেঞ্জার্সের এই মিডফিল্ডার। অতিরিক্ত সময়ের গোলে নিজের চতুর্থ এবং দলের একাদশতম গোলটি করেন তিনি।
এই জয়ে ১৯৯৮ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার দরজা উন্মুক্ত হয়েছে নরওয়ের সামনে। ইউরোপিয়ান বাছাইয়ে ‘আই’ গ্রুপে পাঁচ ম্যাচে পূর্ণ ১৫ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে রয়েছে তারা।
দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইতালির সংগ্রহ ৬ পয়েন্ট, তবে তাদের একটি ম্যাচ হাতে রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইউরোপের ১২টি গ্রুপের শীর্ষ দলগুলো সরাসরি বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা পাবে। দ্বিতীয় স্থান পাওয়া দলগুলোকে লড়তে হবে কঠিন প্লে-অফ পর্বে।
নরওয়ের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ—এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখা। তবে হালান্ড যেভাবে গোল করছেন, আর আসগার্ডদের মতো তরুণরা যেভাবে উঠে আসছেন, তাতে করে ২০২৬ বিশ্বকাপে তাদের উপস্থিতি কেবল সময়ের অপেক্ষা বলে মনে হচ্ছে।