রাজউকের প্লট গ্রহণ /
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল গ্রেপ্তার
ঢাকার ২ নম্বর শিক্ষা সম্প্রসারণ সড়কে (নায়েম রোড) পৌনে ১৮ কাঠা জমির ওপর ছয় তলা বাড়ির তথ্য গোপন করে রাজউকের প্লট গ্রহণের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বুধবার ঢাকার সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহিম মিয়া গ্রেপ্তার দেখানোর এই আদেশ দেন।
এর আগে দুদকের পক্ষ থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। আদালত তার উপস্থিতিতে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।
এদিন শুনানিকালে খায়রুল হককে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তার মাথায় হেলমেট ও বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিহিত ছিল।
আদালত গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেওয়ার পর আইনজীবী মোনায়েম নবী শাহিন জামিন চেয়ে শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর হাফিজুর রহমান জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ২৪ জুলাই সকালে ধানমন্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে যুবদল কর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় ওইদিন রাতে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর পাঁচদিন পর ২৯ জুলাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে বেআইনি রায় দেওয়া ও জাল রায় তৈরির অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় করা মামলায় তাকে ভার্চুয়ালি গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে ৩০ জুলাই বিচারক হিসেবে দুর্নীতি ও বিদ্বেষমূলকভাবে বেআইনি রায় প্রদানসহ জাল রায় তৈরির অভিযোগে শাহবাগ থানার মামলায় তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। রিমান্ড শেষে ৭ অগাস্ট তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এরই মাঝে গত ৬ অগাস্ট দুদকের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে প্লট দুর্নীতির অভিযোগ এনে খায়রুল হকসহ আটজনকে আসামি করে মামলা করেন।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন-রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদা, সদস্য (অর্থ ও এস্টেট) আ.ই.ম গোলাম কিবরিয়া, সদস্য মো. আবু বক্কার সিকদার, সদস্য (পরিকল্পনা) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার, সদস্য (এস্টেট) আখতার হোসেন ভুইয়া, সাবেক যুগ্ম সচিব ও সদস্য (উন্নয়ন) এম মাহবুবুল আলম এবং সদস্য (প্রশাসন ও ভূমি) নাজমুল হাই।
মামলার বিবরণী থেকে, ঢাকার ২ নম্বর শিক্ষা সম্প্রসারণ সড়কে (নায়েম রোড) পৌনে ১৮ কাঠা জমির ওপর ছয় তলা পৈতৃক বাড়ি রয়েছে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের। কিন্তু তিনি দেশের প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে দ্য ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (অ্যালটমেন্ট অব ল্যান্ডস) রুলস, ১৯৬৯ এর বিধি ১৩ লঙ্ঘনের মাধ্যমে হলফনামা দাখিল করে রাজউকের ১০ কাঠা প্লট বাগিয়ে নেন।
আরও পড়ুন:
চীনা অ্যাপের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব মানুষ
খায়রুল হক প্লট বরাদ্দের শর্ত ভঙ্গ করে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। রাজউকের কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় সুদ মওকুফের কোনো বিধান না থাকা সত্ত্বেও প্লট বরাদ্দের জন্য সাময়িক বরাদ্দপত্রে শর্ত ভঙ্গ করেন। তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুদসহ কিস্তির টাকা জমা না দিয়ে অবসরের পর অর্থাৎ বরাদ্দের ৫ বছর পর সুদবিহীনভাবে টাকা জমা দেন।
এ ক্ষেত্রে রাজউকের প্রচলিত নীতিমালা ভঙ্গ করে বিশেষ সুবিধা গ্রহণ করে সুদবাবদ চার লাখ ৭৪ হাজার ২৪০ টাকা পরিশোধ না করে সরকারের ক্ষতিসাধন ও আত্মসাৎ করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।