এক মাসে ৫ সেঞ্চুরি, জাতীয় দলে ফেরার বার্তা দিলেন ইমাম
বল সাদা হোক বা লাল, পোশাক গাঢ় নীল হোক বা সাদা—ফর্মে থাকলে তা থেমে থাকে না। ইংল্যান্ডের রঙিন পোশাকে রানের বন্যা বইয়ে দেওয়া ইমাম-উল-হক এবার পাকিস্তানের ঘরোয়া লাল বলের ক্রিকেটেও দেখালেন ব্যাটের আলো। দেশের মাঠে ফিরে ত্রিশতক হাঁকালেন এই বাঁহাতি ব্যাটার, জানিয়ে দিলেন—জাতীয় দলে ফেরার জন্য তিনি তৈরি।
পাকিস্তানের ঘরোয়া চার দিনের টুর্নামেন্ট হানিফ মোহাম্মদ ট্রফিতে, মুলতান রিজিওনের হয়ে ইমাম খেলেছেন ৩৩০ রানের চোখধাঁধানো ইনিংস, যেখানে মাত্র ২৯১ বল মোকাবেলায় মারেন ৩৪টি চার ও ৮টি ছক্কা।
ইয়র্কশায়ারের হয়ে সদ্য সমাপ্ত ইংল্যান্ড ওয়ানডে কাপে ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে। আট ম্যাচে ৯৮.২৮ গড় ও ৯৭.৪৫ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ৬৮৮ রান, যার মধ্যে ছিল চারটি সেঞ্চুরি ও তিনটি ফিফটি। সেমিফাইনালে বিদায়ী ম্যাচে খেলেছিলেন ৯৭ বলে ১০৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস।
সেই ফর্মই যেন তুলে এনেছেন করাচির ন্যাশনাল ব্যাংক স্টেডিয়ামে। ২৯ দিনের ব্যবধানে এটিই তার পঞ্চম সেঞ্চুরি! এমন ধারাবাহিকতা বলছে, ব্যাট হাতে যেন দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছেন ইমাম।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মেলবোর্ন টেস্ট ছিল ইমামের শেষ লাল বলের আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এরপর বাদ পড়েন টেস্ট দল থেকে। ওয়ানডে দলেও জায়গা হারান এই বছরের শুরুর দিকে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে ফখর জামানের বদলি হিসেবে ডাক পেলেও একটিও ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি।
কিন্তু হাল ছাড়েননি। বরং ব্যাটে জবাব দিতে শুরু করেন। সাম্প্রতিক এই ৩৩০ রানের ইনিংস এখন পর্যন্ত তাঁর ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ, যেকোনো ফরম্যাটে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আগেও ছিল দুটি ডাবল সেঞ্চুরি (২০০* ও ২০২*)—কিন্তু এবার নিজেকেই ছাড়িয়ে গেলেন।
যদিও এই টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলো এখনও প্রথম শ্রেণির স্বীকৃতি পায়নি, তবে চার দিনের এই গ্রেড-২ স্তরের প্রতিযোগিতা কাজ করে প্রধান ঘরোয়া আসর কায়েদ-ই-আজম ট্রফির প্রস্তুতিমঞ্চ হিসেবে। অংশ নেয় ১০টি আঞ্চলিক দল। এ কারণেই এমন পারফরম্যান্স ইমামকে কেবল আলোচনাতেই নয়, জাতীয় দলে ফেরার দাবিদার হিসেবেও তুলে ধরছে।
ডেরা মুরাদ জামালি রিজিওনের ৩৬১ রানের জবাবে, ইমামের নেতৃত্বে মুলতান রিজিওন সংগ্রহ দাঁড় করায় ৫ উইকেটে ৬৬৪, তারপর ইনিংস ঘোষণা করে। ইমামের ট্রিপল ছাড়াও অপরাজিত সেঞ্চুরি করেন শারুন সিরাজ।
২৯ বছর বয়সী এই ব্যাটার এখন আবারও প্রমাণ করছেন নিজের সামর্থ্য ও ধারাবাহিকতা। ব্যাট হাতে এই রানের জোয়ারই হতে পারে পাকিস্তানের জাতীয় দলে ফেরার সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। ইমামের এমন পারফরম্যান্স নির্বাচকদের জন্য বার্তা—পুরনো ইমাম ফিরেছেন, আগের চেয়েও ক্ষুরধার হয়ে।