১৫০ কিমি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত মেরামতে অর্থ নেই চসিকের

হামিদ উল্লাহ, চট্টগ্রাম
২৫ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
১৫০ কিমি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত মেরামতে অর্থ নেই চসিকের

চট্টগ্রাম শহরের সাড়ে ৫০০ কিলোমিটার পাকা সড়কের মধ্যে ১৫০ কিলোমিটার সড়ক বর্ষায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব সড়ক মেরামত ও সংস্কারের জন্য ৪২৬ কোটি টাকা বাজেট ধরা হলেও সেই অর্থ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নেই। সরকারের কাছ থেকেও প্রতিষ্ঠানটি টাকা চেয়েও পায়নি। ফলে সড়কের অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে। মানুষের দুর্ভোগও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।

চট্টগ্রাম শহরের মডেল হেলদি ওয়ার্ড হিসেবে পরিচিত জামাল খানের প্রধান সড়কটি তিন বছর আগে কার্পেটিং করেছিল চসিকের প্রকৌশল বিভাগ। বলা হয়েছি- টানা পাঁচ বছর সড়কটি ভালো থাকবে। কিন্তু এ বছর বর্ষায় সড়কের সেই কার্পেটিং উঠে গিয়ে নগরবাসীর দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ঢাকা ট্রাংক রোড নগরীর অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) চারলেনে উন্নীত করার পর সেটি দীর্ঘদিন ভালো ছিল। কিন্তু চসিকের কাছে হস্তান্তর পরবর্তী সংস্কারকাজ চালানোর পর ওই বিটুমিন উঠে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ যানবাহনের পাশাপাশি সড়কটিতে রাতের বেলা ভারী যানবাহন চলে। ফলে সড়কটির বেহাল অবস্থা যানবাহনের গতি কমিয়ে দিয়েছে। একইভাবে ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে নগরীর সদরঘাট ও আশপাশের সড়কগুলোও এই বর্ষা মৌসুমে মারত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চট্টগ্রাম ওয়াসার স্যুয়ারেজ লাইন নির্মাণ প্রকল্পের কারণে হালিশহর এলাকায় চসিকের সদ্য সংস্কার করা সড়কও কাটা শুরু করেছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। কথা ছিল মাটির নিচে ছিদ্র করে লাইনটি স্থাপন করা হবে। কিন্তু বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তার পরিবর্তে খোলা পদ্ধতিতে সরাসরি সড়ক কাটা শুরু করে। এতে কয়েক মিটার গভীর পর্যন্ত সড়ক কাটার কারণে আশপাশের সড়কের ভিত নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে হালিশহরের অধিকাংশ সড়কের অবস্থা বেহাল।

একদিকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) কাজ বন্ধ, অন্যদিকে পর্যাপ্ত গৃহকর আদায়ের অভাবে বর্তমানে মারাত্মক অর্থ সংকটে থাকা নগর কর্তৃপক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাসিক বেতন-ভাতা পরিশোধ করতেই হিমশিম খাচ্ছে। ফলে সড়ক সংস্কার ও অবকাঠামো মেরামতের মতো পর্যাপ্ত অর্থ চসিকের নেই।

এ অবস্থায় চসিকের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। তিনি সরকারের কর্তা-ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করে অর্থসংকট উত্তরণের চেষ্টা করছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

চসিকের প্রধান প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পাকা সড়কের পাশাপাশি ১৯ হাজার বর্গমিটার সø্যাব নষ্ট হয়েছে এবারের বর্ষায়। এগুলো ঠিক করতে খরচ হতে পারে প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন অবকাঠামোর সীমানাবেষ্টনী নষ্ট হয়েছে ২১ হাজার ২৯৪ মিটার, এসব ঠিক করতে খরচ হবে ২১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। আমরা মোট ৪৬০ কোটি টাকার একটি বাজেট সরকারের কাছে পেশ করেছি। তিনি বলেন, সরকারের কাছ থেকে অর্থ প্রাপ্তির পাশাপাশি চসিকের অন্য খাত থেকে টাকা নিয়ে হলেও আমাদের জরুরি ভিত্তিতে সড়কগুলো যানবাহন চলাচলের উপযোগী করতে হবে। আমরা প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১১০ টন মিশ্রণ দিয়ে পেসওয়ার্ক করছি। কিন্তু পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছি না। এখনও সমানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে।