এশিয়া কাপের আগে ‘পাওয়ার হিটিং’য়ে জোর দিচ্ছে বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক
১৮ আগস্ট ২০২৫, ১৫:৫৩
শেয়ার :
এশিয়া কাপের আগে ‘পাওয়ার হিটিং’য়ে জোর দিচ্ছে বাংলাদেশ

আধুনিক ক্রিকেটে সীমিত ওভারের খেলায় বড় শট খেলার ক্ষমতা বা ‘পাওয়ার হিটিং’ এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতার একটি। ব্যাটারদের এই সক্ষমতা অনেক সময় বদলে দিতে পারে ম্যাচের গতিপথ। অথচ এখানেই দীর্ঘদিন ধরে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। সেই ঘাটতি পূরণেই এশিয়া কাপের আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এনেছে বিশেষজ্ঞ পাওয়ার হিটিং কোচ জুলিয়ান উডকে।

এই ইংলিশ কোচ ঢাকায় এসে প্রথমে স্থানীয় কোচ ও নারী ক্রিকেটারদের নিয়ে কাজ শুরু করেন। এরপর ধীরে ধীরে শুরু হয়েছে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে মূল অনুশীলন। মিরপুরে তিন দিনের সেশনের পর জাতীয় দলের স্কিল ক্যাম্প চলবে সিলেটে, যা শুরু হবে আগামী পরশু।

আজ রবিবার মিরপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেন জাতীয় দলের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান জাকের আলী অনিক। তিনি বলেন, ‘আমাদের পাওয়ার হিটিংয়ের কিছু স্কিল নিয়ে কাজ হচ্ছে—যারা জেনেটিক্যালি ভালো, তারা কীভাবে আরও উন্নতি করতে পারে। আবার যারা টাইমার, তারা কীভাবে শটের দূরত্ব আরও বাড়াতে পারে—এই বিষয়গুলোতেই মূলত ফোকাস।’

জুলিয়ান উডের সঙ্গে বিসিবির চুক্তি মাত্র ২৮ দিনের, অর্থাৎ তিনি ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই দেশে ফিরবেন। ফলে খুব বড় ধরনের পরিবর্তনের আশা না থাকলেও, মৌলিক দক্ষতা উন্নয়নের দিকেই মনোযোগ দিচ্ছেন কোচ। জাকের জানালেন, ‘ঢাকায় কিছু বেসিক কাজ করা হয়েছে। সিলেটে সেই কাজগুলোর অনুশীলন হবে। এখনই খুব বড় কিছু বলার সময় নয়, তবে যেসব ড্রিল দেওয়া হয়েছে, সেগুলো কাজে আসবে বলেই মনে হচ্ছে।’

এই অনুশীলনের একটি বিশেষ দিক হচ্ছে ‘প্রো ভেলোসিটি’ ব্যাট। এটি এক ধরনের অনুশীলন ব্যাট, যা ব্যাট স্পিড ও হাত-চোখের সমন্বয়ে সাহায্য করে। ব্যাটটি সঠিকভাবে চালাতে পারলে নির্দিষ্ট শব্দ হয়, যা থেকে বোঝা যায় শট কতটা জোরালো হয়েছে। এই ব্যাটের অভিজ্ঞতা নিয়ে জাকের বলেন, ‘যখন বলে দেয় কয়টা সাউন্ড বের করতে হবে, আর আমি সেটা পারলে ভালোই লাগে। তবে সেটা করতে অনেক ফোর্স লাগে, বাড়তি এফোর্ট দিতে হয়।’

তবে জাকের স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, কারও খেলার ধরন বদলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন না উড। বরং যাঁরা টাইমিং নির্ভর ব্যাটার, তাঁরা কীভাবে আরও ৪-৫ মিটার দূরে বল পাঠাতে পারেন, সেটাই মূল লক্ষ্য।

‘টাইমারদের পাওয়ার হিটার বানানোর চেষ্টা করছে না। টাইমাররা যেটা আগে খেললে বাউন্ডারির আগেই ক্যাচ হতো, সেটা যেন এখন সোজা ছক্কা হয়ে যায়—এই জিনিসটাই শেখানো হচ্ছে।’

বাংলাদেশ দলে পাওয়ার হিটার হিসেবে নিজের পরিচিতি থাকা জাকের নিজে কতটা শিখছেন, সে প্রশ্নে হাসতে হাসতেই জানালেন, ‘অভিজ্ঞতা ভালোই হচ্ছে। কোচের ওপরই সেটা ছেড়ে দিলাম!’

এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চের আগে বাংলাদেশের ব্যাটিং ইউনিটে নতুন এই প্রয়াস কতটা সুফল দেবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়। তবে খেলোয়াড়দের ভাষায়, এই পাওয়ার হিটিং ক্যাম্প ইতিমধ্যে নতুন কিছু শেখার সুযোগ করে দিচ্ছে, যেটি ভবিষ্যতে দলে দেবে বাড়তি আক্রমণাত্মক ধার।