নতুন মামলায় গ্রেপ্তার আনিসুল-হেলালুদ্দীন
জুলাই আন্দোলনে ঢাকার লালবাগে ইলেকট্রিশিয়ান মোহাম্মদ শাওন সিকদার হত্যা মামলায় এবং একই থানায় যুবক মো. আশরাফুল হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এদিকে রাষ্ট্রদ্রোহ ও জনগণের ভোট ছাড়া নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ সোমবার ঢাকার মেট্টোপলিটন মাজিস্ট্রেট মো. মনিরুল ইসলাম গ্রেপ্তার দেখানোর এই আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লালবাগ থানার এসআই আবুল ফারেজ জুয়েল আসামি আনিসুল হককে দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। আর হেলালুদ্দীন আহমেদকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই'র পরিদর্শক সৈয়দ সাজেদুর রহমান। শুনানিকালে তাদের আদালতে হাজির করা হয়।
শাওন হত্যা মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই বিকালে রাজধানীর ইডেন কলেজের সামনে দিয়ে বাসায় ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মোহাম্মদ শাওন সিকদার। এ ঘটনায় গত ২১ জানুয়ারি লালবাগ থানায় শেখ হাসিনাসহ ৪০ জনকে আসামি করে আত্মীয় পরিচয়ে মামলা করেন ইকবাল মজুমদার তৌহিদ।
আশরাফুলকে হত্যাচেষ্টা মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের সময় ১৮ জুলাই লালবাগ থানাধীন আজিমপুর সরকারি কলোনীর ভেতর আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হন আশরাফুল। এ ঘটনায় গত ২৫ মে শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন আশরাফুল।
হেলালুদ্দীনের মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, গত ২২ জুন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব ‘পালন না করে’ উল্টো ‘ভয়-ভীতি দেখিয়ে’ জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে মামলা করে বিএনপি।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং মামলা, গুম, খুন ও তথ্য সংরক্ষণ সমন্বয়ক সালাহ উদ্দিন খান এ মামলার বাদী, যিনি একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা। এরপর মামলায় দণ্ডবিধির ১২৪ (ক)/ ৪২০/৪০৬ ধারায় অভিযোগ সংযুক্ত করার আবেদন করা হয়।
মামলায় ২০১৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের নির্বাচনে সিইসি এ কে এম নূরুল হুদা ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আসামি করা হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ মামলার আসামি।
এ ছাড়া পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজির আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়েছে মামলায়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ওই তিন নির্বাচনে ‘গায়েবি মামলা, অপহরণ, গুম খুন ও নির্যাতনের’ ভয় দেখিয়ে, বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘গণগ্রেপ্তার’ করে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়। সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে থাকা সত্বেও সংবিধান লঙ্ঘন, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন, সরকারি কর্মচারী হয়েও অবৈধভাবে ভোটে হস্তক্ষেপ, ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটের কাজ সম্পূর্ণ করা ও জনগণের ভোট না পেলেও সংসদ সদস্য হিসেবে মিথ্যাভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
এ ঘটনার সাক্ষী সকল ভোট কেন্দ্র এলাকার ভোটাররা এবং ভোটারদের মধ্যে যারা ভোট প্রদান করতে বঞ্চিত হয়েছেন তারাসহ ভোট কেন্দ্রে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্যরা। ভোট কেন্দ্রে অনেক সৎ প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিংশ অফিসারসহ স্থানীয় লোকজনসহ আরও অন্যান্যরা ঘটনার সাক্ষী হবে।
এ ছাড়া ব্যালট পেপারে যে সিল ও স্বাক্ষর রয়েছে, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই প্রকৃতভাবে তারা ভোট দিয়েছে কিনা সে বিষয়ে উল্লেখিত ঘটনার সঠিক রহস্য তদন্তে সত্য উদঘাটিত হবে।
আরও পড়ুন:
চীনা অ্যাপের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব মানুষ