৯ জনের মায়োর্কাকে উড়িয়ে বার্সার দুর্দান্ত শুরু
২০২৫-২৬ মৌসুমে লা লিগায় প্রত্যাশিত জয় দিয়েই শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে শুরু করেছে বার্সেলোনা। শনিবার রাতে প্রতিপক্ষের মাঠে হান্সি ফ্লিকের দল ৩-০ গোলে হারিয়েছে ৯ জনের মায়োর্কাকে।
রাফিনিয়া, ফেররান তোরেস এবং লামিনে ইয়ামালের গোলে সহজ জয় পায় কাতালান জায়ান্টরা। প্রথম দুই গোলেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তরুণ তারকা ইয়ামাল, যিনি শেষ গোলটি করে নিজের পারফরম্যান্স স্মরণীয় করে রাখেন।
২০০৯ সালের পর থেকে বার্সেলোনার বিপক্ষে জয়হীন থাকা মায়োর্কা এদিনও পারেনি প্রতিরোধ গড়তে।
খেলা শুরুর সপ্তম মিনিটেই এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। ইয়ামালের ডান প্রান্ত থেকে দুর্দান্ত ক্রসে ডি-বক্সে ছুটে আসা রাফিনিয়া হেডে বল জালে পাঠান। গোলরক্ষকের কিছুই করার ছিল না। গত মৌসুমে ১৮ গোল করা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড নতুন মৌসুমের প্রথম ম্যাচেই খোলেন গোলের খাতা।
মায়োর্কা সমতায় ফেরার বড় সুযোগ পায় ২১তম মিনিটে। কিন্তু কাছ থেকে নেওয়া ভেদাত মুরিকির শট বার্সা গোলরক্ষক হোয়ান গার্সিয়ার গায়ে লাগে।
পরের মিনিটেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে বার্সেলোনা। ইয়ামালের জোরালো শট প্রতিহত হলে গোলমুখে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। মায়োর্কা অধিনায়ক রাইয়ো মাটিতে পড়ে গেলেও খেলা থামাননি রেফারি। ডি-বক্সের ঠিক বাইরে বল পেয়ে ঠাণ্ডা মাথায় জালে পাঠান ফেররান তোরেস।
রেফারির সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে হলুদ কার্ড দেখেন মায়োর্কা কোচ হাভিয়ে আগুয়েরে। পরে ৩৩তম মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ দেখে মাঠ ছাড়েন মায়োর্কার মানু মোরলানেস। মাত্র ছয় মিনিট পর আরও বড় ধাক্কা খায় স্বাগতিকরা। বলের দখলের লড়াইয়ে বার্সা গোলরক্ষকের মুখে বুট লাগান মুরিকি। শুরুতে হলুদ দেখালেও ভিএআর দেখে সিদ্ধান্ত পাল্টে সরাসরি লাল কার্ড দেখান রেফারি।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়েও ইয়ামাল দুইবার গোলের কাছাকাছি গিয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট হন। এছাড়া মায়োর্কার মাতেও মোরেয়েকে পেছন থেকে ফাউল করলেও রাফিনিয়াকে লাল নয়, হলুদ কার্ড দেখানো নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
দ্বিতীয়ার্ধে ৯ জনের প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বার্সেলোনা রক্ষণে একের পর এক আক্রমণ শানায়। শুরুতেই ইয়ামাল, ফেররান ও দানি ওলমো সুযোগ পেলেও গোলের দেখা মেলেনি।
৫৮ মিনিটে ওলমোর হেড গোললাইন থেকে এক হাতে ফিরিয়ে দেন মায়োর্কার গোলরক্ষক। এরপর রাফিনিয়ার শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। ৬৯ মিনিটে তার কাটব্যাকে ওলমোর শট লাগে পোস্টে। সুযোগ পেয়েও ব্যবধান বাড়াতে ব্যর্থ হয় বার্সা।
এরিক গার্সিয়ার হেডও সোজা চলে যায় গোলরক্ষকের হাতে। এরপর বদলি হিসেবে অভিষেক ঘটে মার্কাস র্যাশফোর্ডের, তবে এই ম্যাচে আলো ছড়াতে পারেননি ইংলিশ তারকা।
৮৫ মিনিটে গাভির জোরালো শট কর্নারে ঠেকিয়ে দেন মায়োর্কা গোলরক্ষক। এরপর টানা দুইবার ইয়ামালের শটও ঠেকান তিনি।
শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত সময়ে নিজের নাম স্কোরশিটে তোলেন ১৭ বছর বয়সী ইয়ামাল। বাঁ দিক থেকে কাট করে ডি-বক্সে ঢুকে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বাম পায়ের বাঁকানো শটে দারুণ এক গোল করেন তিনি। এটি ছিল তার চেনা স্টাইলে—ট্রেডমার্ক ফিনিশিং।
দলীয় পারফরম্যান্সে দারুণ ধারাবাহিকতা দেখিয়ে নতুন কোচ হান্সি ফ্লিকের অধীনে লিগ অভিযান শুরু করল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ইয়ামাল, রাফিনিয়া ও তোরেসের ফর্ম বার্সেলোনার জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত, বিশেষ করে এমন ম্যাচে যেখানে প্রতিপক্ষের ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো সুযোগই দেওয়া হয়নি।