শেয়ারবাজারে আবার খরা
দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেনে আবার খরা দেখা দিয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন কমেছে ২৪ শতাংশ। আর মূলধন কমেছে ৪ হাজার কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দেশের শেয়ারবাজারে এমনিতেই তালিকাভুক্ত কোম্পনির সংখ্যা কম। এর মধ্যে ভালো কোম্পানির অভাব। এ জন্য ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর শেয়ারবাজার অন্ধকার গহ্বর থেকে বেরিয়ে আসবে- এমন প্রত্যাশা তৈরি হয়। অর্থনীতিতে সংস্কারের ফলে ইতোমধ্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ব্যাংকিং খাত। কিন্তু পুঁজিবাজারে প্রাণ ফেরানো যায়নি। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ আমাদের সময়কে বলেন, কয়েকটি কোম্পানি দিয়ে শেয়ারবাজার ভালো করা সম্ভব নয়। ভালো কোম্পানি বাজারে না আসা পর্যন্ত শেয়ারবাজার ভালো হবে না। ইতোমধ্যে ভালো কোম্পানি চিহ্নিত করা হয়েছে।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব কোম্পানি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে শেয়ারে সংকট মেটাতে হবে।
আরও পড়ুন:
আকতার পারভেজ সর্বোচ্চ ভোটে সিএসই পরিচালক
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেনকৃত মোট কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৯৯টির, কমেছে ২৭৪টির। আর ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল ৭ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৪ হাজার কোটি টাকা। বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি গত সপ্তাহে মূল্যসূচকেরও পতন হয়েছে। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৫৭ দশমিক ৮২ পয়েন্ট।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ২৩ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট ও ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক কমেছে ৭ দশমিক ২৬ পয়েন্ট। বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬৮৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৯১১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ২২২ কোটি ১৯ লাখ টাকা বা ২৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন:
বৃহত্তম হিমশৈল
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ ১০ কোম্পানি : ওরিয়ন ইনফিউশন, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, মালেক স্পিনিং, রহিমা ফুড, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ এবং সোনালি পেপার।
খাতভিত্তিক লেনদেনে গত সপ্তাহে ওষুধ ও রসায়ন খাতের আধিপত্য ছিল। ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৭ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষ অবস্থান করছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ দখলে নিয়েছে ব্যাংক খাত। ১১ দশমিক ৮৫ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে বস্ত্র খাত।
আরও পড়ুন:
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম
অপরবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ কমে ১৪ হাজার ৯৭৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৫ হাজার ১৯৩ পয়েন্ট। এই বাজারে গত সপ্তাহে ৭৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে যা ছিল ১১১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।