৯ বছরে সবচেয়ে নিচে ভারতীয় ফুটবল
ভারতীয় ফুটবলের অবস্থা দিন দিন আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার সর্বশেষ প্রকাশিত র্যাঙ্কিং অনুযায়ী, ভারত এখন নেমে এসেছে ১৩৩ নম্বরে। গত ৯ বছরে এত নিচে আর কখনও ছিল না দেশের র্যাঙ্কিং। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে—এই পতনের জন্য দায়ী কে?
সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কল্যাণ চৌবে এই দায় ফিফার র্যাঙ্কিং পদ্ধতির ঘাড়ে চাপিয়েছেন। তার মতে, ফিফার র্যাঙ্কিং নির্ধারণের বর্তমান নিয়মই ভারতের পতনের অন্যতম কারণ।
ফিফা বর্তমানে ‘এলো’ পদ্ধতির ভিত্তিতে দলগুলোর র্যাঙ্কিং নির্ধারণ করে, যেখানে কেবল সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সই নয়, প্রতিপক্ষের র্যাঙ্কিং এবং অতীতের ফলাফলও বিবেচনায় নেওয়া হয়। কল্যাণ বলেন, ‘আমি যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন ভারত ছিল ৯৯ নম্বরে। এখন আমরা ১৩৩ তে। কারণ, ফিফার পদ্ধতিতে শুধু ম্যাচের ফল নয়, প্রতিপক্ষের র্যাঙ্কিং, ম্যাচ সংখ্যা, জয়-পরাজয় সব বিবেচনা করা হয়। তাতে ভারতের পয়েন্ট কমছে।’
২০২৩ সালে কল্যাণ দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পরাজিত হয়—অস্ট্রেলিয়া, উজবেকিস্তান ও সিরিয়ার মতো উচ্চ র্যাঙ্কিংয়ের দলের কাছে হারের খেসারত দিতে হয়েছে পয়েন্টে। একই সঙ্গে, সাবেক কোচ মানোলো মার্কেজের অধীনে গত দুই বছরে ভারতের অনুজ্জ্বল পারফরম্যান্সও দায়ী। এই সময়ে আটটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে জয় আসেনি একটিতেও।
তবে কল্যাণ চৌবে মনে করেন, র্যাঙ্কিংয়ে পতন নতুন কিছু নয়। ইতিহাস টেনে তিনি বলেন, ‘১৯৯২ সালে যখন প্রথম ফিফা র্যাঙ্কিং চালু হয়, তখন ভারত ছিল ১৪৩ নম্বরে। এরপর ১৯৯৬ সালে আমরা উঠেছিলাম ৯৪ নম্বরে। আবার ২০১৫ সালে নেমে গিয়েছিলাম ১৭৩ তে। তারপর ২০১৮-তে উঠে এসেছিলাম ৯৭ নম্বরে। এই ওঠানামা আমাদের ফুটবলের বাস্তব ছবি।’
এআইএফএফ সভাপতির আক্ষেপ, পরিকাঠামো উন্নয়ন হলেও তার সুফল জাতীয় দলের পারফরম্যান্সে দেখা যাচ্ছে না। ‘গত ১০ বছরে ঘরোয়া ফুটবলে অনেক উন্নতি হয়েছে। স্টেডিয়াম, ক্লাব, খেলোয়াড়দের বেতন—সবই উন্নত হয়েছে। আইএসএল এখন এশিয়ার অন্যতম সেরা লিগ। কিন্তু জাতীয় দলে তার প্রতিফলন কোথায়?’— প্রশ্ন তোলেন কল্যাণ।
এদিকে ভারতের ঘরোয়া ফুটবল নিয়েও অনিশ্চয়তা বাড়ছে। আগামী আইএসএল মৌসুম আদৌ হবে কি না, তা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে। এআইএফএফ লিগের ক্লাবগুলোর সঙ্গে বৈঠক করলেও কোনো সমাধান খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, সাবেক ফুটবলার বাইচুং ভুটিয়া সরাসরি কল্যাণ চৌবের নেতৃত্ব ও ফুটবল প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলছেন। চলমান হতাশাজনক পরিস্থিতিতে জাতীয় দলের কোচ বদল করে খালিদ জামিলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।