কোহলি-ডি ভিলিয়ার্স ফোন করলেন গ্রাম্য তরুণকে, কিন্তু কেন?
অবাক করা এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন ভারতের ছত্তিশগড়ের গারিয়াবান্দ জেলার মাদাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মনীশ বিসি। বিশের কোঠায় থাকা এই তরুণ সম্প্রতি একটি নতুন সিম কার্ড কিনে তা চালু করার পরই একের পর এক ফোন পেতে থাকেন ক্রিকেট জগতের তারকা ব্যক্তিত্বদের কাছ থেকে। ফোন করেন স্বয়ং বিরাট কোহলি, এবি ডি ভিলিয়ার্স ও যশ দয়ালের মতো ক্রিকেটাররা।
প্রথমে মনীশ মনে করেন, কেউ হয়তো তার সঙ্গে মজা করছেন। তাই ফোনের দায়িত্ব দেন তার বন্ধু খেমরাজ বিসিকে। কিন্তু এরপরই সামনে আসে এক চমকপ্রদ তথ্য—আসলে মনীশের হাতে চলে এসেছিল বেঙ্গালুরু রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়ক রজত পাতিদারের পুরোনো সিম কার্ড। সেই সিম নম্বরেই আগে যোগাযোগ করতেন দলের সতীর্থরা।
খেমরাজ বিসি পিটিআইকে জানান, প্রথমে ফোন করেন বিরাট কোহলি, এরপর যশ দয়াল। তারা জানতে চান, মনীশ কেন রজত পাতিদারের ফোন নম্বর ব্যবহার করছেন। খেমরাজ জানান, তাঁরা প্রথমে কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি। পরে এবি ডি ভিলিয়ার্সও ফোন করেন। তবে ভাষাগত কারণে ইংরেজি বোঝা কঠিন ছিল তাঁদের জন্য।
ঘটনার জট আরও বাড়ে, যখন মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে পুলিশ এসে হাজির হয় মনীশের গ্রামে। পরে পুলিশের মাধ্যমেই খোলাসা হয় আসল ঘটনা। জানা যায়, রজত পাতিদার প্রায় ৯০ দিন ধরে ওই নম্বরটি ব্যবহার না করায় সেটি নিষ্ক্রিয় করে পুনরায় বাজারে ছাড়া হয়েছিল। মনীশ সেই সিম কিনে ফেলেছিলেন।
গারিয়াবান্দ জেলার ডেপুটি পুলিশ সুপার নিশা সিনহা জানান, ‘ইন্দোর সাইবার সেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে মনীশ বিসির সম্মতিতে সিমটি পুনরায় রজত পাতিদারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি একটি ভিআইপি নম্বর হওয়ায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। তবে কারো বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
মনীশের গ্রামের আরেক বাসিন্দা তিকেন্দ্র বিসি জানান, ‘পুলিশ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে জিজ্ঞাসা করে আমরা সিমটি ফেরত দিতে ইচ্ছুক কি না। আমরা তাতে রাজি হই।’
যদিও ভুলবশত এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন মনীশ ও খেমরাজ, তবে ক্রিকেটের তারকাদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলার অভিজ্ঞতা তাদের জন্য দারুণ আনন্দের। খেমরাজ বলেন, ‘আমি আরসিবির বড় ভক্ত। কোহলির ছবি আমার দোকান ও বাড়িতেও টাঙানো আছে।’
মনীশের বাবা, কৃষক গজেন্দ্র বিসি বলেন, ‘আমার ছেলে বিরাট কোহলির সঙ্গে কথা বলেছে—এটাই আমাদের পরিবারের জন্য অনেক বড় ব্যাপার।’
এই অপ্রত্যাশিত ঘটনাটি মনীশ ও তার গ্রামের মানুষের জন্য এক অভাবনীয় স্মৃতি হয়ে থাকবে, নিঃসন্দেহে।