আয়ান শর্মার গ্রেপ্তার দাবিতে সনাতনী সমাজের মানববন্ধন

চট্টগ্রাম ব্যুরো
১১ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
আয়ান শর্মার গ্রেপ্তার দাবিতে সনাতনী সমাজের মানববন্ধন

চট্টগ্রামে আদালতের সামনে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডে করা মামলার আসামি আয়ান শর্মার গ্রেপ্তার দাবি করেছে সনাতনী সমাজ। একই সঙ্গে ‘চট্টগ্রাম প্রতিদিন’ ও ‘আলোকিত চট্টগ্রাম’ পত্রিকার নিবন্ধন বাতিলের দাবিও জানানো হয়েছে। গতকাল রবিবার দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম প্রতিদিনের উপদেষ্টা সম্পাদক ও প্রকাশক এবং আলোকিত চট্টগ্রামের সম্পাদক এই আয়ান শর্মা।

মানববন্ধনে আয়ান শর্মার বিরুদ্ধে অপপ্রচার, জন্মাষ্টমী নিয়ে সনাতন সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গা ও বিভেদ সৃষ্টির পাঁয়তারার অভিযোগ তুলে ধরার পাশাপাশি আলিফ হত্যা মামলার আসামি হিসেবে আয়ান শর্মাকে গ্রেপ্তার এবং নিউজ পোর্টাল চট্টগ্রাম প্রতিদিনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে এর নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানানো হয়। সনাতনী সমাজ ও বীর চট্টলাবাসীর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন শেষে চট্টগ্রামের ডিসি বরাবর স্মারকলিপি দেন সনাতনী সমাজের নেতারা।

জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের আজীবন সদস্য দোলন দেবের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাপ্পী দে, সুব্র্রত আইচ, সৌরভ প্রিয় পাল,

মিঠুন বৈষ্ণব, ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় চক্রবর্তী মানিক, প্রশান্ত পাণ্ডে, বিপ্লব চৌধুরী বিলু, অপু চৌধুরী আকাশ, মিটন রবি দাশ, রুবেল পাল, সৈকত বোস, প্রভাষ দাশ, সাগর দাশ, সুকান্ত তালুকদার জুয়েল, রয়েল কুমার পাল স্মৃতি দে প্রিয়া, পান্না দাস, ডলি দাস, অপু দাস, অর্চনা দাস, মিনা বিশ্বাস প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে দোলন দেব বলেন, ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট আদালত চত্বরে ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে হামলার নেতৃত্ব দিয়েছিল আয়ান শর্মা। তাই চাঞ্চল্যকর আলিফ হত্যার ইন্ধনদাতা এবং সরাসরি অংশগ্রহণকারী হিসেবে তাকে মামলার আসামি করা হয়েছে। তিনি বলেন, আয়ান শুধু চট্টগ্রামেই নয়, সারা দেশে চাঁদাবাজ হিসেবে চিহ্নিত। ভারতে পালিয়ে থাকা ফ্যাসিস্ট সরকারের নেতাদের সঙ্গে আয়ান শর্মা এখনও যোগাযোগ করে। জন্মাষ্টমী পরিষদ, পূজা উদযাপন পরিষদ কীভাবে দখলে রাখতে হবে, ভিডিও কলে এসবের নীলনকশা করে সে। সাংবাদিকতার মতো মহান পেশাকে সে কলঙ্কিত ও অপমানিত করছে। এত অপরাধ সত্ত্বেও আয়ান এখনও কীভাবে জন্মাষ্টমী অফিসে যাতায়াত করে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। অবিলম্বে তাকে গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

মানববন্ধনে ছাত্রদলের সাবেক নেতা সৌরভ প্রিয় পাল বলেন, সনাতনী সমাজের ন্যায্য দাবির সঙ্গে আমি একমত। চট্টগ্রাম প্রতিদিন পত্রিকায় সাংবাদিকতার নামে চাঁদাবাজি ও দলবাজি করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ নেতা থেকে সনাতনী নেতা বনে যাওয়া চন্দন তালুকদার বা আয়ান শর্মার কাছে সনাতনী সমাজ জিম্মি নয়। আওয়ামী সাংস্কৃতিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আয়ান শর্মার গ্রেপ্তার ও ‘চট্টগ্রাম প্রতিদিন’ পত্রিকার নিবন্ধন বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, আয়ান শর্মার বিরুদ্ধে অসহায় মানুষের সাহাযার্থে কনসার্টের নামে ৩ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়া; পুলিশ সদস্যের কাছে চাঁদা দাবি; খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, ভয়ভীতি প্রদর্শন, মানুষকে হয়রানি, ধর্মীয় দাঙ্গার উসকানি, মাদক ও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সখ্যতাসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, সাংবাদিকতা পেশাকে কলঙ্কিত করবেন নাÑ মর্মে ২০০৪ সালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে তিনি মুচলেকাও দিয়েছিলেন। এ ছাড়া রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের চরিত্র হনন করে সংবাদ প্রকাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।